প্রকাশ : ০৩ মে ২০২৪, ০০:০০
বাঘড়া বাজারে আগুন ॥ ভস্মীভূত ১২ দোকান
চাঁদপুর সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের বাঘড়া বাজারে গভীর রাতে লাগা আগুনে ১২টি দোকান পুড়ে গেছে। তবে এই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে বাজার সম্মুখে অবস্থিত মার্কেটে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। তবে কোন্ দোকান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা কেউ বলতে পারেনি।
বুধবার (১ মে) ভোর ৬টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা অনেকেই কান্নাকাটি করছেন। দোকানে রেখে যাওয়া জিনিসগুলো তারা ঘুরেফিরে দেখছেন। দোকানের কোনো কিছুই অক্ষত নেই। সব পুড়ে গেছে।
আগুনে পুড়ে যাওয়া দোকানগুলো হলো : মার্কেটের পশ্চিম দিকের আলমগীরের ভ্যান গাড়ির গ্যারেজ, মোঃ মোছার মোটর বাইকের গ্যারেজ, হাসানের সাইকেলের দোকান, গণি মিজির চায়ের দোকান, সুমন মিয়ার খাবার হোটেল, বারেক গাজী, মমিন মিয়া ও নজরুল ইসলামের রড সিমেন্টের দোকান, নান্নু বহরদারের জ্বালানি তেলের দোকান, অহিদ মিয়ার ডেকোরেটরের দোকান, মানসুর মেম্বারের রড সিমেন্টের দোকান ও রবীন্দ্র কর্মকারের কামারের দোকান।
স্থানীয়রা জানান, রাত আনুমানিক আড়াইটা থেকে পৌনে ৩টার মধ্যে আগুন লাগে। সড়কের পাশে হওয়ায় আগুন তাৎক্ষণিক লোকজনের নজরে আসে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ফরিদগঞ্জ ও চাঁদপুরের ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসে। একই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ। আগুনে সবচে বেশি জিনিসপত্র পুড়েছে অহিদ মিয়ার ডেকোরেটরের দোকানের। তিনি সম্প্রতি দোকানের সকল আসবাবপত্র নতুন করে ক্রয় করেছেন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিজের অসহায়ত্বের কথা জানালেন ক্ষতিগ্রস্ত চা দোকানদার গণি মিজি। তিনি বলেন, আমার আর কিছু নেই। গত ৮ মাস আগে একই বাজারের ভেতরে আমার চা দোকান আগুনে পুড়ে যায়। সেখান থেকে এসে এখানে আবার দোকান শুরু করি। এখানেও আমার সব শেষ হয়ে গেলো। বোনদের কাছ থেকে টাকা ঋণ করে মালপত্র কিনেছি। পরিবারের ৭ সদস্যের সংসার এখন কীভাবে চলবে?
ক্ষতিগ্রস্ত রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি রাতে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তার পাশের ব্যবসায়ী নান্নু বহরদার তাকে কল করে জানান, তাদের সব দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। এসে দেখেন আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। তার দোকানে থাকা মালামালসহ প্রায় ১৪ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
বালিয়া ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং সভাপতি জাকির বহরদার জানান, আমার এক আত্মীয়ের দোকান পুরোটাই আগুনে পুড়েছে। কোনো কিছুই রক্ষা পায়নি তার।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স চাঁদপুর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ মোরশেদ হোসেন বলেন, রাত ৩টায় আমরা অগ্নিকাণ্ডের সংবাদ পাই। ৩টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার জন্যে কাজ শুরু করি। আমাদের দুটি ও ফরিদগঞ্জের দুটিসহ ৪টি ইউনিট একসঙ্গে কাজ করে আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ৩টা ৪০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। কাজ শেষে ভোর ৫টায় আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তদন্তসাপেক্ষে বলা যাবে। তবে ওই মার্কেটের ১২টি দোকান আগুনে পুড়েছে।