প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২১, ০০:০০
গত ক’দিনে গুজব আতঙ্ক আর অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় হাজীগঞ্জে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ভোর থেকে উপজেলা প্রশাসনের জারিকৃত আদেশটি প্রত্যাহার করে নেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। বুধবার রাতের ঘটনায় প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নতুন করে সংঘাত এড়াতে এবং উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ১৪৪ ধারা জারি করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
এদিকে জেলা প্রশাসকের গঠিত কমিটি ও পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের গঠিত পৃথক তদন্ত কমিটির সংশ্লিষ্টরা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী, সাক্ষীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে কথা বলেছেন ও বলছেন। কমিটি সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করাসহ সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে লিখিত ও মৌখিক তথ্য সংগ্রহ করছেন বলে জানা গেছে।
জেলা প্রশাসনের গঠিত ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন সরোয়ারকে প্রধান করা হয়েছে। এ কমিটির অন্যরা হলেন : হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজীগঞ্জ ও ফরিদগঞ্জ সার্কেল), উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হাজীগঞ্জ ও জেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ডিডি (উপ-পরিচালক)। এই কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
পুলিশের তদন্ত কমিটির ৩ সদস্যের প্রধান হলেন : চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি (প্রশাসন ও অর্থ) মোঃ ইকবাল হোসেন। এ কমিটির অন্যরা হলেন : পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন চাঁদপুরের পুলিশ সুপার খন্দকার নূর রেজওয়ানা পারভিন ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) সুদীপ্ত রায়। এই কমিটিও ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট প্রদান করবে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার কুমিল্লায় কোরআন আবমানার জেরে একই দিন রাত আনুমানিক আটটার দিকে হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ সড়কের দিক থেকে হাজীগঞ্জ বাজারের দিকে একটি মিছিল আসে। মিছিলটি বাজার প্রদক্ষিণ করে পশ্চিম বাজারস্থ শ্রীশ্রী রাজা লক্ষ্মী নারায়ণ জিউর আখড়ায় অবস্থিত পূজাম-পের সামনে আসলে মিছিল থেকে কে বা কারা পূজাম-পের গেইটের দিকে ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। এতে ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশ মিছিলকারীদের প্রতিরোধের চেষ্টা করলে পুলিশের উপর ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। এর পরে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে গুলি ছুড়লে চারজন নিহত ও অপর ৪ জন আহত হয়। এছাড়াও মিছিলকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে ১৭জন পুলিশসহ পথচারী আহত হয়েছে। সেদিন রাত থেকে পুরো হাজীগঞ্জে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। ১৪৪ ধারা চলাকালে ২জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বিজিবি, র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের টহলসহ বিভিন্ন পূজা ম-পে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।