প্রকাশ : ১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:৪৫
মধ্যসত্বভোগীদের পোয়াবারো
৬ টাকা কেজির কুমড়া দোকানে বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়!
হাজীগঞ্জে এবার কুমড়ার বাম্পার ফলন ফলেছে। কিন্তু বরাবরের মতো ন্যায্য দাম পাচ্ছে না কৃষকরা। পুরো সুবিধা নিচ্ছে মধ্যসত্বভোগীরা। কৃষক জমিতে যে কুমড়ার কেজি বিক্রি করছে ৬/৭ টাকায়, সেই কুমড়া বাজারে এসে কেজি হয়ে যাচ্ছে ২৫/৩০ টাকা। কেজি প্রতি ২০/২২ টাকার পুরো লাভ নিচ্ছে মধ্যসত্বভোগী বা দালাল চক্র। এদিকে প্রয়োজনীয় দাম না পাওয়ার কারণে হতাশা প্রকাশ করে কৃষকরা চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, আসছে মৌসুমে আর কুমড়া চাষ করবো না।
|আরো খবর
সরজমিনে উপজেলার কুমড়া চাষে প্রসিদ্ধ গ্রামগুলো ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ডাকাতিয়া নদীর পলিমাটি ঘেরা উচ্চগাঁ, বলাখাল, শ্রীনারায়ণপুর, অলিপুর, সাতবাড়িয়া, মহেশপুরসহ তৎসংলগ্ন গ্রামগুলোতে বহু বছর ধরে শীতকালীন সবজি, মিষ্টি ও বর্ষা কুমড়ার ব্যাপক আবাদ হয়ে থাকে। অতীতের সকল বছরের চেয়ে এবারে এ অঞ্চলে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন ফলেছে। ইতোমধ্যে কুমড়ার ফলন তুলতে শুরু করেছে কৃষকরা।
হাজীগঞ্জ কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, মৌসুম ভিত্তিক নিরাপদ শাক সবজিসহ বিভিন্ন ফসল চাষে কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের নিয়মিত উদ্বুদ্ধ করা হয়। এ অঞ্চলের মাটি অপেক্ষাকৃত উর্বর, তাই শাকসবজি আবাদে সময়, শ্রম ও খরচ কম হওয়ায় প্রতি বছরই মিষ্টি কুমড়ার আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠছে কৃষককুল। এখন বিক্রয় হওয়ার সময়। প্রতি বছর এ সময়ে জমিনের প্রায় ৬০ শতাংশ কুমড়া বিক্রয় হয়ে যায়।
একাধিক কৃষক জানান, জমি থেকে পাকা কুমড়া তুলে সড়কের পাশে স্তূপ করে রাখলে পাইকাররা এসে তা কিনে নিয়ে যায়। আমরা সাধারণত সাইজ ভেদে ৬ থেকে ৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে থাকি। বড়ো বড়ো পাইকাররা আমাদের কুমড়া ট্রাকে করে ঢাকার কারওয়ান বাজার ও চট্টগ্রামে নিয়ে যায়। তবে এ বছর পাইকাররা এখনো ঠিকমতো আসছে না। আরো ১০/১৫ দিনের মধ্যে কুমড়াগুলো বিক্রয় করতে না পারলে কুমড়া চাষের চালান আসবে না, আর কুমড়ার জমি ভেঙ্গে জমিতে পানি ঢুকিয়ে ইরি-বোরো রোপণ করতে হবে।
কৃষক আবু বকর ছিদ্দিক, সফিক গাজী ও জুলফু মিয়া জানান, প্রতিবছর উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে আমাদের চিন্তা করতে হতো না। বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে পুরো জমির কুমড়া কিনে নিতো। কিন্তু এবার এখনো বড়ো পাইকার আসে না। স্থানীয় বাজারে আমরা যে কুমড়া ৬/৭ টাকায় কেজি বিক্রি করি, আমাদের চোখের সামনে দোকানিরা সেই কুমড়া কেটে কেজি প্রতি বিক্রি করছে ২৫/৩০ টাকায়।
হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম জানান, এ বছর হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৬১৮ হেক্টরেরও বেশি জমিতে বাণিজ্যিকভাবে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করা হয়েছে। তবে অন্যবার থেকে এবারে পাইকারী ক্রেতা কিছুটা কম বলে জানতে পেরেছি। অপর প্রশ্নে তিনি বলেন, আশা করবো কৃষকরা নিজেরা পাইকারী বাজারে নিয়ে তাদের পণ্য বিক্রি করলে প্রয়োজনীয় দাম পাবে।