প্রকাশ : ৩১ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
বন্যায় বিস্তীর্ণ এলাকার পুকুরের মাছ উন্মুক্ত জলাশয়ে
ভেসাল জাল ব্যবসায়ীদের পোয়াবারো
বন্যার পানিতে এলাকা ডুবে যাবার কারণে সকল ধরনের পুকুরের মাছ উন্মুক্ত জলাশয় তথা নদী বিলে কিংবা খালে বেরিয়ে পড়েছে। সেই সব জলাশয়ে নিষিদ্ধ ভেসাল জাল দিয়ে মাছ নিধন করা হচ্ছে। এই নিধন থেকে কোনো দেশীয় মাছ রক্ষা পাচ্ছে না। উন্মুক্ত জলাশযের মাছ ধরতে বড় বাণিজ্যে নেমেছে ভেসাল জাল ব্যবসায়ীরা। তারা এখন বিভিন্ন খাল-বিলের পানি প্রবাহের স্থানগুলো দখলে নিয়ে মাছ শিকারসহ স্থান দখলে মেতে উঠেছে। এদিকে গ্রাম-গঞ্জের সকল জলাশয় থেকে নিষিদ্ধ ভেজাল জাল দ্রত অপসারণ না করলে উন্মুক্ত জলাশয়ের সকল মাছ ধরে মুষ্টিমেয় কয়েকজন সুবিধা লুটে নিচ্ছেন বলে জানাচ্ছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে ও সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ডাকাতিয়া নদীর বিভিন্ন এলাকাসহ উপজেলার মূল বড় খালগুলো ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের খালগুলোতে প্রচুর ভেসাল জাল রযেছে। এমনকি প্রকাশ্যে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বলাখাল, কৈয়ারপুলে সড়কের পাশে সওজের খালে ভেসাল জাল পেতে নিধন করা হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির একদিন বয়সী পোনা পর্যন্ত । বোয়ালজুরি খাল, ঝমঝমিয়া খাল, সোনাপুর খালসহ খালগুলোর শাখা খালে অগণিত ভেসাল জাল দিয়ে মাছ ধরা হচ্ছে। এমনকি বিলের মাঝ পর্যন্ত ফতর দিয়ে মাছ চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মাছ নিধন করা হচ্ছে।
হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মৎস্য চাষী, দিপ্তী মৎস্য খামারের মালিক রান্ধুনীমুড়া গ্রামের মুন্সী বাড়ির মুন্সী মোহাম্মদ মনির জানান, আমি বড়কুল থেকে শুরু করে নাটেহরা পর্যন্ত ৫টি গ্রামের ২৩টি পুকুরে মাছ চাষ করেছি। বৃষ্টির পানি আর বন্যার পানির কারণে সব মাছ চলে গেছে, যার ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ৩০ লাখ টাকা হবে।
‘এই মাছ গেলো কোথায়’ এমন প্রশ্নে এই চাষী জানান, সব মাছ খালে, বিলে আর ডাকাতিয়ায় চলে গেছে। তিনি আরো বলেন, আমার মৎস্য চাষ এলাকার আরাখাল, সোনাইমুড়ি খাল ও রায়চোঁ বিলে কমপক্ষে ২০টি নিষিদ্ধ ভেসাল জাল আছে। এই মাছগুলো ঝাঁকে ঝাঁকে ভেসাল জালে ধরা পড়ছে, যার সাইজ বড় জোর ৪/৬ ইঞ্চি হবে। এই মাছগুলো এভাবে না ধরে ৬ মাস বিচরণের সুযোগ দিলে কতো মাছ যে হতো তার কোনো ইয়ত্তা নেই।
জেলার প্রসিদ্ধ পাইকারী মাছের বাজার তথা ধেররা মৎস্য বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রাধা কান্ত দাস রাজু জানান, ধেররা এলাকার ডাকাতিয়া নদীতে অনেক ভেসাল জাল রয়েছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাফিয়া আফরিন জানান, ভেসাল জাল জব্দ ও ধ্বংসের অভিযান চলছে, যা চলমান থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল জানান, বন্যার কারণে যে সকল মৎস্য চাষী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাদের ক্ষতির বিষয় মাথায় রেখে আমরা কাজ করছি।