প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ২১:০৬
বালিথুবায় যুবদল কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগ কর্মীর হামলার অভিযোগে মানববন্ধন

ফরিদগঞ্জ উপজেলার ২নং বালিথুবা ইউনিয়নের সোসাইচর গ্রামের খাসের বাড়ির হানিফ মিয়ার বিরুদ্ধে এলাকার অসহায় মানুষ এবং যুবদল নেতা-কর্মীদের উপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এমন অভিযোগ করেছেন হানিফ মিয়ার বিরুদ্ধে মানববন্ধনে আসা এলাকার লোকজন।
মানববন্ধনে উপস্থিত হওয়া একাধিক ব্যক্তি থেকে জানা যায়, হানিফ মিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। ৫ আগস্টের পর ইউনিয়নের অনেক আওয়ামী লীগ নেতা এলাকাছাড়া হলেও হানিফ মিয়া এখনো এলাকায়ই আছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাবস্থায় হানিফ মিয়া এলাকায় ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করতেন। নিজ বাড়ি এবং এলাকার অসহায়দের প্রতি ব্যাপক অবিচার করতেন তিনি। এমন অভিযোগ করেছেন মানববন্ধনে উপস্থিত ব্যক্তিবর্গ।
শনিবার (৫ এপ্রিল ২০২৫) একই বাড়ির যুবদল কর্মী সেলিমের ওপর সন্ত্রাসী হামলা করেন হানিফ মিয়া। মানববন্ধনে আসা অভিযোগকারীরা জানান, শনিবার দুপুরে যুবদল কর্মী সেলিম তার গরুর জন্যে মাঠে ঘাস কাটতে যান। এ সময় হঠাৎ হানিফ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সেলিমের ওপর হামলা করে সেলিমকে এলোপাতাড়ি কোপান। এতে করে সেলিমের শরীরে মারাত্মক জখম হয়। পরে তাকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে তার একটি জখমেই ১৫ টি সেলাই দিতে হয়। হানিফের এসব অত্যাচার হতে রেহাই পেতে রোববার (৬ এপ্রিল ২০২৫) সকালে এলাকার লোকজন মানববন্ধন করে।
মানববন্ধনে আসা গ্রাম পুলিশ জসিম ক্ষোভের সাথে বলেন, দীর্ঘদিন যাবত হানিফের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। ৫ আগস্টের পর ভেবেছিলাম তিনি আর এমনটা করবেন না। কিন্তু এখন আবার তার অত্যাচার শুরু হয়েছে, আমরা তার বিচার দাবি করছি। মমিন নামের একজন বলেন, তার বিরুদ্ধে আর কত অভিযোগ দিবো! ইতঃপূর্বে তার অত্যাচারের অনেক অভিযোগ হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয় না। সেলিমের ভাই মাসুদ ক্ষোভের সাথে বলেন, হানিফের অত্যাচারে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। আওয়ামী লীগ আমলে তার প্রভাবে এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতো। তার সেই অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এখন আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। আমরা প্রশাসনের মাধ্যমে তার শাস্তি দাবি করছি। আল আমিন নামের একজন বলেন, প্রশাসন এখনই যদি এই অত্যাচারী হানিফের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এলাকায় যে কোনো সময় বড়ো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। রাসেল নামের একজন বলেন, আবু হানিফ বাড়ির অসহায়দের মধ্যে এক আতঙ্ক। তিনি বাড়ির অসহায়দের গাছ কর্তন, সম্পত্তি দখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছেন। এছাড়া আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাবস্থায় তার দাপটে এলাকায় মানুষ আতঙ্কে থাকতো। যা নিয়ে তৎকালীন সময়ে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় একাধিকবার তার বিরুদ্ধে নিউজ হয়েছে। এখন আবার শুরু করেছেন। প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
সন্ত্রাসী হামলার শিকার সেলিম বলেন, আমি একজন খেটে খাওয়া মানুষ। নিজের গরুর জন্যে বাড়ির পশ্চিম পাশে পরিত্যক্ত জায়গায় ঘাস কাটতে গিয়েছিলাম। যেখান থেকে প্রতিনিয়ত বিভিন্নজন ঘাস কেটে নেয়। কিন্তু আমি কাটতে গেলেই হানিফ মিয়া হঠাৎ করে আমার উপর হামলা করে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমাকে কয়েকটা আঘাত করেন। আমাকে হাসপাতালে নিলে একটা আঘাতেই ১৫টা সেলাই লেগেছে। এ সময় তার ভাই মোশারফও আমাকে বেদম কিল ঘুষি মারে বলে তিনি জানান। সেলিমের মা আবেগ আপ্লুত হয়ে মানববন্ধনে উপস্থিত সকলের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, হানিফ মিয়া আর কত অত্যাচার করলে প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে?
সর্বশেষ খবর জানা যায়, এ বিষয়ে মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।