নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন চেয়ারম্যান প্রার্থী মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া

চাঁদপুর সদর উপজেলার নির্বাচনী পরিবেশ সৌহার্দ্যরে পরিবর্তে সংঘাতপূর্ণ পরিবেশের দিকে চলে যাচ্ছে, এতে অনেকের জানমালও হুমকির সম্মুখীন হতে পারে। এমতাবস্থায় ভোটেরদিন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকার মতো আমার জন্য অনুকূল পরিবেশ নেই এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোটরসাইকেল মার্কার আলহাজ মোঃ মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া। গতকাল ১৯ মে রোববার বিকেলে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে লিখিত বক্তব্যে আলহাজ মোঃ মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর এ ঘোষণা দেন।

তিনি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন, আমি মোঃ মিজানুর রহমান (কালু) ভূঁইয়া চাঁদপুরের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমাদের পরিবারের প্রতিটি সদস্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের রাজনীতির সাথে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত। আমাদের পরিবারটি চাঁদপুরে আওয়ামী পরিবার হিসেবে স্বীকৃত। আমিসহ আমার প্রতিটি ভাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। এই সংগঠন আমাদের প্রাণের সংগঠন।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, আপনারা জানেন, আমি বিগত ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চাঁদপুর সদর উপজেলা থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেছি। গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে এবং নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য করার জন্যেই আমার নির্বাচনে অংশগ্রহণ। এবার ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দলীয় প্রতীকবিহীন এবং নির্দলীয় হওয়ায় আমি এবারের নির্বাচনেও চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছি। আমার প্রতীক হচ্ছে মোটরসাইকেল।

কালু ভূঁইয়া বলেন, চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমরা পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। আমরা পাঁচজনই একই দলের। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রশাসন আমাদের প্রার্থীদের নিয়ে যে আচরণ বিধিমালা সংক্রান্ত সভা করেছে, সে সভায় প্রশাসনের প্রতিশ্রুতিতে আমি আশস্ত হয়েছিলাম যে, এ নির্বাচনে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে এবং আচরণবিধির ব্যাপারে কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। কিন্তু দুঃখের বিষয় মাঠ পর্যায়ে তা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। কোনো কোনো প্রার্থী প্রচারণা ও গণসংযোগে একের পর এক আচরণবিধি লংঘন করে যাচ্ছে। শোডাউন পাল্টা শোডাউন করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলছে। যা আচরণ বিধির সম্পূর্ণ পরিপন্থি। অথচ তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে সদর উপজেলার নির্বাচনী পরিবেশ সৌহার্দ্যরে পরিবর্তে সংঘাতপূর্ণ পরিবেশের দিকে চলে যাচ্ছে বলে প্রতীয়ামাণ হচ্ছে। তাতে অনেকের জানমালও হুমকির সম্মুখীন। এমতাবস্থায় ভোটেরদিন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকার মতো আমার জন্য অনুকূল পরিবেশ নেই।

তাই আমি ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যা আজকে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে এসে আপনাদের সিনিয়র সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিচ্ছি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।

তিনি সদর উপজেলাবাসীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, চাঁদপুর সদর উপজেলাবাসী ভাই ও বোনেরা, আমি আলহাজ্ব মিজানুর রহমান (কাল) ভূঁইয়া, আমার মার্কা মোটরসাইকেলের পক্ষে যারা গণসংযোগ ও পথসভাসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করে আমার বিজয়কে সুনিশ্চিত করার জন্যে কাজ করেছেন আমি ও আমার পরিবার পরিজনসহ এবং যারা নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সকলের পক্ষ থেকে আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এবং পাশাপাশি বর্তমান পরিস্থিতিতে নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গসহ বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে আমরা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হলাম। তাই আপনাদেরকে অনুরোধ করবো আপনারা ধৈর্য্য সহকারে সকল কিছু মোকাবেলা করবেন এবং সাবাইকে ধৈর্য্য ধারণ করতে বলবেন। আমি আপনাদেরকে কোনো সমস্যায় ফেলতে চাই না। আপনাদের সাথে ছিলাম, আগামীতেও আপনাদের সাথে থাকব। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে আলহাজ মোঃ মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়ার সাথে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক মোঃ নুরুল ইসলাম মিয়াজী ও সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া।

চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শাহাদাত হোসেন শান্তর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান সুমনের পরিচালনায় সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত, শহীদ পাটওয়ারী, শরীফ চৌধুরী, গিয়াসউদ্দিন মিলন, সাবেক সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রহিম বাদশা, সোহেল রুশদী, রিয়াদ ফেরদৌস, দৈনিক চাঁদপুর সংবাদের সম্পাদক ও প্রকাশক আব্দুর রহমান, প্রথম আলোর জেলা প্রতিনিধি আলম পলাশ, দৈনিক চাঁদপুরের প্রধান সম্পাদক কে এম মাসুদ, তালহা জুবায়ের, নজরুল ইসলাম আতিকসহ জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিক, অনলাইন এবং টেলিভিশনের বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিকগণ।