বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৩, ০০:০০

পুত্রের নির্যাতন সইতে না পেরে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বৃদ্ধ পিতা-মাতা
স্টাফ রিপোর্টার ॥

অর্থ আত্মসাৎ, সম্পত্তির লোভের কারণে নিজের জন্মদাতা পিতা ও গর্ভধারিণী মাকেও রেহাই দিলো না পাষ- ছেলে। ছেলের নিপীড়ন ও নির্যাতনের কারণে নিজ বসতভিটা ছেড়ে এখন মেয়েদের বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন বৃদ্ধ পিতা-মাতা। হামলার ঘটনায় আহত পিতা মুকবুল আহাম্মদ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ায় মা বাধ্য হয়ে পুত্র ও পুত্রবধূর নামে আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে আসা ছেলের হুমকি ধমকিতে তারা আতঙ্কগ্রস্ত। একপ্রকার পালিয়ে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। সন্তানের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে তার বিচার দাবি করেছেন তারা। ঘটনাটি হাইমচর উপজেলার আলগী দুর্গাপুর এলাকার হলেও বর্তমানে ফরিদগঞ্জে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বৃদ্ধ পিতা-মাতা। ক’মাস পূর্বে ছেলের হাতে অমানবিক নির্যাতনের শিকার হওয়া বৃদ্ধ মুকবুল আহাম্মদ পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসা নেয়ার সময়ে বৃদ্ধ মুকবুল আহাম্মদ (৭০) ও তার স্ত্রী তাহেরা বেগম (৬৩) জানান, তাদের বাড়ি হাইমচর উপজেলার দক্ষিণ আলগী গ্রামে। সকল ছেলে-মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছয় ছেলে মেয়ের মধ্যে অভিযুক্ত ছেলে আতিকুর রহমান সবার বড়। সে গত কয়েক বছর ধরে তাদের ওপর অন্যায়ভাবে অত্যাচার করে আসছে।

তাহেরা বেগম বলেন, আমার স্বামী একজন আবসরপ্রাপ্ত লোক, নিজে চলতে কষ্ট হচ্ছে। জমি ভাগ করে দেয়ার জন্যে এবং মেয়েদের শ্বশুর বাড়ি থেকে ধার নেয়া টাকা ছেলের কাছে ফেরত চাইলেই নির্যাতন শুরু হয় আমাদের উপর। গত কয়েক বছর ধরে আমরা তার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার। সর্বশেষ গত ২৫ জুন আমি এবং আমার স্বামী মুকবুল আহমদ ছেলে আতিকুর রহমানের কাছে মেয়েদের পাওনা টাকা চাইলে ছেলে আতিক ও তার স্ত্রী আমাদের উপর হামলা করে। পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে আমার স্বামীকে। স্থানীয় লোকজন আমাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

ছেলের অপকর্মের কারণে আর কোনো গত্যান্তর না হওয়ায় মা তাহেরা বেগম বাদী হয়ে চাঁদপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা (সিআর ১১০/২০২৩) দায়ের করেন। পিতাকে নির্যাতনের কারণে বিজ্ঞ আদালত ছেলে আতিকুর রহমানকে জেলে পাঠায় । পরবর্তীতে ছেলে জামিনে বেরিয়ে আসে।

তাহেরা বেগম জানান, জামিনে বেরিয়ে আসার পর থেকে ছেলে আতিকুর রহমান আরো বেপরোয়া আচরণ শুরু করেছে। আমাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। তার হুমকি-ধমকিতে ভীত হয়ে আমরা বর্তমানে আমাদের মেয়েদের বাড়িতে থাকছি। গত বৃহস্পতিবার পূর্বের হামলার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে আমার স্বামীকে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করাই।

মুকবুল আহাম্মদ জানান, পিতা হয়ে সন্তানের অত্যাচারে অতিষ্ঠ আমি ও আমার স্ত্রী। বর্তমানে আমরা আতঙ্কগ্রস্ত। বাধ্য হয়ে মেয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। এই কুপুত্রের বিচার চাই।

এ ব্যাপারে আতিকুর রহমানের মুঠোফোনে বেশ ক’বার কল দিলেও তার মুঠোফোনটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়