প্রকাশ : ০৭ জুন ২০২৪, ০০:০০
আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় চিনিতে হাজীগঞ্জ সয়লাব
আমদানি নিষিদ্ধ ভারতীয় চিনিতে সয়লাব হয়ে গেছে হাজীগঞ্জসহ উপজেলার হাটবাজারগুলো। কেজি প্রতি ৪০/৪৫ টাকা লাভ হওয়াতে দোকানিরা ভারতীয় চিনি বিক্রিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে। দেশী চিনির চেয়ে তুলনামূলক মোটা আর দেখতে বেশি সাদা এই চিনি ভারত থেকে কুমিল্লার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে এ অঞ্চলে ঢুকে। তবে হাজীগঞ্জ বাজারস্থ হলুদ পট্টির বেশ কিছু ব্যবসায়ী ভারতীয় চিনি পাইকারী বিক্রি করেন বলে জানা গেছে। ভারতীয় চিনি দেশে আমদানি নিষিদ্ধ বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ নূর হোসেন বলেন, অবৈধ পথে ভারতীয় চিনি আনা বন্ধে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে আনা হচ্ছে ভারতীয় চিনি। এরপর এ চিনি রাতের আঁধারে চলে আসছে হাজীগঞ্জ বাজারে। এসব অঞ্চলে সবচেয়ে বেশী চিনির চাহিদা রয়েছে হাজীগঞ্জ বাজারে। হাজীগঞ্জ বাজারের হলুদ পট্টির কয়েকজন আড়তদার এসব চিনি বিক্রির সাথে সরাসরি জড়িত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একসময় হাজীগঞ্জ বাজারে ভারত থেকে অবৈধ পথে চিনি, দুধ, শাড়ি, থ্রিপিস, মসল্লা, মাদক, কারেন্ট জাল, পলিথিন ও অন্যান্য পণ্য চোরাইপথে আনাকে কেন্দ্র করে এ অঞ্চলে একটি শক্তিশালী চক্র গড়ে ওঠে। চোরাকারবারিরা কুমিল্লা থেকে বিভিন্নভাবে গ্রামের মধ্য দিয়ে রাতের আঁধারে চিনি পরিবহন করে নিয়ে সড়ক পথে হাজীগঞ্জ বাজারের নির্দিষ্ট গুদামে মজুদ করে রাখে। প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে ভোররাত পর্যন্ত চলে এই পাচার কাণ্ড।
স্থানীয় বাজার ও ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, ভারতের বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি চিনি ৪৪ রুপি। ৫০ কেজির বস্তার দাম ২ হাজার ২০০ রুপি। একই পরিমাণ চিনি হাজীগঞ্জ বাজারের বিভিন্ন দোকানে পাইকারি বিক্রয় হচ্ছে ৫ হাজার ৬০০ থেকে ৫ হাজার ৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন খুচরা মুদি দোকানিদের কাছে। উপজেলার গ্রামের হাটবাজারগুলোতে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, বাজারে চিনি আনতে গেলে ভারতীয় চিনি ছাড়া দেশীয় বা আমদানিকৃত চিনি পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক দোকানে বস্তা পরিবর্তন করে অন্য বস্তায় রেখে চিনি বিক্রি করছে। নিরুপায় হয়ে ভারতীয় চিনিই কিনতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাজীগঞ্জ বাজারের কয়েকজন মুদি ব্যবসায়ী বলেন, ভারতীয় চিনি অধিক পরিমাণে আসার কারণে আমাদের এলসির চিনি বিক্রয় কমে গেছে। গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন খুচরা ব্যবসায়ীরা ২০/৩০ টাকা কম পেয়ে চোরাই পথে আসা অবৈধ ভারতীয় চিনি ক্রয় করছে।
এ বিষয়ে জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ নূর হোসেন বলেন, অবৈধ পথে চিনি আনা বন্ধে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে চাঁদপুরের কয়েকটি স্থানে অভিযান পরিচালনা করে চিনি আটক করা হয়েছে। বিগত সময়ে বেশ কিছু দোকানিকে অবৈধ ভারতীয় চিনি রাখার দায়ে জরিমানা করা হয়েছে। নিয়মিত বাজার মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। আমি বিভিন্নভাবে তথ্যউপাত্ত সংগ্রহ করছি। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।