বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫  |   ২০ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

মতলবের খর্গপুরে জোরর্পূবক জায়গা দখল চেষ্টার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি ॥

মতলব দক্ষিণে নিজ মালিকানাধীন জায়গা জোরর্পূবক দখলে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ ও মামলা দিয়ে হয়রানিরও অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী পরিবার। এ ঘটনায় বর্তমানে দু পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যে কোনো সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। এ-সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উল্টো প্রতিপক্ষ মনির হোসেন বাদী হয়ে চাঁদপুর আদালতে ভুক্তভোগী নজরুল ইসলাম গংয়ের বিরুদ্ধে হুমকি-ধমকি ও নিষেধাজ্ঞা মামলা দায়ের করেন।

জানা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলার ২নং নায়েরগাঁও দক্ষিণ ইউনিয়নের ১১৬নং খর্গপুর মৌজায় ৫০৭নং বিএস খতিয়ানভুক্ত এবং ৭৭৫নং হাল দাগে মোট ৬০ শতাংশ জমির ওয়ারিশসূত্রে মালিক হন নুর মিয়া, রহিম বকস্, শাহআলম, খোরশেদ আলম, সিরাজ মিয়া, বজলুর রহমান ও মানিক মিয়া গং। ওয়ারিশসূত্রে মালিক হওয়ার পর মোঃ শাহআলম ও খোরশেদ আলম ২০০৬ সালের ২০ আগস্ট ১৫ শতাংশ জমি সাবকবলা দলিলমূলে খর্গপুর এলাকার মোঃ নজরুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেন। যার দলিল নং : ২৬৭৭। ২০১০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি একই মৌজায় ও একই দাগ খতিয়ানে ওয়ারিশসূত্রে মালিক হয়ে ১০ শতাংশ জমি সাবকবলা দলিল মূলে মোঃ নজরুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেন অন্য ওয়ারিশ সিরাজ, ইলিয়াছ ও মাকসুদা। যার দলিল নং : ৩৪৪।

অপরদিকে একই দাগ খতিয়ানে ওয়ারিশসূত্রে মালিক হয়ে ২০০২ সালে ৫ শতাংশ জমি সাবকবলা দলিলমূলে একই এলাকার মোঃ নাছির উদ্দিনের নিকট বিক্রি করেন মোঃ মানিক মিয়া। এরপর ২০২১ সালের ২৩ মার্চ ভায়া দলিলমূলে উক্ত জমি খর্গপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে মোঃ দুলাল ও সাইফুল ইসলামের নিকট বিক্রি করেন নাছির উদ্দিন। যার দলিল নং : ১৩১৭। প্রত্যেক দলিলের চৌহুদ্দি উত্তরে-অলি উল্লা, দক্ষিণে-সরকারি রাস্তা, পূর্বে-গ্রহীতা নিজ এবং পশ্চিমে-লনী মিয়া দেখানো হয়।

এরই মধ্যে উক্ত দাগের বাকি জমির ১৫ শতাংশ রহিম বকস্ তার ছেলে মোঃ মনির হোসেনকে হেবা ঘোষণা দলিলমূলে দান করেন ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর। যার চৌহুদ্দিতে উত্তরে দাতার বাকি অংশ, দক্ষিণে সরকারি রাস্তা, পূর্বে মোঃ মমিন এবং পশ্চিমে মোঃ নজরুল দেখানো হয়।

উক্ত দাগের অপর ওয়ারিশ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মজিবুর রহমান, মোঃ নাছির উদ্দিন, ফয়েজ আহম্মেদ, নার্গিস আক্তার ও জীবনা বেগম ১৫ শতাংশ জমি সাবকবলা দলিল করে ২০০৬ সালের ২০ এপ্রিল বিক্রি করেন রাশিদা বেগমের কাছে। যার চৌহুদ্দি উত্তরে অলি উল্লা, দক্ষিণে রাস্তা, পূর্বে রহিম বকস্ গং এবং পশ্চিমে লনী মিয়া গং দেখানো হয়। রাশিদা বেগম উক্ত সম্পত্তি ২০২২ সালের ১০ মে পুনরায় দানপত্র দলিল করে খর্গপুর গ্রামের আনোয়ার মিয়াজীকে দেন। এরপর থেকেই বাঁধে যতো ঝামেলা। আনোয়ার মিয়াজী উক্ত জমির চৌহুদ্দি দেন উত্তরে অলি উল্লা গং, দক্ষিণে সরকারি রাস্তা, পূর্বে মোঃ দুলাল গং এবং পশ্চিমে দুলাল ও রবিন। এ নিয়েই সৃষ্টি হয় সব জটিলতা। এরপর থেকেই উক্ত জমি দখলের চেষ্টা চালায় আনোয়ার মিয়াজী ও তার ভাই মনির হোসেন গং।

এদিকে নজরুল ইসলামের ভাগিনা আব্দুল মালেক (মালু) জানান, আমার মামার দখলীয় জায়গায় গত প্রায় ৩ মাস পূর্বে মাটি ভরাট করতে গেলে প্রতিপক্ষ মনির হোসেন গং বাধা প্রদান করে মতলব দক্ষিণ থানায় গিয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে মতলব দক্ষিণ থানায় স্থানীয় সালিসগণের উপস্থিতিতে সালিসি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মনির হোসেন গং সময় চেয়ে বৈঠক থেকে চলে আসেন। পরবর্তীতে দুই পক্ষের সমন্বয়ে আবারও চাঁদপুর কোর্টে দুজন বিজ্ঞ আইনজীবী নিয়ে পুনরায় সমোঝতা বৈঠক হয়। সেখানেও মনির হোসেন গং সময় চেয়ে ওই বৈঠক থেকে চলে আসেন। সর্বশেষ নিজ এলাকায় স্থানীয় সালিসিদের নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। একই ধারায় সেখান থেকেও সময় নিয়ে পরবর্তীতে চাঁদপুর বিজ্ঞ আদালতে গিয়ে মনির হোসেন বাদী হয়ে একটি নিষেধাজ্ঞা মামলা দায়ের করেন। যার মোকাদ্দমা নং ৮১৩। বর্তমানে মনির হোসেন চাঁদপুর আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় ভুক্তভোগী পরিবারের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানান মালেক।

সরেজমিনে গেলে এলাকাবাসী জানান, যে জায়গাটি নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে, সেই জায়গাটি সঠিক নিয়মে দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগদখল করে আসছেন নজরুল ইসলাম গং। কিন্তু মনির হোসেন গং একই দাগ-খতিয়ানের অবশিষ্ট অংশের জায়গা সর্বশেষ দলিলে ক্রয় করার পর চৌহুদ্দি জটিলতা তৈরি করে জোরপূর্বক জায়গা দখলের চেষ্টা করছেন। এই বিষয় নিয়ে একাধিক সালিসি বৈঠক হয়েছে। কিন্তু মনির হোসেন গং তা প্রত্যাখ্যান করে আদালতে গিয়ে শুধু শুধু একটি মামলা দায়ের করে প্রতিপক্ষকে হয়রানি করছে।

এ বিষয়ে নজরুল ইসলামের স্ত্রী মরিয়ম বেগম জানান, যে জায়গাটি নিয়ে ঝামেলা সেই জায়গাটি মূলত আমার স্বামীর পৈত্রিক সম্পত্তি। আমার স্বামী যাদের কাছ থেকে দলিলমূলে মালিক হয়েছে তারাও আমার স্বামীর ওয়ারিশ। কিন্তু মনির হোসেন গং একই দাগ-খতিয়ানে অন্য ওয়ারিশের কাছ থেকে তাদের অংশ ক্রয় করে চৌহুদ্দি জটিলতা তৈরি করে এখন আমাদেরকে হয়রানি করছে। তিনি আরও জানান, উক্ত বিরোধীয় জায়গা দখল-বেদখল করা নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট আদালত ও প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন মরিয়ম বেগম।

প্রতিপক্ষ মনির হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, এ বিষয়ে আমি আদালতে মামলা করেছি। আদালত যা রায় দিবে আমি তা মেনে নিবো।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়