বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০০

আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পুরাণবাজারে সংঘর্ষ

আহত ২০, দোকানপাটে হামলা ভাংচুর লুটপাট

স্টাফ রিপোর্টার ॥
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পুরাণবাজারে সংঘর্ষ

এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, মাদক ব্যবসা ও সদ্য ঘোষিত ওয়ার্ড যুবলীগের কমিটি গঠন নিয়ে পূর্বের বিরোধ এবং ঈদ আনন্দের নামে উচ্ছৃঙ্খল আচরণকে কেন্দ্র করে পুরাণবাজারে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, নিরীহ মানুষের দোকানপাটে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও তুমুল সংঘর্ষ হয়েছে।

ঈদের দিন বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত স্থানীয় বিবদমান দুটি গ্রুপের মধ্যে চলে এই সংঘর্ষের ঘটনা। এ সময় পৌর ১ ও ২নং ওয়ার্ডের সীমানা ঘেঁষা সুইপার কলোনী সংলগ্ন মেয়র সড়ক মোড়, ম্যারকাটিজ রোড, টিজি রোড ও মধ্য শ্রীরামদী এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ইট ও কাচের বোতলের ভাঙ্গা টুকরার স্তূপ জমে যায় রাস্তার ওপর। ইটের আঘাতে অনেকে আহত হয়ে বিভিন্নভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। এক পক্ষ ধাওয়া করে ওসমানিয়া মাদ্রাসার বিপরীতে কোব্বাত গাজীর বাড়ির মার্কেটের ৪/৫টি দোকান কুপিয়ে ভাংচুর এবং প্রাণের এজেন্টের দোকানের মালামাল লুট করে। আশপাশের টেইলারিং ও টং দোকানসহ আরো দোকানপাটে হামলা-ভাংচুর করে।

পুরাণবাজার ফাঁড়ি পুলিশ সদস্যরা এগিয়ে আসলে সংঘর্ষে লিপ্তদের আক্রমণের মুখে অসহায় হয়ে পড়েন। কারণ তাদের অধিকাংশই ফাঁড়ি পুলিশের কাছে পরিচিত মুখ। সংঘর্ষে লিপ্তরা স্থানীয়ভাব ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী এবং সমর্থক বলে জানা যায়। এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণের জন্যে তারা পুলিশের সামনেই ধারালো অস্ত্রের মহড়া দেয়ার সাহস দেখায়। অথচ স্থানীয় ফাঁড়ি পুলিশ সন্ত্রাসী ও মাদকের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত কোনো ব্যবস্থা নেয় না।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মোঃ শেখ মুহসীন আলম সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স নিয়ে রাতেই ঘটনাস্থল উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হন। সংঘর্ষের এই ঘটনার বিস্তারিত জানার জন্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইয়াসির আরাফাত ঘটনার পরের দিন শুক্রবার দুপুরে পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ি পরিদর্শন করেন।

কোব্বাত গাজী বাড়ির ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্তরা জানিয়েছেন, ওরা রাজনীতি করে, দল করে, দলাদলি করে সেটা ওদের ব্যাপার। কিন্তু আমরা যারা নিরীহ মানুষ আমাদের দোকানপাটে কেনো হামলা-ভাংচুর-লুটপাট করা হলো? পুলিশ বিভাগের কাছে এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

এলাকার সাধারণ মানুষের ভাষ্য, সরকারি দলের প্রভাবে উল্লেখিত ওইসব এলাকা এখন মাদকসহ বিভিন্ন ক্রাইম জোনে পরিণত হয়েছে। তারা দলের বদনাম করে অপরাধ করে বেড়াচ্ছে।

বিগত সময়ে এখানে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এবং একজন নিরীহ পথচারী নিহত হন। কিছুদিন আগে ২নং ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। সেখানেও থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন। আরো লাশ পড়ার শঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তারা বলছেন, ব্যক্তির স্বার্থে সরকারি দল বা রাজনীতিকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে চিহ্নিত কিছু লোক। তাদের অন্য কোনো পেশা বা কাজের পরিচয় নেই। তারা সরকারি দলের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকার নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে। তাদের ভয়ে কোনো লোক কিছু বলার বা প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। এদের অনেকেরই রাজনৈতিক কোনো আদর্শ নেই। এলাকায় মাস্তানি-সেয়ানামি, তার অনেক লোকবল আছে এসব জাহির করার জন্যে তারা মাদক ব্যবসা, জুয়া খেলা, মাদক সেবন, মাতলামি, নিষিদ্ধ সময়ে নদীতে মাছ ধরা, সরকারি দলের লোক পরিচয়ে পুলিশের সাথে সখ্যতা, সালিস-দেনদরবার, জায়গা দখল ও এলাকার প্রভাব ধরে রাখার জন্যে ধান্ধা করে টাকা কামানোসহ অনেক অপরাধ বিনা বাধায় করে যাচ্ছে। কিছু থেকে কিছু হলেই ওরা ওমুকের পোলাপাইন, ওমুকের লোক বলে মারামারি-হাঙ্গামা করে মানুষের শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্ন করছে। কিশোর গ্যাং-এর মতো ভয়ঙ্কর অপরাধ গ্রুপও কেউ কেউ গড়ে তুলেছে। সংঘাতের এ পরিস্থিতি দেখতে চায় না পুরাণবাজারের শান্তিপ্রিয় জনগণ। এগুলো হওয়ার পেছনে স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশের কোনো পদক্ষেপ না নেয়া এবং জেলা শহরের রাজনৈতিক নেতা বা জনপ্রতিনিধি অনেকের প্রশ্রয় রয়েছে বলে মনে করেন এলাকার পর্যবেক্ষক মহল।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়