প্রকাশ : ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২:৪৫
তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারে ধ্বংসের মুখে শাহরাস্তি মডেল মহিলা মাদ্রাসা
প্রথমে 'বলশিদ ফজিলাতুন্নেসা মহিলা মাদ্রাসা' এরপর ‘শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা মাদ্রাসা' বর্তমানে বলশিদ মডেল মহিলা মাদ্রাসা। এভাবেই বারবার নাম পরিবর্তন করা হয় শাহরাস্তি উপজেলার টামটা উত্তর ইউনিয়নের বলশিদ গ্রামের এই মাদ্রাসাটির। ১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এককভাবে আধিপত্য বিস্তার করে আসছেন মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সুপার আমিনুল ইসলাম। বিভিন্ন সরকারের সময় বিভিন্ন সুবিধা পেতে তিনি একাধিকবার মাদ্রাসার নাম পরিবর্তন করেন। শুধু মাদ্রাসার নাম পরিবর্তন নয় নিজের অবস্থানও পরিবর্তন করেছেন বেশ কয়েকবার। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমান সময়ে তাকে অবস্থান পরিবর্তন করে অন্য একটি রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। কয়েক বছর পূর্বে আমিনুল ইসলাম অত্র মাদ্রাসার সুপার পদ থেকে সরে গিয়ে উপজেলার আহমেদনগর আব্দুল আজিজ আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করলেও তিনি বলশিদ মডেল মহিলা মাদ্রাসার আধিপত্য বজায় রেখেছেন। বিভিন্ন সময় তার বিরুদ্ধে নানা আলোচনা সমালোচনা থাকলেও বর্তমান সময়ে তার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী প্রকাশ্যে আন্দোলন গড়ে তুলছে। মানববন্ধন, প্রতিবাদ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সাবেক সুপার উক্ত মাদ্রাসার গভর্নিংবডির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় পর থেকেই এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, জেলা ওলামা লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম এলাকাবাসী ও সদস্যদের সাথে আলোচনা না করেই একক ক্ষমতা বলে মাদ্রাসার গভর্নিংবডির সভাপতি নির্বাচিত হন। বিষয়টি জানাজানি হলে সকলের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ইতিমধ্যেই ৩জন নবাগত সদস্য পদত্যাগ করেন। এলাকাবাসীর দাবি ফ্যাসিবাদের দোসর আমিনুল ইসলাম একক আধিপত্য বিস্তার করে মাদ্রাসায় আওয়ামী লীগের উত্থান ঘটাতে চায়। তাঁরা জানান, তিনি কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার তিনদিনের মধ্যেই মো. মনিরুজ্জামানকে সুপার হিসেবে নিয়োগ দেন। সেই সুপার রহিমানগর ইউসুফ সফর আলী দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা থেকে জুলাই অভ্যুত্থানে বিতাড়িত হন।
|আরো খবর
এলাকাবাসী আরো জানান, সভাপতি আমিনুল ইসলাম সুপার থাকা অবস্থায় এই মাদ্রাসায় তার পরিবারের ৮ জনকে বিভিন্ন পদে চাকুরি দেন। এর মধ্যে তার স্ত্রীও রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নানান অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা হলেন- উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আলী আশরাফ বলেন, উক্ত মাদ্রাসার চলমান পরিস্থিতিতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে।
এদিকে চলমান পরিস্থিতিতে মাদ্রাসাটির শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। ছাত্র শিক্ষকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে পাঠদানের পরিবেশ।