প্রকাশ : ০১ জুলাই ২০২১, ০০:০০
কুমিল্লা থেকে চুরি হওয়া ২০ টন পোল্ট্রি ফিড প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে হাজীগঞ্জ থেকে উদ্ধার হয়েছে। এতে ৪১৫ বস্তা মুরগি ও মাছের খাবার ছিলো। গতকাল বুধবার দুপুরে হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গৌরিপুর সড়কের হাজীগঞ্জের বটতলা এলাকার একটি গোডাউন থেকে উক্ত মালের ৩৯৬ বস্তা উদ্ধার করা হয়। হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানা পুলিশ উদ্ধার কাজ পরিচালনা করে। এর আগে পুলিশ চুরি যাওয়া মাল বহনকারী ট্রাক উদ্ধারসহ ইমান হোসেন (২২) নামের ট্রাকের হেলপার তথা চোরকে আটক করে পুলিশ। মূলত তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে হাজীগঞ্জে আভিযানে আসে কুমিল্লার পুলিশ। গত ১০ জুন মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে চট্টগ্রামের মিরসরাই যাওয়ার পথে কুমিল্লা থেকে মালামালসহ ট্রাকটি চুরি হয়।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানা পুলিশের সূত্র জানায়, মাছ ও মুরগির খাবারসহ ট্রাক চুরি হয় গত ১০ জুন। ট্রাকটি চুরির কিছুদিন পর ট্রাকের হেলপার ঈমামকে আটক করে পুলিশ। এর পরেই ইমনের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে পুলিশ। এতে দেখা যায় ট্রাকের চালক ও হেলপার চোর।
পুলিশ আরো জানায়, গত ১০ জুন মুন্সীগঞ্জে গজারিয়া বাজারস্থ কাজী ফার্মস লিমিটিডের গজারিয়া ফিড মিল থেকে ২০ টন পোল্ট্রি ফিড ৪১৫ বস্তা মুরগি ও মাছের খাবার পরিবহনের জন্যে ট্রাকটি ভাড়া নেয় কর্তৃপক্ষ। উক্ত মাল নিয়ে গজারিয়া থেকে ট্রাকটি চট্টগ্রাম মিরসরাই উপজেলার জোরারগঞ্জ বাজারের মেসার্স ইমন পোল্ট্রির উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসলেও নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছেনি।
ঐদিন রাত পৌনে বারটায় ট্রাকের চালক ও হেলপার রাতের খাবারের জন্য কুমিল্লা জেলার পদুয়ার বাজার বিশ^রোডস্থ ছন্দু-১ হোটেলের সামনে ট্রাকটি থামায়। এরপর খাওয়া-দাওয়া শেষে হোটেল থেকে বের হয়ে চালক ও হেলপার দেখেন ট্রাকটি নেই।
এর পরেই চালক ও হেলপার ট্রাকের মালিক বাবলু মজুমদারকে জানালে তিনিসহ ঘটনাস্থলসহ আশপাশের এলাকায় খোঁজাখুঁজি করে কোনো হাদিস পাননি। এদিকে ঘটনার চারদিন পরেও ট্রাকের হদিস না পেয়ে গত ১৪ জুন ট্রাক মালিক বাবলু মজুমদার কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ (মামলা নং-২১) দায়ের করেন।
এর সূত্র ধরে ট্রাকে থাকা আইপিএস ট্র্যাকিং-এর সহায়তা নেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার উপ-পরিদর্শক খালেদুল বাহার। ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে পরে পরিত্যক্ত অবস্থায় কুমিল্লা থেকে ট্রাকটি উদ্ধার করা হলেও ট্রাকের মালামাল উদ্ধার করা যায়নি।
এর পরেই ট্রাক মালিকের সহায়তায় ট্রাকের হেলপার ইমামকে হাজীগঞ্জ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ইমামের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত মালামাল উদ্ধার করে পুলিশ। ইমাম হাজীগঞ্জের বলিয়া গ্রামের চকিদার বাড়ির মিজানুর রহমানের ছেলে। সে ট্রাক চুরির সময় চালকের সহযোগী হিসেবে ছিলো। ট্রাকের চালক একই গ্রামের মনির হোসেনের ছেলে সাগর হোসেন (২৫) পলাতক রয়েছে।
এদিকে গতকাল উদ্ধারকৃত মালামাল নিয়ে যান উদ্ধারকৃত মালের মালিক নিজে। এ সময় হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাজী মনির হোসেন, পোল্ট্রি ফিডের ক্রেতা ও চট্রগ্রামের মিরসরাই জোরারগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী, মেসার্স ইমন পোল্ট্রির মালিক মোঃ নূর ইসলাম, ট্রাকের মালিক পক্ষের লোকজনসহ কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার পুলিশ এবং হাজীগঞ্জ পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিলেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার উপ-পরিদর্শক খালেদুল বাহার জানান, আজকে আমরা ৩৯৬ বস্তা মাল (পোল্ট্রি ফিড) উদ্ধার শেষে এর মালিককে বুঝিয়ে দিয়েছি। বাকী ১৯ বস্তা মাল উদ্ধারের কাজ চলমান রয়েছে।