আবারো জমজমাট বাবুরহাট স্কুলের সামনের অটোস্ট্যান্ড

চাঁদপুর পৌর মেয়রের নির্দেশে অপসারিত হওয়ার কিছুদিন পর আবারো জমজমাট বাবুরহাট স্কুলের সামনের অটোস্ট্যান্ড। ফলে আবারও বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ইভটিজিংসহ নানা বিড়ম্বনার মধ্যে শিকার হতে হচ্ছে। এছাড়াও বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীর পাশাপাশি বর্তমানে বাবুরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও এ বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে।

দীর্ঘ কয়েক বছর চাঁদপুর কন্ঠে সংবাদ প্রকাশ ও ছাত্রছাত্রীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে পৌর মেয়রের নির্দেশে স্কুলের সামনে থেকে অটোস্ট্যান্ডটি অপসারিত হওয়ার কয়েকদিন পর আবারও পুন: বহাল রয়েছে এই অটোস্ট্যান্ডটি।

জানা যায়, বর্তমানে এই অটোস্ট্যান্ডটি নিয়ন্ত্রন করছে বাবুরহাট এলাকার কয়েকটি কিশোর গ্যাংয়ের মাধ্যমে। এ স্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন অবৈধভাবে যে অর্থ আদায় হয়, তা কিশোর গ্যাংয়ে ব্যবহৃত হয়।

একটি সুত্র থেকে জানা যায়, বাবুরহাট স্কুলের সামনের অটোস্ট্যান্ড নিয়ন্ত্রন করে কিশোর গ্যাং নেতা তারেক মাল, জাহাঙ্গীর শেখের ছেলে শাওন শেখ, শুক্কুর শেখের ছেলে শামীম শেখ ও এদেরকে সহযোগিতা করে রহমান বেপারী।

জানা যায়, কোন অটোর ড্রাইভার স্কুলের সামনে অটো না রাখলে ও তাদের দৈনিক চাঁদা না দিলে রহমান বেপারীর তথ্যমতে কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্বে তাদের উপর হামলা করা হয় ও তাদেরকে এখান থেকে অটো ছাড়তে বাধ্য করা হয়।

উল্লেখ্য গত ২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর বাবুরহাট স্কুলের সামনে অটোস্ট্যান্ড সরিয়ে নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসক ও পৌর মেয়র বরাবর অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়ের সামনে থেকে অটো স্ট্যান্ড বসিয়ে যাত্রী ওঠানামা করা হচ্ছে।

অটোস্ট্যান্ডকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত সেখানে মাদকসেবী ও বখাটেদের আড্ডা জমে। এ আড্ডা থেকে বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা ইভটিজিং ও অপহরণের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে প্রতিদিনই বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছেন বলে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান। এর আগে করোনাকালীন সময়ের পূর্বে স্থানীয় কয়েকজন উদ্যোগ নিলেও সরাতে পারেনি এই অটোষ্ট্যান্ডটি। পূর্বে এই অটোষ্ট্যান্ডটি ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় পরিচালিত হতো।

এ বিষয়টি নিয়ে ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর "বাবুরহাট স্কুলের সামনে অটোস্ট্যান্ড বসিয়ে ছাত্রলীগের চাঁদাবাজি ইভটিজিংয়ের শিকার ছাত্রীরা" এই শিরোনামে দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠেও সংবাদ প্রকাশিত হয়।

ওই সংবাদেও এই অটোষ্ট্যান্ডকে কেন্দ্র কিশোর গ্যাংসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ঘটছে বলে উল্লেখ করা হয়। এই কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরাই বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় নানা রকম বিশৃংখল কাজে জড়িয়ে পড়ছে ও বিদ্যালয়ে আগত ছাত্রীদের এবং এই সড়কে চলাচলকারী কিশোরীদের উত্তক্ত করছে বলে জানা যায়।

বিদ্যালয়ের সামনের এ অটো ষ্টান্ডটির কারনে যে কোন সময় অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন এবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।স্থায়ীভাবে বিদ্যালয়ের সামনে থেকে অটো স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেওয়ার জন্য চাঁদপুর জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও বাবুরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক ও বাবুরহাট এলাকার সচেতন জনগণ।