বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৫ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৪, ০০:০০

কাজের মেয়াদ ছয়বার বাড়িয়েছেন ঠিকাদার

পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ

মোঃ সাজ্জাদ হোসেন রনি ॥
পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ কাজ

পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-এর নতুন ভবন কাজ। ফলে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছে রোগীদের। চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে চরমভাবে। একদিকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, অন্যদিকে বেডও পাচ্ছেন না রোগীরা। তীব্র গরমে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা অসুস্থতা নিয়েই বাড়ি ফিরছেন। হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করার মেয়াদ ৬ বার বাড়ানো হলেও এখনো শেষ হচ্ছে না কাজ। কাজের শেষ পর্যায়ে এসে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে রেখেছে ঠিকাদার।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সালের ১৯ জুন হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ১৯৯৮ সালের ২৩ মে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতালটি উদ্বোধন করেন। এ সময় সংযোজন করা হয় অত্যাধুনিক এক্স-রে মেশিন, অপারেশন থিয়েটার, শক্তিশালী জেনারেটরসহ চিকিৎসা সহায়ক বিভিন্ন সুবিধাদি। পরে পরিবেশগত কারণে এ সকল সুবিধা থেকে পুরোপুরিভাবে বঞ্চিত হয় সাধারণ মানুষ। হাসপাতালের এক্স-রে মেশিন, অপারেশন থিয়েটার, শক্তিশালী জেনারেটর অকেজো হয়ে যাচ্ছে।

২০১৯ সালে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবনের কাজ শুরু হয়। ২০২১ সালে কাজ শেষ করে হস্তান্তর করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজ শেষ করতে পারেননি ঠিকাদার। ফলে অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে পুরানো ভবনে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত বছরের শেষের দিকে কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত কাজ শেষ করছেন না ঠিকাদার। নতুন ভবনে চিকিৎসা সেবা শুরু হলে রোগী ও চিকিৎসকরা উপকৃত হতেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টাফ জানান, হাসপাতালের পুরাতন জরাজীর্ণ ভবনে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ ও প্রদান দুটোই কষ্টকর। তীব্র গরমে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের প্রথমে একটি বেড প্রয়োজন হয়। রোগীদের বেড দিতে পারি না, চিকিৎসাতো পরের বিষয়। এ হাসপাতালে রোগী ও ডাক্তার একই পরিবেশে থাকতে হয়। গত এক সপ্তাহে ৪ জন ডাক্তার বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। এমন পরিবেশ অব্যাহত থাকলে হাইমচরবাসীর জন্যে সামনে আরও খারাপ কিছু ঘটতে পারে। স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা সেবা দিতে হলে নতুন ভবনে চিকিৎসা সেবা শুরু করতে হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আরএমও ডাঃ মামুন রায়হান জানান, নতুন ভবন টেন্ডার হওয়ার পর আমাদের হাসপাতালের পুরনো ভবনের একাংশ ভেঙ্গে ফেলা হয়। আমরা অবশিষ্ট পুরনো ছোট ভবনে আমাদের চিকিৎসাসেবা চালিয়ে যাচ্ছি। এক রুমে চারজন ডাক্তার বসে দৈনিক পাঁচশত রোগী দেখতে হয়। এতে আমাদের যতটা কষ্ট হয় তার চাইতে বেশি চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীদের পেতে হয়। রোগীরা যে বেডে থাকে তা অনেক অমানবিক। চিকিৎসা সেবা নিয়ে একজন রোগীকে সুস্থ হতে একটি সুস্থ পরিবেশ প্রয়োজন যা এ হাসপাতালে নেই।

এতে করে প্রয়োজনীয় আমাদের সেবাটুকু সঠিকভাবে দিতে পারছি না। সাধারণ মানুষও অনেক কষ্ট সহ্য করে হাসপাতালে থেকে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন। ২০২১ সালে নতুন ভবন হস্তান্তর করার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ঠিকাদার তার কাজ সম্পন্ন করতে পারেনি। আমরা আশা করেছিলাম, ২০২৪ সালের প্রথমদিকেই নতুন ভবনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা প্রদান করতে পারবো। এ বছরও নতুন ভবনে চিকিৎসাসেবা চালু করতে পারবো কি না আমরা সন্দিহান।

হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ৬ বার মেয়াদ বাড়ানোর পরও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন ভবনের কাজ শেষ করছে না ঠিকাদার। এখন আবার তারা জুন মাস পর্যন্ত সময় নিয়েছে। যেটুকু কাজ বাকি আছে তা ঠিকাদার চাইলে এক মাসেই শেষ করে দিতে পারে। বর্তমানে কাজ বন্ধ করে রেখে দিয়েছে। রোগী ও ডাক্তারদের ভোগান্তি কমাতে হলে নতুন ভবনে চিকিৎসাসেবা চালু করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়