প্রকাশ : ২৪ মে ২০২৪, ০০:০০
দফায় দফায় ক্ষমা চাইলেন হাজীগঞ্জের নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান!
নিজ গ্রামের দুই ভোটারকে মারধর করার কারণে হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত ভাইস চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুমন নিজ এলাকাবাসীর কাছে দফায় দফায় ক্ষমা চেয়েছেন। ক্ষমা না চাইলে তিনি নিজ এলাকায় ঢুকতে পারতেন না বলে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সাফ জানান। মূল ঘটনাটি ঘটে গত ২১ মে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দিন শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ও কেন্দ্রের বাইরে মজুমদার বাড়ির কবরস্থানের সামনের রাস্তায়। তবে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেছেন কামরুজ্জামান সুমন। তিনি হাজীগঞ্জ উপজেলার উত্তর শ্রীপুর মিজি বাড়ির আবু তাহের মিজির সন্তান ও পেশায় একজন পণ্য রপ্তানীকারক।
নির্বাচনের দিন কামরুজ্জামান সুমনের হাতে আহত ভোটার শ্রীপুর পাটোযারী বাড়ির কামাল পাটোয়ারী মুঠোফোনে জানান, সুমনের পছন্দের একটি নির্দিষ্ট মার্কায় ভোট না দেবার কারণে কামরুজ্জামান সুমনসহ তিনজন আমাকে মারধর করেন। এতে করে আমাদের গ্রামের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে ভোট কেন্দ্রে মানে শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দোতলায় ওঠার সিঁড়ির রুমে আমাকে জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চায় কামরুজ্জামান সুমন। আমাকে ও সোহরাব পাটোয়ারীকে এভাবে মারধর করার বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী আরো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পরে গত ২২ মে বুধবার শ্রীপুর মজুমদার হাটে শ্রীপুর ইউনানী ল্যাবরেটরীর মালিক হাকিম অহিদুজ্জামান পাটোয়ারীর চেম্বারে ও পরে আবার আমার ঘরে গিয়ে ক্ষমা চান সুমন।
আহত অপর ভোটার সোহরাব পাটোয়ারী জানান, ভোটের দিন সকাল ১০টার দিকে আমি ভোট দিতে কেন্দ্রে আসলে সুমনসহ আরো ক’জন সরাসরি বলে তাদের পছন্দের মার্কাকে ভোট দিতে হবে। এ সময় তাদের মারমুখী আচরণ দেখে আমি বাড়ি চলে যাই। পরে বেলা সাড়ে বারোটার দিকে ফের কেন্দ্রে এসে ভোট দিয়ে মজুমদার বাড়ির কবরস্থানের সামনে আসা মাত্র ‘আপনি বেশি বাড়াবাড়ি করেন’ বলেই রিপনের ছেলে হৃদয় আমাকে ধাক্কা দিয়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। এ সময় সুমনসহ কয়েকজন মিলে আমাকে অনবরত লাথি মারতে থাকে। আমাকে মারধরের ঘটনা দেখেই রিয়াজুল হক বাবু, গিয়াস উদ্দিনসহ অন্যরা উদ্ধার করে পাশের সুমন ডাক্তারের চেম্বরে নিয়ে আসে।
শ্রীপুর ল্যাবরেটরীর চিকিৎসক ও শ্রীপুর পাটোয়ারী বাড়ির সন্তান হাকিম অহিদুজ্জামান পাটোয়ারী জানান, আমাদের নতুন ভাইস চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান সুমন দুজনকে মারার কারণে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পরে বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে ভোটের পরের দিন বুধবার আমার চেম্বারে ও কামাল পাটোয়ারীর বাসায় গিয়ে সুমন ক্ষমা চাওয়ার পর এলাকাবাসী শান্ত হয়।
এ বিষয়ে কামরুজ্জামান সুমন জানান, আমার সাথে কারো কোনো কিছু ঘটেনি, যা বলা হচ্ছে তা আমার বিরুদ্ধে রটানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২১ মে হাজীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন হয়। এর আগে উক্ত নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে কামরুজ্জামান সুমন ও বর্তমান চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) গোলাম ফারুক মুরাদ মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেন। গোলাম ফারুক মুরাদ তার নিজের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন কামরুজ্জামান সুমন।