প্রকাশ : ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
ম্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে পানির ট্যাংকি মোড় পর্যন্ত
মতলবে এক কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা ॥ যান চলাচল ও জনসাধারণের ভোগান্তি
মতলব পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে অবস্থিত ম্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে পানির ট্যাংকি মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক বেহাল দশা অবস্থায় বিরাজ করছে। এতে সহস্রাধিক ছোট-বড় গর্ত রয়েছে। যান চলাচল ও জনসাধারণের ভোগান্তির শেষ নেই।
জানা যায়, ২০১৭ সালে মতলব পৌরসভার এ সড়কটি সংস্কার করা হয়। এরপর এটি আর সংস্কার হয়নি।
সরজমিনে দেখা যায়, রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে পিচঢালাই উঠে সৃষ্টি হওয়া খানাখন্দে জমে আছে বৃষ্টির পানি। এর মধ্য দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। এ উপজেলায় মতলব পৌরসভার এক কিলোমিটার দীর্ঘ ম্যাক্সিস্ট্যান্ড-পানির ট্যাংকি সড়কের বেশিরভাগ স্থানেই পিচঢালাই উঠে গিয়ে ইট, খোয়া ও বালু বের হয়ে আছে। এসব স্থানে তৈরি হয়েছে সহস্রাধিক ছোট-বড় গর্ত। গর্তে বৃষ্টির পানি ও আবর্জনা জমে থাকায় এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির এ নাজুক অবস্থা থাকলেও এটি সংস্কারে কেউ পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এতে এ সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে বাস ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন।
মতলব পৌরসভার কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৭ সালে মতলব পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ম্যাক্সিস্ট্যান্ড-পানির ট্যাংকি সড়কের সর্বশেষ সংস্কার হয়। পৌরসভাটির উদ্যোগে এক কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সড়কের সংস্কার কাজে ব্যয় হয় প্রায় ২০ লাখ টাকা। স্থানীয় একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি করে। এরপর সেটির আর সংস্কার হয়নি।
গতকাল ২৮ আগস্ট বুধবার সকালে ওই সড়কের টিঅ্যান্ডটি, প্রাণিসম্পদ হাসপাতাল, ছাত্তার মাস্টারের মোড় ও পানির ট্যাংকি এলাকায় দেখা যায়, এসব অংশে সহস্রাধিক ছোট-বড় গর্ত। এসব গর্তে বৃষ্টির পানি ও ময়লা-আবর্জনা জমে তৈরি হয়েছে খানাখন্দের। কিছু অংশ দেবেও গেছে। বিপজ্জনক ওই সড়কেই ঝুঁকি নিয়ে চলছে বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, রিকশা ও ব্যক্তিগত (প্রাইভেট) গাড়িসহ আরও বিভিন্ন যানবাহন। গর্তের পানিতে বেশ কিছু যানবাহনকে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকতে দেখা গেছে। এসব স্থানে পথ চলতে গিয়ে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সড়কটি মেরামতের উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
মতলব পৌরসভার দক্ষিণ কলাদী এলাকার স্কুল শিক্ষক হাবিবুর রহমান মাস্টার বলেন, এক বছর ধরে সড়কটির অবস্থা খারাপ। এখানে ছোট-বড় অনেক গর্ত। বৃষ্টি হলে গর্তে পানি জমে ছোটখাট পুকুরের মতো হয়ে যায়। যানবাহন তো দূরের কথা, হাঁটাচলাই করা যায় না সড়কটিতে। খানাখন্দ থাকায় এ সড়ক দিয়ে রিকশা ও অটোরিকশা চালকেরা আসতে চায় না। এলেও দ্বিগুণ-তিনগুণ ভাড়া রাখে। এর উপর ঝাঁকুনির যন্ত্রণা তো আছেই।
তারা আরও বলেন, সড়কটি দিয়ে যাওয়ার সময় যাত্রীরা দুর্ঘটনায় আহত হচ্ছেন। এটি মেরামতে পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানিয়েও কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা। পৌর কর্তৃপক্ষের গাফলতির কারণে স্থানীয় লোকজন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
টিঅ্যান্ডটি এলাকার নোবেল ও সাইফুল ইসলাম বলেন, ম্যাক্সিস্ট্যান্ড-পানির ট্যাংকি সড়ক দিয়ে উপজেলার দূরগাঁও, বোয়ালিয়া, টিঅ্যান্ডটি, পানির ট্যাংকি, দশপাড়া, ভাঙ্গারপাড়, ধনারপাড়, দক্ষিণ ও মধ্য কলাদী এবং বাইশপুরসহ প্রায় ২০টি এলাকার অর্ধলক্ষাধিক লোক চলাচল করে। এ ছাড়া চাঁদপুর জেলা সদর, বাবুরহাট, ফরিদগঞ্জ, হাইমচর ও হাজীগঞ্জ এলাকার লোকজন এ সড়কপথে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর হয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ফেনী ও নারায়ণগঞ্জে কম সময়ও ঢাকায় চলাচল করেন। সড়কটিতে প্রতিদিন সহস্রাধিক যানবাহন চলাচল করে। অথচ এটি মেরামতের উদ্যোগ নেই।
পানির ট্যাংকি এলাকার অটোরিকশাচালক সামছুল হক বলেন, রাস্তাটি গিয়ে গাড়ি চালালে গর্তের কারণে ঝাঁকুনিতে শরীরে কিছু থাকে না। ছোট-বড় গর্তের কারণে গাড়ি কাত হয়ে এদিক-সেদিক পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দ্রুত চাকা নষ্ট হয়ে যায়। চাকা বেশিদিন টিকে না। প্রতি মাসে রাস্তায় ১০/১৫টি দুর্ঘটনা ঘটে। সড়কটি মেরামতের কি কেউ নাই?
এ ব্যাপারে পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ নিলয় রহমান বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রথম পদক্ষেপ আমার ছিল। কিন্তু রাস্তাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। রাস্তাটি ক্ষুদ্র সংস্কারের চেয়ে মেরামত করা প্রয়োজন।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুহঃ আলিউল হোসেনের সাথে বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।