প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
মহান মুক্তিযুদ্ধের ৮নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার, বিজিএমসি ও চাঁদপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। গতকাল ৫ সেপ্টেম্বর রোববার সকালে আবু ওসমান চৌধুরীর জন্মস্থান ফরিদগঞ্জ উপজেলার চান্দ্রা বাজারে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে আবু ওসমান চৌধুরীর ছবিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান, ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারী, ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাব, বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ চাঁদপুর জেলা ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা শাখা, চান্দ্রা ইমাম আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন। পরে একটি শোক র্যালি চান্দ্রা বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
পরে চান্দ্রা ইমাম আলী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ মিলনায়তনে সেক্টর কমান্ডার ফোরাম মুক্তিযুদ্ধ ’৭১-এর ব্যবস্থাপনায় স্মৃতিচারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সেক্টর কমান্ডার ফোরামের উপজেলা শাখার সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আবুল খায়ের পাটওয়ারীর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সাবেক সিনিয়র সচিব মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা ফরিদগঞ্জবাসী গর্বিত। কারণ, আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের ৮নং সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার লেঃ কর্নেল (অবঃ) আবু ওসমান চৌধুরীর মতো একজন গুণী মানুষের এলাকার অধিবাসী। ১৯৭১ সালে সর্বপ্রথম সেই কুষ্টিয়া থেকে আবু ওসমান চৌধুরীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহ করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সোপান রচনা করেছিলেন। আবার ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বাংলাদেশ সরকারের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে স্বশস্ত্র বাহিনীর পক্ষে নতুন সরকারকে সালাম দেন আবু ওসমান চৌধুরী। তিনি কখনো নীতির প্রশ্নে আপস করেন নি। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষের জন্যে কাজ করে গেছেন। আজ আমরা তাঁর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর দিনে তাঁর স্মরণ সভায় দাঁড়িয়ে শুধু একথা বলতে চাই, একজন আপাদমস্তকে ভালো মানুষের পথ অনুসরণ করতে পারলে আমরা প্রকৃত দেশপ্রেমিক হয়ে উঠতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা বাস্তবায়ন এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে এই বীর সেনানীর অনবদ্য ভূমিকা সবসময় আমাদের প্রেরণা যোগাবে। স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত আবু ওসমান যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যানের পদেও ছিলেন। তিনি শুধু বীর মুক্তিযোদ্ধাই ছিলেন না, যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে আজীবন কাজ করেছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে আবু ওসমান চৌধুরীর বীরত্বপূর্ণ অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন বকাউলের পরিচালনায় অতিথি হিসেবে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান, ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, ভাইস চেয়ারম্যান জিএস তছলিম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শারমিন আক্তার, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সহিদ উল্ল্যা তপাদার, ফরিদগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ বাহার মিয়া, ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামান, জেলা পরিষদ সদস্য মশিউর রহমান মিঠু, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ চাঁদপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক আবু নাছের বাচ্চু পাটোয়ারী, ফরিদগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম শেখ, বালিথুবা পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান পাটওয়ারী, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচ্চু মিয়া, সেক্টর কমান্ডার ফোরামের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান হাবিব নেভী, আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুজ্জামান কাঞ্চন বক্তব্য রাখেন। আলোচনা শেষে মরহুমের রুহের মাগফোরাত কামরা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।