বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

অস্তিত্ব হারাচ্ছে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন
মির্জা জাকির ॥

চাঁদপুর শহর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে পদ্মা ও মেঘনা নদীর বুকে জেগে ওঠা পুরানো চর এলাকা রাজরাজেশ্বর। চাঁদপুর সদরের সবচেয়ে বেশি জনঅধ্যুষিত বিশাল চর এলাকা এটি। এই ইউনিয়নের ভোটাররা বিভিন্ন সময় নানা নির্বাচনে ট্রামকার্ড হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। বিভিন্ন ফসল উৎপাদন, মাছ শিকার ও গবাদি পশুপালনের পাশাপাশি দুগ্ধজাত পশু খামার সমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে পরিচিত রাজরাজেশ্বর। এখানকার বিভিন্ন খামারীর দুধের একটি বিরাট অংশ চাঁদপুর ও পাশের শরীয়তপুরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বাজারে সরবরাহ হয়ে আসছে। অথচ চাঁদপুরের গুরুত্বপূর্ণ ও সম্ভাবনাময় এলাকাটির বেশিরভাগ গত দুই বছরে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮টি নদীগর্ভে চলে গেছে। বাকি রয়েছে একটি ওয়ার্ড। তাও যে কোনো সময় বিলীন হয়ে চাঁদপুরর মানচিত্র থেকে একদিন হারিয়ে যাবে।

প্রায় ১৫ হাজার ভোটারসহ প্রায় ২৫ হাজার মানুষের বসবাস এই ইউনিয়নে। এক সময় ছিলো একাধিক বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ইউনিয়ন পরিষদ, কালভার্ট, ব্রিজ, মসজিদণ্ডমাদ্রাসাসহ বহু বসতবাড়ি। বেশ কয়েকবার নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়েছে ইউনিয়নবাসী। গেল বছর শিলারচর নামক চরটিতে একশ’ পরিবারের জন্যে সরকারিভাবে নির্মিত আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো এখন আর নেই। নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে সেইসব নির্মিত ঘর। সেখানে ২টি ছাউনি খালি পড়ে আছে এখন। পদ্মা ও মেঘনার বুকে ভেসে ওঠা চরটিতে তিল তিল করে বসবাসের যোগ্য করে গড়ে তোলেন যেসব স্থাপনা সেইসব কয়েক বছর যাবৎ বিলীন হয়ে গেছে। আশ্রয়হীন হয়ে গেছে ওই চরের হাজারো পরিবার। তাদের বসতভিটাসহ বাপ-দাদার করব পর্যন্ত ভেসে গেছে পদ্মার গর্ভে।

বর্তমানে কোনো রকমে নদী ভাঙ্গনের শিকার হওয়া রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের ১ থেকে ৮নং ওয়ার্ডবাসী প্রকৃতির ভাঙনের সাথে মোকাবেলা করে জীবন যুদ্ধে বেঁচে আছেন। চরাঞ্চলে ভালোভাবে কৃষি জমি তৈরি করতে না পারায় নদীই একমাত্র ভরসা তাদের। নদীতে মাছ শিকার করে কোনোভাবে বেঁচে আছে তারা। এদিকে ওই ইউনিয়নের সীমানায় নতুন করে জেগে ওঠা চরটির এখন পর্যন্ত ওয়ার্ড নির্ধারণ না হওয়ায় মেম্বাররাও কিছু করতে পারছে না চরাঞ্চলবাসীর জন্য। এই নতুন চরে বসবাসরত চরাঞ্চলবাসীর মন থেকে এখন পর্যন্ত আতঙ্ক কাটেনি। কেননা ইতোপূর্বে পদ্মা ও মেঘনা নদীতে অপরিকল্পিতভাবে ড্রেজিং করে বালু উত্তোলনের কারণে তারা এখনো আতঙ্কে রয়েছেন নতুন চরটি কখন হারিয়ে যায়।

এ বিষয়ে রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের পাটওয়ারী বাজার এলাকার মোঃ হারুন পাটওয়ারী বলেন, বর্তমানে বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে ঠিক, কিন্তু ইতোপূর্বে আমাদের ভিটামাটি, কৃষি জমি বিলীন হয়ে গেছে। আবুল হাসেম চোকদার বলেন, ১২ থেকে ১৩ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছি। আমরা এখন নিরূপায়।

এ বিষয়ে রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী হযরত আলী বেপারী জানান, ইউনিয়নটি কয়েক বছর ধরে পদ্মা-মেঘনা গিলে খাচ্ছে। বিষয়টি বহুবার উপজেলা পরিষদের মাসিক সভা ও স্থানীয় প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৮টিই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় পাশর্র্^বর্তী পদ্মার বুকে ভেসে উঠা চরে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নিয়েছে মানুষজন। অনেক সম্ভাবনার এলাকা হিসেবে দাবি করে রাজরাজেশ্বরকে নদী ভাঙন থেকে রক্ষায় এগিয়ে আসার দাবি জানিয়েছেন এই চেয়ারম্যান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়