প্রকাশ : ০২ জুন ২০২৪, ০০:০০
নিলাম ছাড়াই সরকারি পুরানো ইটে রাস্তা নির্মাণ
হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম
ব্যাপক অনিয়মের মধ্য দিয়ে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। ভবনের চারোপাশের সিসি ঢালাই রাস্তা নির্মাণের ১৫ দিনের মধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় দেবে গিয়ে ঢালাই উঠে গেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরানো রাস্তার ইট নিলাম ছাড়াই ওই ইট উঠিয়ে তা দিয়েই নির্মাণ করা হচ্ছে নতুন রাস্তা। যা এখনই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। শুধু তা-ই নয়, রাস্তার নিচে ব্যবহারকৃত ইটগুলো ২ নাম্বার। এছাড়া ভবনের আস্তরের কাজেও হয়েছে ব্যাপক ফাঁকি। নিম্নমানের গ্রিল, বিদ্যুতের তার, টাইলস্ সব কিছুতেই তাদের রয়েছে অনিয়ম। আস্তরের কাজ শেষ হলেও দেয়া হয়নি কোনো পানি। কেউ কোনো প্রতিবাদ না করার সুযোগে ডিসিএল এমসি নামক এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিজ ইচ্ছেমতো করছে অনিয়ম। তোয়াক্কা করছে না কোনো কাজের ইস্টিমেট কিংবা নিয়ম নীতি।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বেপারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ারকে সরকারি ইট কী প্রক্রিয়ায় তারা নিয়েছেন জানতে চাইলে বের হয়ে আসে অনিয়মের কথা। ইঞ্জিনিয়ার জানান, নিলাম ছাড়াই হাসপাতালের সরকারি ইট দিয়েই নতুন রাস্তা নির্মাণ করে আসছেন তারা। তাৎক্ষণিক স্থানীয় সংবাদকর্মীদের খবর দিয়ে তিনি বিষয়টি অবগত করেন। সংবাদ কর্মীদের কোনো প্রশ্নের উত্তরই কর্তৃপক্ষ দিতে পারেনি। ভাইস চেয়ারম্যান কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
কুমিল্লার ডিসিএল এমসি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ইঞ্জিনিয়ার জানান, ২০১৯ সালে ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসতালের ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তারা কোনোরকম নিলাম কিংবা সরকারি অনুমতি ছাড়াই রাস্তার ইট উঠিয়ে তা ভেঙ্গে ঢালাইয়ের কাজে ব্যবহার করে নতুন রাস্তা নির্মাণ করেন। সরকারি কিছু ইটের কণা তারা জমা করে রেখেছেন। অবশিষ্ট পুরানো ইট তারা রাস্তার কাজে ব্যবহার করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ একে এম আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ঠিকাদার আমাদের হাসপাতালের ইট নিলাম কিংবা ঊর্র্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই ইট তোলা এবং সেই ইট দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা মোটেই ঠিক হয় নয়। ঠিকাদারের এ অনিয়মের বিরুদ্ধে যেনো ব্যবস্থা নেয়া হয় সে ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো।
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেন বেপারী জানান, মাননীয় সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির অক্লান্ত পরিশ্রমে ২৭ কোটি টাকা ব্যয়ে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দুঃখের বিষয় হলো, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজের মধ্যে ব্যাপক অনিয়ম করে। প্রায় ১ থেকে দেড় লাখ সরকারি ইট নিলাম ছাড়া নিয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে হাসপাতালে আসি। এখানে এসে দেখি পুকুর চুরি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। চুরি করা ইট দিয়েই আবার রাস্তা নির্মাণ করছে তারা। শুধু তাই নয়, ২ নাম্বার ইটও ব্যবহার করছে সিসি ঢালাইকৃত রাস্তায়। যার ফলে উদ্বোধন না হতেই নির্মাণের ১৫ দিনের মধ্যেই রাস্তার ইটের কণাগুলো উঠে যাচ্ছে। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় দেবে গেছে। আমি এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।