শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৫  |   ৩০ °সে
জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয় অন্যান্য

প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:৫১

জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল কর্তাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালো শাহরাস্তি ক্রীড়া সংস্থা

জেলা প্রশাসক কাপ ফুটবল কর্তাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখালো শাহরাস্তি ক্রীড়া সংস্থা
চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম

চাঁদপুর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ২১তম জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাপে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিকেলে এক লজ্জাজনক ঘটনার জন্ম দেয় শাহরাস্তি উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার ফুটবল দল । ফরিদগঞ্জের বিপক্ষে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর আন্তর্জাতিক ফুটবলের নিয়ম ভঙ্গ করে খেলোয়াড়দের মাঠ ছাড়ার ঘটনায় দর্শক ও ক্রীড়ামোদীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ফরিদগঞ্জের তরিকুলের পা থেকে আসে অনবদ্য একটি গোল। এতে স্কোর দাঁড়ায় ফরিদগঞ্জ ২-০। শাহরাস্তি গোল হজম করার পরপরই শাহরাস্তির এক খেলোয়াড় পড়ে গেলে ক্যাপ্টেন ছাড়া বাকি খেলোয়াড়রা মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। তখন খেলা বন্ধ হয়ে গেলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার আহ্বায়ক ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন নিজেই মাঠে নেমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। দীর্ঘক্ষণ বোঝানোর পর খেলোয়াড়রা মাঠে ফিরে এলেও খেলার প্রতি কোনো আগ্রহ দেখাননি। কর্নার, ফ্রি কিক কিংবা ওপেন প্লে—কোনো ক্ষেত্রেই তারা সক্রিয় হননি। দাঁড়িয়ে থেকেই ম্যাচের শেষ বাঁশি পর্যন্ত সময় পার করেন। এতে খেলার সৌন্দর্য যেমন নষ্ট হয়েছে, তেমনি ক্রীড়াচেতনার বড়ো ঘাটতি চোখে পড়ে।

আন্তর্জাতিক ফুটবল নিয়ন্ত্রণ সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী খেলা সচল রাখতে প্রতিটি দলে ন্যূনতম সাতজন সক্রিয় খেলোয়াড় থাকা বাধ্যতামূলক। কোনো দল ইচ্ছাকৃতভাবে খেলা বিলম্বিত বা বন্ধ করলে রেফারি ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করার ক্ষমতা রাখেন। প্রতিপক্ষ বা খেলার স্পিরিট নষ্টকারী আচরণকে ‘unsporting behaviour’ হিসেবে গণ্য করা হয়, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। বিশেষজ্ঞদের মতে, শাহরাস্তির খেলোয়াড়দের আচরণ সরাসরি আন্তর্জাতিক নিয়ম ভঙ্গের শামিল।

চাঁদপুর স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকরা জানান, হার-জিত খেলার অংশ হলেও মাঠে এমন আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ফরিদগঞ্জের সমর্থকরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে ডিসি কাপের মতো মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্টে এমন দৃশ্য ফুটবলের জন্যে অশোভন অধ্যায়।

অন্যদিকে শাহরাস্তির একাংশ সমর্থক অভিযোগ করেন, রেফারি পক্ষপাতিত্ব করেছেন। তবে মাঠে নিরপেক্ষ চিত্রে রেফারির এমন কোনো ভূমিকা দেখা যায়নি।

স্থানীয় ক্রীড়া বিশ্লেষকরা বলেন, ফুটবলকে ভদ্রলোকের খেলা বলা হয়। শাহরাস্তির খেলোয়াড়রা যে আচরণ করেছে, তা খেলার চেতনার সম্পূর্ণ বিপরীত। এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে জেলা ক্রীড়াঙ্গনের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। চাঁদপুর স্টেডিয়ামে এদিনের ম্যাচ কেবল একটি খেলার ফলাফলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং ক্রীড়াচেতনা, শৃঙ্খলা ও আন্তর্জাতিক নিয়ম মানার গুরুত্বের প্রশ্নও সামনে এনে দিয়েছে। দর্শকরা প্রত্যাশা করছেন, এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নেবে। আগামীতে টুর্নামেন্ট শুরু হওয়ার আগেই বাইলজ অনেক শক্তিশালী করে মাঠে খেলা শুরু করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়