বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৩ মে ২০২৪, ০০:০০

উপজেলা পরিষদ নির্বাচন

চাঁদপুর সদরে আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব-গ্রুপিং বাড়ছে

মির্জা জাকির ॥
চাঁদপুর সদরে আওয়ামী লীগের দ্বন্দ্ব-গ্রুপিং বাড়ছে

আগামী ২১ মে চাঁদপুর সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এ উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান, ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আইয়ুব আলী বেপারী, সদর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক অ্যাডঃ হুমায়ুন কবির সুমন, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাকিব মাঝি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একমাত্র জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া ছাড়া অন্য চার প্রার্থী বর্তমান সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির গ্রুপের লোক হিসেবে পরিচিত। তাই এ নির্বাচনকে ঘিরে নানা সমীকরণ শুরু হয়েছে।

এমনিতেই জেলা সদরে আওয়ামী লীগের দু’টি গ্রুপ রাজনীতির মাঠে সক্রিয় রয়েছে। জেলা সদরের এমপি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডাঃ দীপু মনির সাথে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলালের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। ডাঃ দীপু মনি নিজ নির্বাচনী এলাকার কোনো অনুষ্ঠানে অতিথি হলেও বরাবরই জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ তাদের অনুসারীদের সে অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায়। তারপরও জেলা সদরে অর্থাৎ ডাঃ দীপু মনি তাঁর নিজ নির্বাচনী এলাকায় (চাঁদপুর-হাইমচর) শক্তিশালী সাংগঠনিক অবস্থান ধরে রেখেছেন। কিন্তু এবার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে জেলা সদরে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব গ্রুপিং প্রকট আকার ধারণ করেছে। আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতারা তাদের পছন্দের বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় অবস্থান নেয়ায় এখন নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব অনেকটা প্রকাশ্য রূপ নিয়েছে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একটি সক্রিয় অংশ প্রকাশ্যে সদর উপজেলা যুবলীগ নেতা ও চেয়ারম্যান প্রার্থী অ্যাডঃ হুমায়ুন কবির সুমনের পক্ষে কাজ করছেন। আর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অপর অংশ এবং আওয়ামী লীগের বড় একটি অংশ চেয়ারম্যান প্রার্থী আইয়ুব আলী বেপারীর পক্ষে প্রকাশ্যে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে। উভয় অংশই ডাঃ দীপু মনি গ্রুপের নেতা-কর্মী।

এদিকে হঠাৎ করে চেয়ারম্যান প্রার্থী নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান একটি অনলাইন টিভি চ্যানেলে এক সাক্ষাৎকার দিয়ে অনেকটা ঝড় তুলেছেন। তিনি চাঁদপুরে সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির বাসায় মন্ত্রীর বড় ভাই জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ডাঃ জেআর ওয়াদুদ টিপুর বিরুদ্ধে একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর অভিযোগ করেছেন। এ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। যদিও এ অভিযোগ ডাঃ টিপু এবং মন্ত্রীর বাসার সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মীরা ভিত্তিহীন বলেছেন। এদিকে এ নির্বাচনকে ঘিরে কিছুটা বেকায়দায় পড়েছেন সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরা। তারা বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে বলে কয়েকজন চেয়ারম্যান জানান।

রাজরাজেশ্বর ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হযরত আলী বেপারী জানান, আমি আইয়ুব আলী বেপারীর পক্ষে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় জনৈক প্রার্থীর পক্ষ হয়ে কেউ কেউ আমাকে ইউনিয়নের নানা উন্নয়ন কাজ নিয়ে বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছেন ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের কমিটির লোকজনকে খেপিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন। অবশ্য এরা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা বিভ্রান্তি ছড়িয়ে বিন্দুমাত্রও সফল হবে না বলে জানান তিনি।

অপরদিকে চান্দ্রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি খান জাহান আলী কালু পাটোয়ারী কোনো প্রার্থীর পক্ষে তাকে এ ধরনের চাপ বা প্রভাব খাটানোর কথা জানেন না বলে দাবি করেন। জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বাগাদী ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বিল্লাল নিজ দলে দ্বন্দ্ব সম্পর্কে কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

এসব নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলী আশর্^াদ মিয়াজী বলেন, উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে নিজেদের মধ্যে কিছু দূরত্বতো বেড়েছে। আসলে কষ্ট ভেতরে আছে, অনেকে প্রকাশ করেন না। তবে এ নির্বাচনকে ঘিরে নিজেদের মধ্যে গ্রুপিং প্রকাশ্য হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আমাদের মাঝে এখন মনের দূরত্ব বাড়ছে। এখানকার ইউপি চেয়ারম্যানগণ নির্বাচনে সমর্থন জানানো নিয়ে বিপাকে আছেন--এমন বিষয়ে কোনো কিছু আমার জানা নেই।

চেয়ারম্যান প্রার্থী আইয়ুব আলী বেপারী বলেন, স্থানীয়ভাবে দল থেকে আমাকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের একটি অংশ অন্য প্রার্থীর পক্ষে সক্রিয় অবস্থান নেয়ার বিষয়ে বলেন, যারা এখন তার বিপক্ষে আছেন এরা সংখ্যায় খুব কম। তবে আস্তে আস্তে সবই ঠিক হয়ে যাবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়