বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৪  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কচুয়ায় ওসির অপসারণের দাবিতে সড়ক অবরোধ
  •   ভারত-মিয়ানমার থেকে ৮৯৮ কোটি টাকার চাল কিনবে সরকার
  •   মেয়াদোত্তীর্ণ বীজ ও কীটনাশক পাওয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা
  •   মশার উপদ্রবে চাঁদপুর পৌরবাসী ॥ বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী
  •   শাহরাস্তিতে সিএনজি অটোরিকশা মালিক ও চালকদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়

প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:১৫

আমার বাবা আমার বুকে মারা গেছে এবং সে সত্যটা বেরিয়ে আসলো’

মো: জাকির হোসেন
আমার বাবা আমার বুকে মারা গেছে এবং সে সত্যটা বেরিয়ে আসলো’
ছবি : সংগৃহীত

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে নাটক সাজিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক সচিব আবুল হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন হারিছ চৌধুরীর মেয়ে সামিরা তানজীন। বুধবার (৪ ডিসেম্বর) খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব আবুল হারিছ চৌধুরীর ডিএনএ টেস্টের প্রতিবেদন আদালতে দাখিল হলে বিষয়টি নিয়ে আদেশের পর এমন মন্তব্য করেন সামিরা।

২০২১ সালে গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, একই বছরের ৪ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ও বিএনপির সাবেক নেতা আবুল হারিছ চৌধুরীকে ‘মাহমুদুর রহমান পরিচয়ে ঢাকার সাভারের জালালাবাদ এলাকায় একটি মাদরাসার কবরস্থানে দাফন করা হয়।’

তবে ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর হারিছ চৌধুরীর মেয়ে এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করেন। পরবর্তীতে গত ৫ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নিশ্চিতে মরদেহ কবর থেকে তুলে ডিএনএ টেস্ট করার নির্দেশ দিয়ে রুল জারি করেন।

হারিছ চৌধুরীর মেয়ে গণমাধ্যমকে জানান, সদ্য বিদায়ী স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার তাদের গোয়েন্দা বিভাগের মাধ্যমে নাটক সাজিয়ে তার বাবার মৃত্যুকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এর ফলে মিডিয়াও ‘হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটছে না’ এমন একের পর এক রিপোর্ট করেছে।

সামিরা তানজীন বলেন, বাবার মৃত্যু নিয়ে যেন কখনো প্রশ্ন না উঠে সেটি নিশ্চিত করার জন্য এ রিট করেছি। আমার বাবার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ থাকবে, সন্তান হিসেবে এটা খুব মর্মান্তিক, কষ্টদায়ক। এখনো মানুষ জিজ্ঞেস করে সত্যিই কি মারা গেছেন! আমাদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। তাই এটা শেষ করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আদালত নিরাশ করেননি।

সাভারের জামিয়া খাতামুন নাবিয়্যিন মাদরাসার কবরস্থানে মাহমুদুর রহমান নামে কবর দেয়া হয় আবুল হারিছ চৌধুরীকে। রিট আবেদনের পর তার পরিচয় নির্ধারণে কবর থেকে তুলে ডিএনএ টেস্ট করতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। সেই সঙ্গে ডিএনএ টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর আবুল হারিছ চৌধুরীর নামে কেন ডেথ সার্টিফিকেট ইস্যু করা হবে না, তার নামে থাকা ইন্টারপোল রেড নোটিশ কেন প্রত্যাহার করা হবে না এবং তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী নিজ জেলায় বীর মুক্তিযোদ্ধার যথাযথ সম্মান দিয়ে কেন কবরস্থ করা হবে না এই মর্মে রুল জারি করা হয়।

পরবর্তীতে আদেশ অনুসারে গত ১৬ অক্টোবর কবর থেকে হারিছ চৌধুরীর মরদেহ তোলা হয়। ওইদিন তার দেহাবশেষ উত্তোলন করেন পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা। পরে হারিছ চৌধুরীর পরিচয় নিশ্চিত হতে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

একপর্যায়ে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেন। পরে সিআইডির ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবেরেটরির প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিএনএ পরীক্ষায় অজ্ঞাত মৃতদেহের দাঁত থেকে একজন পুরুষের পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া যায়। ডিএনএ পরীক্ষায় সুদৃঢ়ভাবে প্রমাণিত হয় যে, অজ্ঞাত মৃতদেহ সামিরা তানজীন ওরফে সামিরা তানজীন চৌধুরীর জৈবিক পিতা।

আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মাহদীন চৌধুরী। পাশাপাশি রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শফিকুর রহমান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. ইছা।

এ বিষয়ে আইনজীবী মাহদীন চৌধুরী জানান, তার ইচ্ছা অনুযায়ী সিলেটের কানাইঘাটের সড়কের বাজারের রামধনের মাটি গ্রামের ‘শফিকুল হক চৌধুরী মেমোরিয়াল অরফ্যানেজের কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদায় কবরস্থ করতে আদালত অনুমতি দিয়েছেন।

সামিরা তানজীন চৌধুরী জানান, আমার বুকে আমার বাবা মারা গেছে এবং সে সত্যটা বেরিয়ে আসলো। আমার আব্বুর দেহাবশেষ এখন ঢাকা মেডিকেলে। সেখান থেকে আব্বুকে দাফন করতে সিলেট নেয়া হবে। একটা প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে যেতে হবে।

রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, নমুনা নিশ্চিতের পর হারিছ চৌধুরীর দেহবশেষ এখন সিলেটে দাফন করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আদালতের আদেশ পালন করবে। আর এখনো রুল শুনানি শেষ হয়নি। এরমধ্যে ইন্টারপোলের বিষয় আছে।

তথ্যসূত্র: চ্যানেল ২৪

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়