প্রকাশ : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:২৭
দেখা হয় না, চক্ষু মেলিয়া...
রাজরাজেশ্বরে একটি পুলের জন্যে ৭ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ
চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে একটি পুল কিংবা ব্রিজের জন্যে চরম দুর্ভোগের শিকার বন্দুকসী বাজারকেন্দ্রিক ৭ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ। চরবাসী মানুষের সুবিধার্থে স্থানীয় হানিফ বন্দুকসী নামে একজন সমাজসেবক বাঁশগাড়ি খালের ওপর প্রায় ৫০০ ফুট দীর্ঘ একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করে দেন। কিছুদিন পূর্বে বাঁশের সাঁকোটি ভেঙ্গে যায়। এতে পুনরায় দুর্ভোগে পড়েন এলাকাবাসী। তাদের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে পুনরায় হানিফ বন্দুকসী বাঁশের সাঁকোটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর ২০২৪) সরজমিনে বন্দুকসী বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিশাল এই সাঁকোটির মাঝের অংশ নদীতে ভেঙ্গে পড়েছে। ১০-১২ জন শ্রমিক বাঁশের সাঁকোটি মেরামতে কাজ করছেন। সাঁকো ভেঙ্গে যাওয়ায় পাশেই ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে খাল পার হচ্ছে শিশু, নারী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ অসংখ্য মানুষ।
কথা হয় স্থানীয় হেদায়েত উল্লাহ বন্দুকসী, সায়েদ দেওয়ান, শফিক দেওয়ান, বোরহান দেওয়ান, তৈয়ব আলী প্রধানিয়াসহ একাধিক ভুক্তভোগী গ্রামবাসীর সাথে। তারা বলেন, চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের ৬, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের প্রায় ৭টি গ্রামের মানুষ বাঁশগাড়ি খালের দুপাড়ে বসবাস করেন। দুপাড়ের মানুষের যোগাযোগের সুবিধার্থে স্থানীয় হানিফ বন্দুকসী একটি বাশের সাঁকো তৈরি করে দেন। এতে করে আমাদের দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হয়। কিছুদিন পূর্বে একটি বড়ো স্টিলের ট্রলারের ধাক্কায় সাঁকোটি ভেঙ্গে যায়। হানিফ বন্দুকসী আবারো বাঁশের সাঁকোটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছেন।
এলাকাবাসী আরো বলেন, এভাবে একজন মানুষের পক্ষে বার বার এই সাঁকোটি সংস্কার বা তৈরি করা সম্ভব নয়। তাই আমাদের দাবি, খালের ওপর স্থায়ীভাবে একটি কাঠের পুল কিংবা ব্রিজ নির্মাণ করা হোক। এ বিষয়ে আমরা চাঁদপুর জেলা প্রশাসন এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সুদৃষ্টি কামনা করেছি।
এ বিষয়ে হানিফ বন্দুকসী বলেন, আমাদের এই রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নটি চাঁদপুর সদর উপজেলায় অবস্থিত। অথচ এখানকার মানুষ এখনো সরকারি অনেক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
বাঁশগাড়ি খালের দু পাড়ে প্রায় দশ হাজার মানুষের বসবাস। ডিঙ্গি নৌকা দিয়ে তাদের এই খাল পাড়ি দিতে হয়। এতে করে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, শিশু এবং বয়স্ক মানুষের কষ্ট হতো। তাদের কথা চিন্তা করে ২০২৩ সালে প্রায় দেড় লাখ টাকা খরচ করে খালের ওপর সাড়ে ৪শ' ফুট দীর্ঘ বাঁশের সাঁকোটি তৈরি করেছি। কিছুদিন আগে ট্রলারের ধাক্কায় সাঁকোটি ভেঙ্গে যায়।
হানিফ বন্দুকসী আরো বলেন, বিষয়টি জানতে পেরে পুনরায় আমি সাঁকোটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে আমি চাঁদপুরের মাননীয় জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতি বিনয়ের সাথে অনুরোধ করবো, এখানে যেনো একটি স্থায়ী পুল কিংবা ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ দেয়া হয়। তাহলে এখানকার ৭টি গ্রামের প্রায় দশ হাজার মানুষ উপকৃত হবে।
জনগুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টির প্রতি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক ও সদর ইউএনও'র সদয় সুদৃষ্টি কামনা করেছেন মেঘনা নদী বেষ্টিত রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের বন্দুকসী বাজার এলাকার ভুক্তভোগী গ্রামবাসী।