প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২১, ০০:০০
দেশের গর্বিত সন্তান হাইমচর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার, হাইমচর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ চন্দ্র মজুমদার দীর্ঘদিন যাবৎ বহু রোগে অক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী আছেন। চিকিৎসা করার মতো আর্থিক সচ্ছলতা না থাকায় সুচিকিৎসার জন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহায্য-সহযোগিতা কামনা করেছে তার পরিবার-পরিজন। গত ২৫ অক্টোবর চাঁদপুর শহরস্থ তার ছেলের ভাড়া বাসায় গিয়ে দেখা যায়, এক সময়ের দাপুটে সুঠাম দেহের অধিকারী মিষ্টিভাষী সন্তোষ চন্দ্র মজুমদার বিছানায় শুয়ে আছেন অনেকটা অচেতন অবস্থায়।
জাতির এই বীর সন্তানকে সম্মান জানিয়ে জানতে চাওয়া হয়, দাদা কেমন আছেন? অনেক ডাকাডাকির পরও কোনো সাড়া পাওয়া গেলো না। শুধু মায়াদৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইলেন। সাড়া না দেয়ায় পাশ থেকে তার ছোট ভাই হাইমচর উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অজয় কৃষ্ণ মজুমদার বলতে চেষ্টা করলেন, দাদা, বিমল দা এসেছেন। কিন্তু তিনি হাঁ বা না কিছুই বললেন না। শুধু তাকিয়ে রইলেন।
তার পরিবার-পরিজন জানালেন অসুস্থ সন্তোষ চন্দ্রের স্বাস্থ্যগত সমস্যার কথা। তারা বললেন, বিগত দুই বছর ধরে নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি প্রায়ই শয্যাগত অবস্থায় থাকেন। সরকারি ভাতা হিসেবে যা পান তার অনেকটাই ঔষধ সেবনে চলে যায়। অনেকটা টানপোড়েন অবস্থার মধ্যেই দিন অতিবাহিত হচ্ছে। তারপরও থেমে থাকেনি তার চিকিৎসা কার্যক্রম। কিন্তু হঠাৎ করেই গত ১০ সেপ্টেম্বর ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং তার ডান হাত, ডান পা অবশ হয়ে যায়। চাঁদপুরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা আগারগাঁও নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনি ডাঃ কাজী মহীবুর রহমানের চিকিৎসা নেন। চিকিৎসা শেষে পরবর্তী সময় ঢাকা মহাখালী শেখ রাসেল জাতীয় গ্যাস্ট্রো লিভার হাসপাতালে তাকে রেফার করা হয়। সেখানে কিছুদিন চিকিৎসা শেষে তাকে চাঁদপুর শহরের ভাড়া বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে এখানেই তিনি অনেকটা অচেতন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। কখনো কিছু বলেতে চেষ্টা করেন আবার কখনো অনেকটা নিশ্চুপ হয়ে পড়েন। তাকে দেখার জন্যে অনেকেই ছুটে আসেন। কিন্তু তিনি অনেক কিছুই এখন আর মনে করতে পারছেন না।
তার পরিবার থেকে বলা হয়, উন্নত চিকিৎসা হলে তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন বলে তারা মনে করেন। কিন্তু উন্নত চিকিৎসা করার মত আর্থিক সঙ্গতি তাদের না থাকায় তারা তা পারছেন না। তাই পরিবারটি বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ চন্দ্র মজুমদারের উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাসহ মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন। তারা মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ মজুমদারের ছোটভাই অজয় কৃষ্ণ মজুমদার জানান, এমন কোনো সম্পদ নেই যা বিক্রি করে তারা তাদের অভিভাবক দাদাকে চিকিৎসা করাতে পারেন। পরপর দু’বার নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে তারা বর্তমানে হাইমচর উপজেলার পশ্চিম চর কৃষ্ণপুরে বসবাস করছেন।
উল্লেখ্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তোষ চন্দ্র মজুমদার, পিতা মৃত অম্বিকা মজুমদার, মাতা মৃত হরকুমারী, যার আইডি নম্বর ১৯৫২১৩১৪৭২৩৬২৮৬৮২ লাল মুক্তি বার্তা নং-০২০৫০৭০০৩৩, গেজেট নং-৩৪৩৭, সাবেক গ্রামণ্ডচরশোলাদী, ডাকঘর ও উপজেলা হাইমচর।