বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০

পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চান এইচএসসিতে ভালো ফলাফল অর্জনকারী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পলাশ
স্টাফ রিপোর্টার ॥

পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের ব্যবসায় শিক্ষা শাখা থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হয়েছেন পলাশ দে (২০)। তিনি একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। চোখে তেমন একটা দেখতে না পেলেও সে মনের জোরে অদম্যভাবে নিজের পড়ালেখা চালিয়ে গেছেন তার বড় ভাই শিমুল সাহার অনুপ্রেরণায়। কলেজ শিক্ষকদের সহযোগিতায় তিনি পরীক্ষা কক্ষে শ্রুতি পরীক্ষার্থীকে সাথে নিয়ে দিয়েছেন এইচএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষে তার আত্মবিশ^াস ছিলো ভালো ফলাফল অর্জন করবেন। সদ্য প্রকাশিত ফলাফলে তার বিশ^াসের প্রতিফলন ঘটায় তিনি শিক্ষক-অভিভাবকসহ সকলের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, পলাশ দের বাড়ি ছিলো পুরাণবাজারের হরিসভা এলাকায়। ক’বছর আগে মেঘনা নদী গ্রাস করে নেয় পলাশ দের বসতভিটাটুকু। তার বাবা শ্যামল দে ছেলের পড়ালেখার এমন ইচ্ছা দেখে ঘোষপাড়ায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছেন। সেখানে স্ত্রী ও ২ ছেলেকে নিয়ে বাস করছেন। তিনি পেশায় একজন বুট-বাদাম বিক্রেতা। তার আয়ের টাকাতেই কোনোমতে সংসারসহ পলাশ দের পড়ালেখার খরচ চলছে।

উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে তার পড়ালেখার প্রতি বেশ আগ্রহ রয়েছে। সমাজের বিত্তবানরা আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এলে পলাশ দে তার দৃষ্টি ফিরে পাওয়াসহ উচ্চ শিক্ষিত হয়ে দেশসেবায় ভূমিকা রাখতে পারবে বলে সে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পলাশ দে বলেন, আমি জন্মগতভাবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। আগে এক চোখে সামান্য কিছু দেখলেও এখন দেখতে দারুণ সমস্যা অনুভব করছি। শিক্ষিত হয়ে দেশের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার আমার ইচ্ছে রয়েছে। আমার পড়ালেখা এগিয়ে নিতে হলে চোখের আলো ফিরে পাওয়া দরকার। আমার চিকিৎসা করাটা একান্ত জরুরি। সে তার চিকিৎসার জন্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি মহোদয়সহ সমাজের বিত্তবানদের থেকে আর্থিক সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করেন।

পলাশ দে’র পিতা শ্যামল দে বলেন, আমার ছেলের চিকিৎসার জন্যে গত কয়েক বছর ধরে দেশের বহু হাসপাতালে দেখিয়েছি। সর্বশেষে চট্টগ্রাম পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে দেখানোর পরে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন আমার ছেলের চোখের সঠিক চিকিৎসা ভারতের কোলকাতা অথবা চেন্নাইয়ে সম্ভব। কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে আমরা তার চিকিৎসা করাতে পারছি না।

এ বিষয়ে পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার বলেন, পলাশ দে আমার কলেজের শিক্ষার্থী। ওর পড়ালেখার অদম্য ইচ্ছে হওয়ায় বোর্ডে আমি নিজে গিয়ে আইন অনুযায়ী পলাশের জন্য শ্রুতি পরীক্ষার্থীর ব্যবস্থা করেছি। ওর উচ্চশিক্ষা অর্জনে আমি ব্যক্তিগতভাবে ওর পাশে থাকবো। তিনি সমাজের বিত্তবানদের মানবিক দিক বিবেচনা করে পলাশ দের সুচিকিৎসাসহ তার লেখা পড়ার সহায়তা করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়