বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪  |   ২৩ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারের পুত্রবধূ মাদকসহ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক।
  •   মহাখালীতে ট্রেন থামিয়ে শিক্ষার্থীদের হামলা, শিশুসহ কয়েকজন রক্তাক্ত
  •   কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ভাংচুরের ঘটনা গৃদকালিন্দিয়া কলেজে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ॥ পাঠদান স্থগিত
  •   চট্টগ্রামে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল থেকে অর্থদাতাসহ দুজন গ্রেপ্তার।
  •   রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হচ্ছেন খবরে আসামিপক্ষে শুনানি করলেন না সমাজী।

প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০০:০০

নিজের গাছ নিজে কুপিয়ে অন্যকে হয়রানির চেষ্টা!

এ যেনো নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ!

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি ॥
নিজের গাছ নিজে কুপিয়ে অন্যকে হয়রানির চেষ্টা!

ফরিদগঞ্জে নিজের মালিকানাধীন গাছে শাবল দিয়ে কুপিয়ে মিথ্যে গল্প রচনা করে অন্যকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে আব্দুল আজিজ মিজি নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এ যেনো নিজের নাক কেটে অন্যের যাত্রা ভঙ্গ করা! পৌর এলাকার ১নং ওয়ার্ডের উত্তর কেরোয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। স্থানীয়দের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় এ গল্পের কাহিনি।

স্থানীয়দের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, ওই গ্রামের মিজি বাড়ির বাসিন্দা মৃত আব্দুল লতিফ মিজির ছেলে আব্দুল আজিজ মিজি (৫০) ও প্রতিপক্ষ মোঃ সুলতান আহমেদের ছেলে মোঃ আক্তার হোসাইন (৩০) একই বাড়ির বাসিন্দা হলেও দীর্ঘদিন ধরে আব্দুল আজিজ মিজি অন্যস্থানে বসতবাড়ি করে বসবাস করে আসছে। পুরাতন বাড়িতে নিজের দাবিকৃত একটি সম্পত্তি রয়েছে তার। অন্য একপক্ষের কাছে সম্পত্তিটি বিক্রি করলেও রেজিস্ট্রি হয়নি। এ সম্পত্তিকে পুঁজি করে বিভিন্ন মানুষকে হয়রানির নীলনকশা তৈরি করে আসছে আব্দুল আজিজ। পূর্বে এলাকার একাধিক ব্যক্তিকে এমন হয়রানির তথ্য পাওয়া গেছে।

সম্প্রতি আব্দুল আজিজ মিজির এমন হয়রানির শিকার হয়েছেন আক্তার হোসেন নামে এক যুবক। শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি সমাজে ন¤্র-ভদ্র হিসেবে পরিচিত আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে এমন ঘটনা রচনার বিষয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে।

সরেজমিনে ওই বাড়ির বাসিন্দা জুয়েল হোসেন, আবুল খায়ের, গৃহবধূ রোকসানা আক্তারসহ আরো অনেকে জানান, বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের পর মানুষ যখন ঘুমে, ঠিক তখনই আব্দুল আজিজ মিজি তার নতুন বাড়ি থেকে পুরাতন বাড়িতে এসে নিজের মালিকানা দাবি করা একটি হার্বা গাছ ও একটি নারিকেল গাছের শাবল দিয়ে কুপিয়ে ক্ষত সৃষ্টি করে গাছপালা কাটা ও অন্যান্য অভিযোগ তুলে আক্তার হোসেনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দায়ের করেন। এ ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা ডিবি পুলিশের সদস্যরা।

আক্তার হোসেনের বৃদ্ধা মা ফরিদা বেগম বলেন, ফজরের নামাজ শেষে আমি প্রতিদিনের ন্যায় কোরআন তেলাওয়াত করছি। এমন সময় বাইরে উচ্চশব্দ শুনে গিয়ে দেখি, আব্দুল আজিজ মিজি নিজে গাছের গোড়ায় শাবল দিয়ে কোপাচ্ছে। আমাদের ডাকচিৎকারে প্রতিবেশীরা আসলে আব্দুল আজিজ ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। এ কথার সত্যতা নিশ্চিত করেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই বাড়ির অন্যান্য পুরুষ ও নারীরা।

মিথ্যে গল্প রচনা করে নিরীহ মানুষকে হয়রানি করার কারণে আব্দুল আজিজ মিজির এমন ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে স্থানীয়রা।

এদিকে ঘটনা সম্পর্কে জানতে আব্দুল আজিজ মিজির বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। পরিবারের লোকজনও এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার আমিন মিজি বলেন, আব্দুল আজিজ মিজির আহ্বানে ঘটনা সম্পর্কে কয়েকবার অবগত হয়েছি। মূলত মানুষকে হয়রানি করাটা মনে হচ্ছে তার নেশা। সমাধান অন্যরা চাইলেও প্রকৃতপক্ষে আব্দুল আজিজ মিজি নিজেই করতে চান না।

অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে এএসআই মোঃ সাহিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের আলোকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। জানতে পেরেছি সম্পত্তিগত একটি বিষয় রয়েছে। স্থানীয়ভাবে এর পূর্বে বিষয়টি নিয়ে বৈঠক হয়েছে। ঘটনা সম্পর্কে অবগত স্থানীয়দের মাঝে নিরপেক্ষ ক’জন গণ্যমান্য ব্যক্তি ও উভয়পক্ষকে বলেছি কাগজপত্র নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আসার জন্যে। পরে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।

পৌর মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারী বলেন, আক্তার হোসেন নামের ওই যুবক এলাকাতে নম্র-ভদ্র হিসেবে জানি। শুধু তা-ই নয়, নতুন প্রজন্ম গড়ার কারিগর একজন শিক্ষকও বটে। বিনা কারণে মানুষকে হয়রানি করা ঘৃণিত কাজ। যেহেতু প্রশাসনের কাছে অভিযোগ আছে। আশা করি, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে প্রশাসন।

হয়রানির শিকার আক্তার হোসেন বলেন, তিনি নিজে নিজের গাছ কেটে উল্টো আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলছে। দলিলে উনার সম্পত্তি হলো ৮, কিন্তু তিনি জোর করে ১০ খাচ্ছেন। এরপরও তিনি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। আমি বার বার বলেছি, যেটা সঠিক সেটা আমার বিপক্ষে গেলেও মেনে নিবো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়