শুক্রবার, ০১ নভেম্বর, ২০২৪  |   ৩২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুরে রাজনৈতিক মামলায় আসামীদের আটক অভিযান অব্যাহত। যুবলীগ, কৃষকলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের ৫ নেতা-কর্মী আটক
  •   ছেঁড়া তারে প্রাণ গেল যুবকের
  •   চাঁদপুরে গণঅধিকার পরিষদের ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন
  •   রাজধানীতে কচুয়ার কৃতী সন্তানদের সংবর্ধনা
  •   সম্প্রীতির চমৎকার নিদর্শন আমাদের বাংলাদেশ --------------জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন

প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২১, ১৫:০৩

অবহেলিত এক জনপদের নাম ফরিদগঞ্জ উপজেলা

এমরান হোসেন লিটন
অবহেলিত এক জনপদের নাম ফরিদগঞ্জ উপজেলা

অবহেলিত এক জনপদের নাম ফরিদগঞ্জ উপজেলা। এ উপজেলার জনপ্রতিনিধিদের ভাগ্য বদল হলেও ভাগ্য বদল হয়নি জনগণের। গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ, টিআর, কাবিখা, বরাদ্দকৃত ১%, ভিজিডি, বিজিএফ কার্ড, বয়স্ক-বিধবা-প্রতিবন্ধি ভাতা, এলজিএসপি-২, এডিপি, শীতার্তদের জন্য কম্বল, অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান (৪০ দিন) কর্মসূচিসহ সরকারের বরাদ্দকৃত বিভিন্ন অনুদান সুষম বণ্টন না হওয়ায় ও গ্রামীণ রাস্তাঘাটগুলোর উন্নয়ন না হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের লোকজনের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

দেশ স্বাধীনের ৫০ বছরের মধ্যে এই উপজেলা থেকে মন্ত্রী, ঊর্ধ্বতন মন্ত্রণালয়ের একাধিক সচিব, এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান হয়। কিন্তু এখানে তুলনামূলভাবে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে না। এই উপজেলার চতুর্পাশে অনেকগুলো উপজেলার ছোট বড় রাস্তাগুলো সব পাকা এবং বিভিন্নভাবে উন্নত হলেও এখানে আদি যুগের সেই কাঁচা রাস্তা গুলোর মধ্যে অনেক রাস্তা  এখনও আগের মত বলবত রয়েছে। এবং মেইন মেইন জনপদগুলোর বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে।

সাবেক এমপি মরহুম আলমগীর হায়দার খান সাহেবের সময় এই উপজেলায় অনেক রাস্তা পাকা করন করা হয়। কিন্তু অন্যান্য এমপিরা নির্বাচিত হলেও অত্র উপজেলায় উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন হয় নাই।

এছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য ও অত্র উপজেলার সবচাইতে জনপ্রিয় ব্যক্তি মরহুম আলমগীর হায়দার খানের সময়ে উপজেলার বন্যা দুর্গত এলাকায় কাঁচা রাস্তা গুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে মেরামত করা হত। কিন্তু গত ক'বছর রাস্তাগুলোতে উল্লেখযোগ্যভাবে মাটি না কাটার কারণে বন্যা অথবা বারী বৃষ্টি হলেই রাস্তা গুলো সব পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে করে জনদুর্ভোগ কঠিন আকার ধারণ করে।

উপজেলাটি ১৫ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। প্রত্যেকটি ইউনিয়নের অনেক গ্রামের মেইন-মেইন সড়ক এখনও কাঁচা। কিন্তু পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলোতে আরো অনেক বেশি উন্নয়ন লক্ষ্য করা গেছে। তাই ফরিদগঞ্জ উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নের অনেক মানুষের মনে প্রশ্ন জাগে  পার্শ্ববর্তী উপজেলায় এত উন্নয়ন হলে আমাদের উপজেলায় সমস্যা কি?

 

ফরিদগঞ্জ উপজেলার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মোঃ জহিরুল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম, ইমাম হোসেন জানান- গ্রামের রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। বর্ষা হলেই রাস্তার উপর পানি ওঠে। তখন নৌকা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। তারা আরও জানান এই এলাকার একমাত্র প্রধান সড়ক চাঁদপুর-চান্দ্রা-মুন্সিরহাট-রামগঞ্জ সড়ক। যাহা চলাচলের একেবারেই অনুপোযোগী।

অন্যদিকে উপজেলার পশ্চিম অঞ্চলের কলেজপড়ুয়া ছাত্র রুবেল মিয়া, পথচারী জসিম উদ্দিন, আব্দুল আউয়াল, সহ ক,জন জানান- আমাদের এই এলাকাটি সবচেয়ে অবহেলিত। তারা বলেন চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়ক এবং ভাটিয়ালপুর হতে হরিনা ফেরিঘাট পর্যন্ত রাস্তাটির অনেক জায়গায় বড় বড় গর্ত হয়ে বেহাল অবস্থা। এছাড়া পশ্চিম ও দক্ষিণ অঞ্চলের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম আইলের রাস্তা হতে গোয়ালভাওর - রামপুর অভিমুখী রাস্তাটির করুণ পরিণতির অবস্থা বিরাজ করছে। অভিযোগকারীরা বলেন সরকারি ভাবে যে পরিমাণ বরাদ্দ হয়, এগুলো দিয়ে যদি সঠিকভাবে কাজ করা হত, তাহলে উন্নয়নের জোয়ার বইত আমাদের এ এলাকায়। 

রুপসা খাজুরিয়া আমিরা বাজার এলাকার মাহফুজ, ফারুক মিয়া, খোরশেদ আলমসহ ক,জন বলেন- আমাদের এই এলাকার একমাত্র মেইন সড়ক ফরিদগঞ্জ-রুপসা-খাজুরিয়া সড়ক। যার পরিস্থিতি ইতিপূর্বে বিভিন্ন গণমাধ্যম টেলিভিশন সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। রাস্তাটি দ্রুতভাবে মেরামত করার জন্য তাগিদ দেওয়ার যেন কেউ নেই। তারা আরো বলেন জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনে আসলে উন্নয়নের কথা বললেও নির্বাচনে জয়লাভ করে প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে যান।

অন্যদিকে আষ্টা ও খাজুরিয়া এলাকার মোস্তফা মিয়া, ইকবাল চৌধুরী, মনির হোসেন জানান পূর্ব ও দক্ষিণ অঞ্চলের মানুষ চাঁদপুর ও হাজিগঞ্জ যেতে ফকির বাজার হতে গল্লাক-আষ্টা- খাজুরিয়া বাজার পর্যন্ত সড়কটি ব্যবহার করেন। কিন্তু সড়কটিতে বর্তমানে খুব বেশি খানাখন্দ ও করুণ অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়া ফরিদগঞ্জ বাজারের কালিরবাজার রাস্তার মাথা থেকে কালিরবাজার অভিমুখী রাস্তার অনেক জায়গায় খানাখন্দে ভরে গেছে। তাই যানবাহন চলাচলে এই সড়কে ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটছে। উপরে উল্লেখিত সড়কগুলো ফরিদগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কয়েকটি মহাসড়ক এবং আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং উপজেলার বড় বড় সড়কগুলোর কয়েকটির চিত্র। কিন্তু অত্র উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের দু-একটি সড়ক ছাড়া বাকি পাকা এবং কাঁচা সড়কগুলোর করুণ অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়া এ উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নে, এমন অনেক রাস্তা আছে যাহা ৮,১০,১২ এবং ১৫ বছর আগে পাঁকা করা হয়েছে, যাহা অদ্যবধি আর রিপিয়ারিং এবং সংস্কার করা হয় নাই। সেসব সড়কগুলোর মধ্যে অনেক  সড়কই এখন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। যার কারণে উপজেলাটি সত্যি সত্যি যেন অবহেলিত এক জনপদের মতই দেখায়।

বর্তমানে ফরিদগঞ্জের সবচাইতে বড় উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, ফরিদগঞ্জ উপজেলার বর্তমান মাননীয় এমপি মহোদয় অত্র উপজেলার গর্বিত পরিবারের সন্তান। উপজেলার অনেকের সাথে কথা হলে তারা জানান বর্তমান এমপি মহোদয় একজন ভালো এবং বিচক্ষণ মানুষ। এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার খুব কাছের মানুষ। তাই তিনি জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে অনেক কিছুই চাইলে পাবেন। তাই, তাদের দাবী অবহেলিত এ উপজেলাকে ঢেলে সাজাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপর কোন রকম আস্থা না রেখে, তিনি নিজ হাতে অত্র উপজেলাকে উন্নয়নে সমৃদ্ধ করবেন বলে তাদের  বিশ্বাস।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়