প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮:৩৮
ফরিদগঞ্জে মাদ্রাসা শিক্ষককে জড়িয়ে মানহানিকর মামলা
ক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর গণস্বাক্ষরযুক্ত আবেদন ॥ সঠিক তদন্ত দাবি
এলাকার পঞ্চায়েতের একজন তিনি। মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেন। গ্রাম্য চিকিৎসক হিসেবেও খ্যাতি রয়েছে। স্থানীয় মসজিদ কমিটির কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন। এসব নিয়েই ব্যস্ত থাকেন আ. রব (৫০)। ফলে এলাকায় রয়েছে যথেষ্ট সুনাম। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, পীরের খাদেমসহ সর্বস্তরের লোকজনের কাছে তিনি একজন সচ্চরিত্রবান। তাঁর নারীঘটিত কোনো বদনাম নেই। অথচ এলাকার এক নারীর ধর্ষণ চেষ্টার মামলার আসামী হয়ে তিনি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এতে ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষ। একজন নিরাপরাধ মানুষকে শুধুমাত্র জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের ঘটনাকে উপজীব্য করে হয়রানি করার উদ্দেশ্যে মিথ্যা ও মানহানিকর মামলা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ। তারা আ. রবকে নিরাপরাধ দাবি করে গণস্বাক্ষরযুক্ত লিখিত আবেদন করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। যদিও ওই নারীর দাবি, তাকে ধষর্ণের চেষ্টা করেছেন মাদ্রাসা শিক্ষক ও গ্রাম্য চিকিৎসক আ. রব।
|আরো খবর
জানা গেছে, পশ্চিম সন্তোষপুর গ্রামের তালুকদার বাড়ির জালাল আহমেদের মেয়ে এক সন্তানের জননী একই এলাকার মাদ্রাসা শিক্ষক ও গ্রাম্য চিকিৎসক আ. রবের বিরুদ্ধে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে চাঁদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগে প্রকাশ, ওই নারী আ. রবের ঔষধের দোকানে গেলে তার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি নানা রকম অঙ্গভঙ্গি করতেন এবং তাকে বাজে প্রস্তাব দিতেন। এ নিয়ে বেশ কয়েকবার সালিসও হয়েছে। সর্বশেষ তিনি এই ঘটনা ঘটান।
এদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে সে এলাকায় গেলে স্থানীয় লোকজন শিক্ষক ও গ্রাম্য চিকিৎসক আ. রবের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, এটি একটি সাজানো ঘটনা। খাদেম হজু মিজি, ব্যবসায়ী মইন উদ্দিন, ইউপি সদস্য ছলিম উল্লাহ, সাবেক ইউপি সদস্য আরিফ হোসেন, স্কুল শিক্ষক রিয়াজুল হাসান, স্থানীয় মিজানুর রহমান, এমরান বেপারী, শাহ আলম, আমির হোসেন, নেছার আহম্মদসহ উপস্থিত লোকজন জানান, ওই নারী এবং আ. রব ডাক্তারকে নিয়ে এই পর্যন্ত কোনো সালিস হয়েছে বলে তারা শোনেন নি। এমনকি ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটিও তারা শোনেন নি। মামলা দায়েরের পর এখন জেনেছেন। তারা বলেন, মূলত জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে এদের সাথে। এ নিয়ে তাদের মধ্যে অনেকদিন ধরেই বিবাদ ও মামলা- মোকাদ্দমা আদালতে চলছে। এসব মোকাবেলা করতেই এই মামলা সাজানো হয়েছে বলে আমরা মনে করি। নচেৎ এতো বড় একটি ঘটনার সংবাদ আমরা কেউই জানবো না--এটা কীভাবে সম্ভব। বিকেল থেকে এশার নামাজ পর্যন্ত আমরা অনেকেই স্কুল ও মসজিদ সংলগ্ন আ. রবের দোকানে সময় কাটাই। কখনো ওই নারীকে আসতে দেখি নি এবং মসজিদ ও দোকানের বাইরে যেতে দেখিনি। এই ঘটনা জেনে আমরা অনেকেই হতবিহ্বল। তাই ঘটনার সঠিক তদন্তের জন্যে এলাকার লোকজন গণস্বাক্ষরযুক্ত আবেদন করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর। আমরা চাই, সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসুক।
এ ব্যাপারে ওই নারী জানান, মামলার এজাহারেই আমার বক্তব্য। এর বাইরে কিছু নেই।অভিযুক্ত আ. রব ডাক্তার বলেন, আমি এই মামলার আসামী হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে আমার। আমি চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। সঠিক তদন্ত হলে আমি নির্দোষ প্রমাণিত হবো। আ. রব ডাক্তারের ভাতিজা রাসেল বলেন, গত ২৯ অক্টোবর আমাদের সাথে জমি নিয়ে জালাল আহমেদের বিবাদ ও মারামারি হয়। আমার চাচা এই মারামারি থামাতে গিয়ে নিজে লাঞ্ছিত হন। চাচা আমাদের জমি সংক্রান্ত সকল কিছুই দেখভাল করেন। তার সম্মানহানি করতেই ২৭ অক্টোবর ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনা দেখিয়ে মামলা সাজায়। পরে ৩ নভেম্বর আদালতে মামলা দায়ের করে। আমরা সঠিক তদন্ত চাই, তাহলে মূল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।