প্রকাশ : ০১ মে ২০২৪, ০০:০০
মতলবে স্কুল ছাত্রী হত্যা মামলায় কিশোরের ১০ বছরের আটকাদেশ
মতলব উত্তর উপজেলার স্কুল ছাত্রী শারমীন আক্তার কাকুলী (১৪) হত্যা মামলায় অভিযুক্ত কিশোর মোঃ সাইফুদ্দিন (১৭)কে ১০ বছরের আটকাদেশ দিয়েছে আদালত। ৩০ এপ্রিল মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা জজ) মোঃ আবদুল হান্নান এই রায় দেন।
হত্যার শিকার স্কুল ছাত্রী মতলব উত্তর উপজেলার উত্তর ইসলামাবাদ গ্রামের বজলু বেপারীর মেয়ে। ঘটনার সময় সে স্থানীয় মমরুজকান্দি সপ্তগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। আটকাদেশপ্রাপ্ত সাইফুদ্দিন একই উপজেলার সুজাতপুর (বর্তমান মমরুজকান্দি) গ্রামের মোঃ রাসেল পাটওয়ারীর ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৮ মার্চ সকাল সাড়ে ৮টায় স্কুল ছাত্রী কাকুলী বাড়ি থেকে স্কুলের উদ্দেশ্যে বের হয়। নির্ধারিত সময় কাকুলী বাড়িতে ফিরে না আসায় তার মোবাইলে ফোন দিয়ে বন্ধ পাওয়া যায় এবং বিভিন্ন স্থানে খোঁজখুঁজি করে তাকে পাওয়া যায়নি। এরপর ২৯ মার্চ পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় জিডি করা হয়। ২২ এপ্রিল স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পেরে বিদ্যালয়ের পাশে অক্সফোর্ড একাডেমির টিনের ঘরে মাথাবিহীন দেহ পাওয়া গেছে। ওই দেহ কাকুলীর বলে অভিভাবকরা শনাক্ত করেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে আইনী ব্যবস্থাগ্রহণ করে।
এই ঘটনায় কাকুলীর মা রোকেয়া বেগম মতলব উত্তর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামী করে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় তিনি ২৮ মার্চ থেকে ২২ এপ্রিলের মধ্যে যে কোনো সময় তার মেয়েকে হত্যা করে মরদেহ গুম এবং তার মাথা কেটে অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন।
মামলাটির তদন্ত করেন থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) নাহিদ হোসেন। তিনি আসামী মোঃ সাইফুদ্দিনকে নিজ এলাকা থেকে ২৩ এপ্রিল গ্রেপ্তার করেন এবং আদালতে সোপর্দ করেন। এরপর মামলাটির তদন্ত করেন থানার পুলিশ পরিদর্শক মোঃ মামুন। তিনি মামলাটির তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ৩১ আগস্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এছাড়া এই মামলায় ২০২২ সালের ২৬ জুলাই পিবিআই-এর পুলিশ পরিদর্শক মীর মাহবুবুর রহমান পৃথক আরেকটি তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেন।
মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে। সাক্ষ্য গ্রহণ এবং আসামী তার অপরাধ স্বীকার করায় মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা শেষে এই রায় দেন বিচারক। রায়ে বলা হয়, রায়ের সময় আসামীর বয়স ১৮-এর উপরে হওয়ায় তাকে জেলা করাগারে প্রেরণ করা হোক।
রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ছিলেন অ্যাডঃ সাইয়েদুল ইসলাম বাবু ও অ্যাডঃ খোরশেদ আলম শাওন। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডঃ নাজিমুল্লাহ বাপ্পি।