প্রকাশ : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯:১৫
সমাজকে ব্যাধিমুক্ত করতে সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন ---সুলতানা রাজিয়া
বাল্যবিবাহ ও শিক্ষার্থী ঝরে যাওয়া রোধ এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে অভিভাবক সমাবেশ

ফরিদগঞ্জে বাল্যবিবাহ, শিক্ষার্থী ঝরে যাওয়া রোধ এবং শিক্ষার মানোন্নয়নে অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
|আরো খবর
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫) বিকেলে পৌর এলাকার কেরোয়া হোসনে আরা বেগম আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের হলরুমে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি তারেক নাথ মল্লিকের সভাপতিত্বে প্রধান ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া।
তিনি বলেন, বাল্যবিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি। এই ব্যাধি থেকে মুক্ত হতে হলে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। আমাদের সমাজে প্রচলিত রয়েছে—ভালো ছেলে পাওয়া গেলে মেয়ের বয়স কম হলেও তাকে বিয়ে দিতে হবে, নইলে সুযোগ হাতছাড়া হবে। অনেকে মনে করেন, আগেই বিয়ে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করা যায়। কিন্তু এটি একটি ভয়াবহ ভুল। একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে, যে সংসার সম্পর্কে কিছুই জানে না, নিজের যত্ন নিতেও শিখেনি—তাকে বিয়ে দিয়ে দিলে দায়িত্ব শেষ হয় না। বরং দায়িত্ব আরও বেড়ে যায়। কারণ বিয়ের মাধ্যমে তাকে একটি নতুন সংসারের দায়িত্ব নিতে হয়। চারদিকে তাকালে অসংখ্য উদাহরণ চোখে পড়বে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মেয়েরা যদি ভালো শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের গড়ে তুলতে পারে, তবে তারা কখনো সমাজে পিছিয়ে থাকবে না। বাল্যবিবাহ ঝরে পড়ার অন্যতম কারণ। তাই এসব বন্ধ করতে হবে। অভিভাবকদের আরও বেশি সচেতন হতে হবে। উন্নত দেশে ভালো অভিভাবকত্বের জন্যে বর্তমানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যেখানে বাবা-মায়েরা সন্তান নেওয়ার পূর্বে সন্তান লালন-পালন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন।
শিক্ষার মানোন্নয়নে তিনি বলেন, সকালবেলা সন্তানকে স্কুলে পাঠানো এবং বিকেলে ফিরিয়ে আনার মধ্যেই অভিভাবকের দায়িত্ব শেষ নয়। সন্তান কী করছে, কী পড়ছে, পড়ালেখার বাইরে কী কাজে সময় দিচ্ছে—এসব বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা যদি সন্তানদের পরিপূর্ণ ও আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই, তবে আমাদের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করতে পারলেই ঝরে যাওয়া রোধ সম্ভব।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. গাউছুল আজম পাটওয়ারী, উপজেলা একাডেমিক কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও সাবেক পৌর প্রশাসক মো. সফিকুর রহমান পাটওয়ারী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার রাউত।
সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলামের পরিচালনায় আলোচনা শেষে বৃত্তিপ্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের পুরস্কৃত করা হয়।