রবিবার, ১২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৬ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   ফরিদগঞ্জের লক্ষ্মীপুরে কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় গুরুতর আহত ৩ : এলাকায় আতঙ্ক
  •   শিক্ষা খাতে নজিরবিহীন রদবদল: একযোগে চার বোর্ড চেয়ারম্যানকে ওএসডি
  •   মধ্যরাতের আতঙ্ক
  •   চীনা সেনাদের ভারতের অরুণাচলে অনুপ্রবেশ: বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে উত্তেজনা তুঙ্গে
  •   আপনার টাকা কোথায় গেল?

প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০

ফরিদগঞ্জে জলাবদ্ধতায় পাঠদান ব্যাহত ॥ পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি

প্রবীর চক্রবর্তী ॥
ফরিদগঞ্জে জলাবদ্ধতায় পাঠদান ব্যাহত ॥ পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি

টানা বর্ষণে ফরিদগঞ্জে তলিয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, মাছের প্রজেক্ট, উঠতি ফসল ও শাক-সবজির ক্ষেত। এদিকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার প্রায় সবক’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা থাকলেও বন্ধ রয়েছে শ্রেণিশিক্ষা কার্যক্রম। চাঁদপুর সেচপ্রকল্পের স্লুইচ গেইট দিয়ে পানি নামার ব্যবস্থা করা হলেও বর্ষণ অব্যাহত থাকায় জলাবদ্ধতা হ্রাসের কোন লক্ষণ নেই।

উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভারি বর্ষণের কারণে উপজেলার প্রাথমিকের ১৯০টি এবং মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমানের ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ পানিতে টইটম্বুর। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানেও ভেতরেও পানি প্রবেশ করেছে। তাছাড়া স্কুলের আশপাশের প্রায় সকল সড়কে পানি থাকায় এবং প্রায় প্রতিটি বাড়িই পানিবন্দি হয়ে পড়ায় শিক্ষার্থীরা চাইলেই স্কুলে আসতে পারছে না। এদিকে সরকারিভাবে ২৬টি হিসেব করলেও বাস্তবে আরো বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

কয়েকজন অভিভাবক জানান, গত দুই মাস ধরে নানা কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পাঠদান প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন, গণ-অভ্যুত্থানের পর যখনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শ্রেণিশিক্ষা কার্যক্রম শুরু হলো নতুন করে টানা বর্ষণে সৃষ্টি হলো স্মরণকালের মারাত্মক জলাবদ্ধতা। বলতে গেলে কৃত্রিম বন্যায় আমরা আক্রান্ত। যেভাবে পানি নামছে তাতে আরো সময় লাগবে। কীভাবে শিক্ষার্থীরা ক্ষতি পোষাবে তা নিয়ে তারা চিন্তিত।

উপজেলার কেরোয়া ও গাজীপুর এলাকার মৎস্যচাষি আঃ রব, মোঃ ইসমাইল হোসেন সোহেল, কাউন্সিলর মোঃ আমিন মিজি, মোঃ নাজিম উদ্দিন, মোঃ কামাল মাল, সাইফুল ইসলামসহ অনেকে জানান, যৌথ পুঁজি বিনিয়োগ করে প্রায় শতাধিক চর, পুকুর ও নদীতে মাছ চাষ করেছেন। অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে এসব খামারের চাষকৃত মাছ ভেসে গিয়েছে। বাঁধ ক্ষতিগ্রস্তসহ অন্তত ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তাদের দাবি সহজ ও স্বল্প শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করলেই তারা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন। তবে পানি সরে গেলে ক্ষতির হিসাব আরো স্পষ্ট হবে।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, পানি নেমে গেলে প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। সহজ ও স্বল্প সুদে ঋণ দিলে মৎস্যচাষিরা ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা অফিসার আফতাবুল ইসলাম বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে। শিক্ষকরা বিদ্যালয়ের যাচ্ছেন। তবে জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসে না, তাই পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

একই কথা বলেছেন একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুল্যাহ আল মামুন। তিনি বলেন, নিয়মিত শিক্ষকরা আমাদের সাথে যোগাযোগ করছেন। পানির কারণে শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকেই বের হতে পারছেন না। ফলে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্লোল কিশোর সরকার জানান, অতিবৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার কারণে আমন ১২৬ হেক্টর, রোপা আমন ২৬০ হেক্টর, রোপনকৃত আমন ৩৯৫ হেক্টর, আখ ১২৮ হেক্টর, শাকসবজি ১২৫ হেক্টর ফল আক্রান্ত। বিশেষ করে শাক-সবজির ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের খুবই কষ্ট হবে।

পল্লী বিদ্যুতের ফরিদগঞ্জ জোনাল অফিস ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, বৃষ্টিতে ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে গাছপালা ভেঙ্গে পড়ে ১০/১২টি ট্রান্সফরমার বিকল হয়েছে, অনেক জায়গায় তার ছিঁড়ে পড়েছে, বেশ কিছু জায়গায় খুঁটি হেলে পড়েছে।

উপজেলা পিআইও মিল্টন দস্তিদার জানান, উপজেলার ২৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে যারা আশ্রয় নিয়েছেন তাদের সরকারিভাবে সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া পানিবন্দি মানুষকেও সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। বেসরকারিভাবে বিভিন্ন লোকজন সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌলি মন্ডল বলেন, অতিবৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পানি সরে যাওয়ার পর প্রকৃত ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা যাবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়