রবিবার, ০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ১৭ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৩, ০০:০০

সর্বোচ্চ সতর্কতায় চাঁদপুরের প্রশাসন
মিজানুর রহমান ॥

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। জেলা সদরের লঞ্চঘাট থেকে শুক্রবার (১২ মে) রাত সোয়া ১০টায় ঢাকা-চাঁদপুর, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা চাঁদপুর ভায়া শরীয়তপুর, মজু চৌধুরীর হাট (লক্ষ্মীপুর), ইলিশা ঘাট (ভোলা) নৌপথের সব ধরনের লঞ্চ ও সি-ট্রাক চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশ বলবৎ থাকবে।

ঘূর্ণিঝড় মোখার মোকাবেলায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা হয়েছে। বর্তমানে উপকূলীয় জেলা চাঁদপুর ৮নং মহাবিপদ সংকেতের আওতায় রয়েছে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানানো হয়। ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবেলায় আগাম প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। জেলা প্রশাসক কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ ব্যাপারে মতলব দক্ষিণ ও মতলব উত্তর, হাইমচর এবং চাঁদপুর সদরসহ এই চারটি উপকূলীয় উপজেলায় ইউএনওদের আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় বাসিন্দাদের আশ্রয় কেন্দ্রে আনতে নৌকা, ট্রলার প্রস্তুত রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মাছ ধরার নৌকা এবং ট্রলারগুলো নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার জন্যে তীরে ফিরে আসছে। মাঠের আধাপাকা ধান কেটে ফেলছে কৃষক।

এছাড়া মাইকিং করে মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকা ও চরাঞ্চলবাসীকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেয়ার নির্দেশ দেয়া হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্র ছাড়াও স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও মসজিদগুলো আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

দুর্যোগপূর্ণ সময়ে নদী উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র। একই সাথে নগদ অর্থ ও শুকনো খাবার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

শুক্রবার (১২ মে) এসব তথ্য জানিয়েছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান। তিনি বলেন, জেলার ৮ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একই সাথে বৃহস্পতিবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা হয়েছে।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেন ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গৃহীত পদক্ষেপ সমূহের তথ্য গণমাধ্যমকে প্রেরণ করেছেন। প্রাপ্ত তথ্যে উল্লেখ করা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবেলায় জেলা ও উপজেলা কার্যালয় সমূহে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। জেলার নিয়ন্ত্রণ কক্ষের নম্বরগুলো হচ্ছে : ০১৭০০৭১৬৭০১, টেলিফোন নম্বর : ০২৩৩৪৪৮৭৫৯৬ অথবা ০২৩৩৪৪৮৭৪৭২, ই-মেইল: [email protected] কৃষি বিভাগকে বতর্মান মৌসুমে উৎপাদিত ফসল কাটা, স্বাস্থ্য বিভাগকে জরুরি মেডিকেল টিম গঠন এবং ওষুধ মওজুদ রাখা, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগকে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা, জেলা পুলিশ, কোস্টগার্ড, আনসারকে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ে সার্বিক দিক-নির্দেশনা, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগকে দুর্যোগ পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উদ্ধার কাজে প্রস্তুত থাকা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেডক্রিসেন্ট, জেলা স্কাউট, জেলা রোভার স্কাউট, বিএনসিসিসহ এনজিও প্রতিষ্ঠানসমূহকে দল প্রস্তুত রাখা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাইকিং করে সতকর্তামূলক প্রচারণার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও মজুদ রাখা হয়েছে ত্রাণ সামগ্রী। এর মধ্যে রয়েছে নগদ ১৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা, চাল ৫০৫.০০০ মেট্রিক টন, ঢেউটিন ও গৃহ নির্মাণ মঞ্জুরী ১০ বান্ডিল, শুকনো খাবার ১৯০ প্যাকেট এবং শীতবস্ত্র (কম্বল) ৩৮৪০ পিস।

চাঁদপুর জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ শাখার সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা সদরে ২৯টি, ফরিদগঞ্জে ৩১টি, হাইমচরে ২৪টি, হাজীগঞ্জে ৪৪টি, কচুয়ায় ৫১টি, মতলব উত্তরে ৬২টি, মতলব দক্ষিণে ৮৮টি, শাহরাস্তিতে ২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে ১লাখ ১৪ হাজার ৫৬৭জন থাকার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে।

এদিকে চাঁদপুরের পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া নদী উপকূলীয় এলাকায় সচেতনতামূলক মাইকিং অব্যাহত রেখেছে চাঁদপুর কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশ । একই সাথে শহর ও আশপাশে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ সম্পর্কে সর্বসাধারণকে সতর্ক থাকার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স চাঁদপুর ও রেডক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবীরা।

নৌ-পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ পূর্ব এবং পরবর্তী সময়ের সতর্কতা বিষয়ে আমাদের নৌ অঞ্চলে মাইকিং করে প্রচারণা চলছে। চাঁদপুর, শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লা জেলার যেসব থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে সবাইকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছি এবং করবো। বিশেষ করে লঞ্চঘাট ও ছোট নৌযানগুলো নিরাপদে রাখার জন্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়