বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬  |   ৩১ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   চাঁদপুর শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে 'আল্লাহু চত্বর'
  •   চাঁদপুর কণ্ঠৈর কলামিস্ট এএসএম শফিকুর রহমানের ইন্তেকাল
  •   নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব পেল সেনাবাহিনী
  •   জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনে’ প্রধান উপদেষ্টার ১০০ কোটি টাকার অনুদান
  •   মেঘনায় নিখোঁজ দুই ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশ : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০

হাজীগঞ্জের ধড্ডা পপুলার উবির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের যতো অভিযোগ

হাজীগঞ্জ ব্যুরো ॥
হাজীগঞ্জের ধড্ডা পপুলার উবির প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়মের যতো অভিযোগ

হাজীগঞ্জের ধড্ডা পপুলার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জ্যোৎস্না আক্তারের বিরুদ্ধে অনিয়মের বহু অভিযোগ এনেছেন স্থানীয় একটি পক্ষ। ইতোমধ্যে বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সে পক্ষটি। প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি নিয়ে ইতোমধ্যে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন ওই পক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এই প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে যাচ্ছেন না।

অনিয়মের অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, বিধি অনুযায়ী অষ্টম শ্রেণীর রেজিস্ট্রেশন ফি শিক্ষার্থী প্রতি ৭৪ টাকা ও নবম শ্রেণির ১১০ টাকা। অথচ প্রধান শিক্ষক অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫শ’ টাকা এবং নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৫৫০ টাকা করে আদায় করেছেন। পরীক্ষার ফরম পূরণের জন্য অতিরিক্ত ফি আদায়ের পাশাপাশি জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার প্রশংসাপত্রের জন্যে ৫শ’ থেকে ১ হাজার টাকা নিয়েছেন।

এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৬শ’ টাকা, ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা আদায় করেছেন । অথচ সরকারি বিধি অনুযায়ী ফরম পূরণের ফির সাথেই ব্যবহারিক পরীক্ষা ফি অর্ন্তভুক্ত রয়েছে। তিনি কোচিং বাণিজ্যের পাশাপাশি বছরে চারবার পরীক্ষা এবং ফি হিসেবে শিক্ষার্থী প্রতি ৪০০ করে ১ হাজার ৬শ’ টাকা আদায় করেছেন।

শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত আদায়কৃত টাকার রশিদ দেওয়া হতো না উল্লেখ করে অভিযোগকারীরা বলেন, উন্নয়ন ফি’র নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বছরে ১ হাজার টাকা আদায় করতেন প্রধান শিক্ষক জ্যোৎস্না আক্তার। পরীক্ষার সময় প্রতিষ্ঠান প্রতি সেন্টার ফি ৩শ’ টাকা, অথচ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ৩শ’ টাকা আদায় করতেন প্রধান শিক্ষক। তিনি বিদ্যালয়ের অর্থায়নে কেনা দুটি কম্পিউটার নিজের বাসায় রেখে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন।

অভিযোগে আরো জানা যায়, বিদ্যালয়ে কম্পিউটার ক্রয়ের জন্যে বাবুল পাটওয়ারী নামের একজন ১ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন। সেই কম্পিউটার কেনা হয়নি। স্কুল ক্যাম্পাসে মসজিদের স্থাপনা নির্মাণের নামে বিভিন্ন ব্যাচের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে একাধিকবার টাকা তুলেছেন, কিন্তু সেই মসজিদ করা হয়নি। অথচ স্কুলের মসজিদের প্রয়োজন নেই। কলেজ ক্যাম্পাসে একটি মসজিদসহ স্কুল সংলগ্ন এলাকায় তিনটি মসজিদ রয়েছে। প্রধান শিক্ষক সরকারি বেতনের বাইরেও স্কুল থেকে বেতন বাবদ ১১ হাজার টাকা, স্কুলের ওয়াইফাই (নেট) ব্যবহার করেও তিনি প্রতিমাসে নেট বিল ১ হাজার, ফোনের জন্যে ৮শ’ এবং যাতায়াত ভাতা ৬ হাজারসহ মাসে ১৮ হাজার ৮শ’ টাকা নিতেন। এছাড়াও বছরে উৎসব ভাতার জন্যে ১০ হাজার টাকা নিতেন। এতো অনিয়ম ও সুযোগ-সুবিধা নেয়ার পরও স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে।

এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সদস্য জামাল হোসেন ও ওমর ফারুক এবং ভূমিদাতা পরিবারের সদস্য নাসিম চৌধুরী ও এলাকার পক্ষে জসিম উদ্দিন জানান, ওনার (প্রধান শিক্ষক) বিরুদ্ধে যতো অভিযোগ উঠেছে, সব সত্য। তিনি একক আধিপত্য বিস্তার করে তার মর্জিমত ম্যানেজিং কমিটি গঠন ও বিদ্যালয় পরিচালনা করেছেন। বিদ্যালয়ের স্বার্থে তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগের তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন এবং তার অপসারণের দাবি জানাই। তারা আরো বলেন, এই এলাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজ রয়েছে। ওনি (প্রধান শিক্ষক জ্যোৎস্না আক্তার) ছাড়া ওইসব প্রতিষ্ঠানের কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই। ওনার বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ কেন? নিশ্চয়ই তিনি অনিয়ম করেছেন বলেই তার বিরুদ্ধে এতো অভিযোগ। তাই তদন্তকালীন সময় ভুক্তভোগীদের উপস্থিতিতে তাদের বক্তব্য নেয়ার অনুরোধ জানান এই সকল অভিযোগকারী।

সকল অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক জ্যোৎস্না আক্তার বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এলাকায় কিছু সংখ্যক লোক রয়েছেন, যারা উদ্দেশ্য প্রণোদিত হয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটাচ্ছেন। এর মধ্যে একটি পক্ষ সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে নিজেদের পছন্দের লোক নিয়োগ দিতে না পেরে এবং অপর পক্ষ গত ৬ আগস্ট বিদ্যালয়ের পুকুর দখলে নিতে না পেরে আমার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছেন। যারা এসব করছেন, তারা কেউই বিদ্যালয়ের অভিভাবক কিংবা শিক্ষার্থী নন। বরং বিদ্যালয়ের বিশৃঙ্খলা ও আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটানোর প্রতিবাদে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা একাধিকবার মানববন্ধন ও আন্দোলন করেছে এবং ইউএনও মহোদয়ের কাছে লিখিত আবেদনও দিয়েছে।

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি তাপস শীল বলেন, তদন্ত চলমান রয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়