প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে স্বামী পরিত্যক্তা এক নারীকে স্বর্ণের চেইন চুরির অপবাদ দিয়ে বেধড়ক পিটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর চাঁদপুরের পুলিশ সুপারের নির্দেশে মোফাচ্ছের ও ইয়াছিন নামে দুই সহোদরকে আটক করেছে পুলিশ।
২৬ সেপ্টেম্বর রোববার রাতে তাদেরকে উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামের আমিন উদ্দিন বেপারী বাড়ি থেকে আটকের পর ২৭ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে চাঁদপুর আদালতে পাঠায় পুলিশ। এ ব্যাপারে রোববার ২৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে ফরিদগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগী পরিবার।
বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন হামলার শিকার তাসলিমা বেগম নামে ঐ নারী। ঘটনাটি গত ২৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের রুস্তমপুর গ্রামের আমিন উদ্দিন বেপারী বাড়িতে ঘটে।
জানা যায়, প্রায় ৪ মাস পূর্বে রুস্তমপুর গ্রামের আমিন উদ্দিন বেপারী বাড়ির কাউসার আলমের নব-বিবাহিতা স্ত্রী মুক্তা বেগমের গলার স্বর্ণের চেইন হারিয়ে যায়। সপ্তাহ খানেক পর হারিয়ে যাওয়া চেইনটি কাউছারের বসত ঘরের পাশ থেকে খুঁজে পাওয়া যায়। এই চেইনটি হারিয়ে যাওয়াকে চুরি হিসেবে চিহ্নিত করে একই বাড়ির স্বামী পরিত্যক্তা অসহায় তাসলিমা বেগমকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছিল অভিযুক্ত কাউছার ও তার পরিবারের সদস্যরা।
ওই ঘটনার জের ধরেই ২৪ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সকালে কাউসার আলমের ছোট দুই ভাই মোফাচ্ছের, ইয়াসিন ও তাদের মা শামছুন্নাহারের সহায়তায় তাসলিমাকে তার বসতঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে প্রকাশ্যে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।
ঘটনার শিকার তাসলিমা বেগম জানান, বিনা কারণেই ঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে বের করে বাড়ির উঠোনে তার ওপর হামলা চালানো হয়। তিনি চুরির কোনো ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
তাসলিমা বেগমের বড় বোন আমেনা বেগম জানান, চেইন চুরির মিথ্যা অভিযোগ তুলে কাউসার আলমের ছোট দুই ভাই ইয়াসিন ও মোফাচ্ছের এবং তাদের মা শামছুন্নাহার এমন পৈচাশিক নির্যাতন চালান তাসলিমার ওপর।
এদিকে ঘটনার ব্যাপারে কাউসার আলম জানান, তার মায়ের ওপর হামলার ঘটনায় তার ছোট দুই ভাই তাসলিমাকে মারধর করেছে। কাউসার আলমের স্ত্রী মুক্তা বেগম জানান, তার গলার স্বর্ণের চেইনটি হারিয়ে যায়, পরে চেইনটি খুঁজে পেয়েছেন।
২৬ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে নির্যাতনের ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ। এ জন্যে ফরিদগঞ্জ থানাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
ফরিদগঞ্জ থানার পুলিশ পরির্দশক (তদন্ত) মোঃ বাহার মিয়া জানান, এ ঘটনায় ফরিদগঞ্জ থানায় রোববার একটি মামলা দায়ের হয়েছে। ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত মোফাচ্ছের ও ইয়াছিন নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের বিষয়ে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।