প্রকাশ : ২১ জুন ২০২২, ০০:০০
পুরুষ মানুষ কাঁদে না। ক্ষুধার যন্ত্রণায় কাতর হয়ে না খেয়ে থাকলেও নিজের জন্যে হাত পাতে না। জীবনের পথচলায় পুরুষের সকল সংগ্রামই পরিবারকে ঘিরে। ক্যান্সারে আক্রান্ত ফুটফুটে রবিউলের বাবার কথা। ক্যান্সারে আক্রান্ত রবিউলের বাবা রুহুল আমীনের এখন স্বপ্ন একটাই : দুরন্ত রবিউল আবার ছুটবে পথে প্রান্তরে। তবে তার জন্যে যে তার চিকিৎসা করাতে হবে আর সেজন্যে প্রয়োজন মোটা অঙ্কের টাকা। যা জোগাড় করা অটো চালক বাবা রুহুল আমীনের পক্ষে কখনোই সম্ভব নয়। ছেলের অসুস্থতার পর চিকিৎসা সহায়তার জন্যে সমাজসেবা অফিসে আবেদন করার পর বার বার উপজেলা সমাজসেবা অফিসে ঘোরাঘুরি করে পাননি কোনো সহায়তা বরং লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন সমাজসেবা অফিসের কর্মকর্তার দ্বারা। কোনো উপায় না পেয়ে অগত্যা সন্তানের চিকিৎসা করানোর জন্যে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাবা রুহুল আমীন।
রবিউল ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে ঢাকার মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতালের ডাক্তারকে দেখানোর পর ডাক্তার জানান, ক্যান্সারের কেমো দেয়ার জন্যে প্রতিমাসে খরচ হবে ৩৫ হাজার টাকা। সন্তান অসুস্থ হওয়ার পর নিজের যা পুঁজি ছিলো তা দিয়ে স্থানীয়দের এবং কয়েকটি সংগঠনের সহযোগিতায় ৩৫ হাজার টাকা করে ৩ মাস চিকিৎসা খরচ চালানোর পরও অসহায় হয়ে ফুটবল একাডেমির দ্বারস্থ হলে ফুটবল একাডেমির পরিচালক আসিফুর রহমান ছোটন ক্লাবের অন্যান্য পরিচালকসহ আরো এক মাসের চিকিৎসার অর্থ জুগিয়েছেন। তবে শঙ্কার কথা হলো, ফুটবল একাডেমির একমাস চিকিৎসা খরচ দেয়ার পরও এখনো যে ৮ মাস করতে হবে অসুস্থ রবিউলের চিকিৎসা, যার জন্যে দরকার তিন লক্ষাধিক টাকা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই বাজারে বাবা রুহুল আমিন অটো চালিয়ে যেখানে নুন আনতে পানতা ফুরায় সেখানে কীভাবে জোগান দিবেন এত টাকা, কোথায় পাবেন এত টাকা..? সে চিন্তা রাতের ঘুমটুকুও কেড়ে নিয়েছে রবিউলের বাবার। সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সমাজের বিত্তবান ও সামাজিক সংগঠনগুলো যাতে এগিয়ে আসে রবিউলের পাশে -এটা যেন এখন সময়ের দাবি মাত্র।
এ বিষয়ে রবিউলের বাবা রুহুল আমিন চাঁদপুর কণ্ঠের এই প্রতিনিধিকে জানান, আমার রবিউল আমার দুই চোখের সামনে ভালা ওই অন্য পোলাপানের মত চলুক আমি তা দেখতে চাই। পোলাডার অসুখ হওয়ার পর কত মাইনষের ধারে গেছি, আশেপাশের মাইনষে অনেক সহযোগিতা কইচ্ছে, সব টিয়া এক সাথে করি এই পইর্যন্ত ৩ মাস হোলারে চিকিৎসা করাইছি, আইজ আবার ফুটবলে একাডেমির ভাইয়েরা আরো এক মাসের চিকিৎসার খরচ দিলো (কান্নায় ভেঙে পড়ে), কিন্তু রবিউলে ভালো হওনের লাই তো এহনো লাখ লাখ টাকা লাগবো। বড়লোক আর ফুটবল একাডেমির মত সবাই যদি সাহায্য-সহযোগিতা কইত্তো, তাইলে আঁর পোলাডায় সুস্থ হই যাইতো।
গত ১৬ জুন (বৃহস্পতিবার) রবিউলের বাবার হাতে এক মাসের চিকিৎসা সহায়তার অর্থ তুলে দেওয়ার পর ফরিদগঞ্জ ফুটবল একাডেমির সাধারণ সম্পাদক আসিফুর রহমান ছোটন এ প্রতিনিধিকে জানান, অটোচালক রুহুল আমিনের ছেলের মেরুদণ্ডের হাড়ে ক্যান্সার ধরা পড়েছে। ছেলের চিকিৎসা খরচ চালানোর মতো তার সামর্থ্য না থাকায় তিনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন এবং আমরা ফুটবল একাডেমির পরিচালকগণ মিলে এক মাসের চিকিৎসা খরচের ব্যবস্থা করেছি। সমাজে অনেক বিত্তবান আছেন দান-অনুদান দেয়ার মতো, অনেক দানবীর ব্যক্তি আছেন। আমি তাদের প্রতি অনুরোধ করি, অসহায় ছেলেটির চিকিৎসার জন্য মানবিক দিক বিবেচনা করে বাকি আট মাসের অর্থ সহায়তায় এগিয়ে আসলে একজন অসহায় বাবার স্বপ্ন বাঁচবে, উপকৃত হবে রবিউল।
সমাজের কোনো বিত্তবান কিংবা কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে রবিউলের চিকিৎসা সহায়তা করতে চাইলে রবিউলের বাবা রুহুল আমীনের (০১৭৮১৭২৭৯৪৪) নাম্বারে যোগাযোগ করে চিকিৎসা সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারেন।