প্রকাশ : ২৬ জুন ২০২১, ০০:০০
মোবাইল হ্যান্ডসেট হারিয়ে গেলে অথবা চুরি হলে অন্য কেউ ওই মোবাইল সেটটি ব্যবহার করতে পারবে না। প্রত্যেক মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবহারকারীকে একটি নির্দিষ্ট কোড দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট ওই কোড ছাড়া মোবাইল সেটটি চালু হবে না।
আগামী ১ জুলাই থেকে পরীক্ষামূলকভাবে এ পদ্ধতিটি চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তরঙ্গ বিভাগ। আগামী তিন মাস পরীক্ষামূলক পরিচালনার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কবে থেকে পদ্ধতিটি গ্রাহক পর্যায়ে চালু হবে।
গত ২৪ জুন বৃহস্পতিবার বিটিআরসি’র তরঙ্গ বিভাগ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র জানায়, আগামী ১ জুলাই থেকে দেশে প্রথমবারের মতো ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সিস্টেম ব্যবহার করে সব অবৈধ ও নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা মোবাইল ফোন শনাক্তের পাশাপাশি সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়ার কাজ শুরু হবে।
বিটিআরসি এনইআইআর পদ্ধতির মাধ্যমে দেশে নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা ও অবৈধ মোবাইল ফোন শনাক্ত করবে। আর চালু থাকা ও বৈধভাবে কেনা সব মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবহারকারীকে একটি নির্দিষ্ট কোড দেওয়া শুরু হবে। মূলত ওই কোডটাই মোবাইল ফোনটির মূল চাবিকাঠি।
বিটিআরসি’র তরঙ্গ বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শহিদুল আলম বলেন, আগামী ১ জুলাই এনইআইআর পদ্ধতি উদ্বোধন করবেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এদিন থেকেই দেশে আর অবৈধভাবে আসা ও নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা মোবাইল ফোন কেউ ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা উপহার পাওয়া মোবাইল সেট নিবন্ধন করে চালু করা যাবে।
তিনি বলেন, ১ জুলাই এর পর অবৈধভাবে আসা ফোনগুলো চিহ্নিত করা হবে। আমরা পরীক্ষামূলক আগামী তিনমাস পদ্ধতিটি নিয়ে কাজ করব। এ সময়ে মোবাইল হ্যান্ডসেটগুলো নিবন্ধনের সময় থাকবে। এসব মোবাইল হ্যান্ডসেট চালু করতে হলে প্রত্যেককে আমাদের পোর্টালে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। পরবর্তীতে এসব মোবাইল বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। এটি পরীক্ষামূলক তিন মাস চলবে। এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শহিদুল আলম বলেন, আমি আবারও বলছি, তিন মাস পর্যন্ত সব কিছু পরীক্ষামূলকভাবে চলবে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে তিন মাস পর। যারা মোবাইল উৎপাদন করছে ও বৈধভাবে আমদানি করছে তারা এমইআই নম্বর বিটিআরসিতে জমা দেয়। সুতরাং বৈধভাবে কেনা বা সংগ্রহ করা কোনো মোবাইল ফোন সেট ব্যবহার নিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা হবে না।
যেভাবে কাজ করবে : ধরুন আপনি নিজে একটা হ্যান্ডসেট কিনে আনলেন বা উপহার পেলেন। এরপর ওই হ্যান্ডসেটে নিবন্ধিত করা সিম প্রবেশ করালে সংশ্লিষ্ট মোবাইল সিমের নেটওয়ার্কে চলে যাবে মোবাইল সেটটি। সিম সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানটি দেখবে মোবাইল হ্যান্ডসেটটি নতুন, পুরাতন বা নিবন্ধিত কি না।
তাদের কাছে সব ডাটাবেজ আছে। যদি তাদের ডাটাবেজের সাথে না মেলে অথবা দেখে যে এটি নতুন মোবাইল তখন বিটিআরসির কাছে তথ্য পাঠাবে। তাদের জানাবে যে, এই সেট টা নতুন এসেছে- আমাদের ডাটাবেজে নাই। বিটিআরসি তখন চেক করে দেখবে মোবাইল সেটটি অন্য কোনো অপারেটরের মধ্যে আছে কি না।
মোবাইল ফোন নিবন্ধনের সময়ে সব কিছুর ডকুমেন্টস চাওয়া হবে। যেমন ধরুন, বিদেশ থেকে উপহার এলে তার যথাযথ প্রমাণ দিতে হবে। আবার কোথাও থেকে কেনা হলে ক্রয় রশিদসহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস চাওয়া হবে। বিদেশ থেকে নিয়ে এলে পাসপোর্টের ইমিগ্রেশনের ডকুমেন্টস চাওয়া হবে। গ্রাহককে মোবাইল কেনার সময়ে চেক করে নিতে বলা হয়েছে।
তিনি জানান, এ পদ্ধতিটি চালু হলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন মোবাইলসেট ব্যবহারকারীরা। এর ফলে মোবাইল হারালে অন্য কেউ হারিয়ে যাওয়া মোবাইলটি ব্যবহার করতে পারবে না।
বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ শহিদুল আলম জানান, জুলাইয়ের আগে গ্রাহকরা যে সমস্ত অননুমোদিত বা অবৈধভাবে আসা হ্যান্ডসেট ব্যবহার শুরু করেছেন তাদের নিবন্ধন কার্যক্রমের অনুমোদনের আওতায় আনা হবে। অর্থাৎ, সচল মোবাইল ফোন বন্ধ করা হবে না। সূত্র : ঢাকা পোস্ট।