প্রকাশ : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০০:০০
ফরিদগঞ্জে অবৈধ ট্রাক্টরের দাপট ॥ ধ্বংস হচ্ছে সড়ক
ফরিদগঞ্জ উপজেলায় অবৈধ ট্রাক্টরের দাপটে নষ্ট হচ্ছে সড়ক, আর প্রাণ হারাচ্ছে বহু তরতাজা প্রাণ। যন্ত্রদানব ট্রাক্টরগুলো রাস্তায় চলাচলের সময় কখন যে কার উপর গিয়ে উঠে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ফরিদগঞ্জ উপজেলাসহ সারাদেশে বহুসংখ্যক মানুষ অবৈধ যন্ত্রদানব ট্রাক্টরের নিচে চাপা পড়ে প্রতিনিয়ত মারা যায়। কৃষি জমি চাষাবাদে ফরিদগঞ্জে আবির্ভাব হয় ট্রাক্টরের। কিন্তু জমি চাষাবাদে বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। চাষাবাদের জমি বাদ দিয়ে চলে আসে সড়কে। এসব ট্রাক্টর শহর ও গ্রামাঞ্চলের সড়কে চলাচল করতে গিয়ে বহু তরতাজা প্রাণ কেড়ে নিয়ে গেছে। এমনকি সড়ক ধ্বংস করে ফেলেছে।
এসব ট্রাক্টর সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তাঘাট নষ্ট করেছে। বেপরোয়া গতিতে চলাচলকারী ট্রাক্টরের কারণে এ অঞ্চলের গ্রামীণ জনপদে শব্দ দূষণ দেখা দেয়াসহ ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া।
ইট ভাটাগুলো পূর্ণোদ্যমে উৎপাদনে আসার ফলে ট্রাক্টরগুলোর চাহিদা বছরের যে কোনো সময়ের তুলনায় এখন অত্যধিক। আর সে সুযোগেই তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এখানকার সড়কগুলোতে। তাদের বেপরোয়া গতির কারণে ভীতির সঞ্চার হচ্ছে জনমনে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে জীবনহানির মত মারাত্মক দুর্ঘটনা। প্রতিদিন ভোর হতে শুরু হয়ে যায় ট্রাক্টরের দৌরাত্ম্য।
ফরিদগঞ্জ উপজেলার প্রায় সর্বত্র দাপটের সাথে চলে আসছে যন্ত্র দানব ট্রাক্টর। ট্রাক্টরের বেপরোয়া চলাচলে অতিষ্ঠ এখানকার জনজীবন।
উপজেলাবাসীর আশঙ্কা ট্রাক্টরগুলোর অবাধ চলাচল অব্যাহত থাকলে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তা ঘাটগুলো বেহাল অবস্থায় পতিত হবে।
মোঃ হুমায়ুন, সাইফুল, মিজান বলেন, ট্রাক্টর চলা বন্ধকালীন সময়ে অনেকটা নির্বিঘ্নে পথচারীরা চলাফেরা করতো। ছাত্র-ছাত্রীরা নির্ভয়ে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতো। ট্রাক্টর চলাচল করার কারণে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদেরকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকেন। এসব ট্রাক্টর চালকদের নেই কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স। ক’দিন পুরানো চালকদের সঙ্গে থেকে তারা চালকে পরিণত হয়। এরপরই তারা চলে আসে ট্রাক্টর চালনায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, ফরিদগঞ্জের পূর্বাঞ্চলে ইট ভাটা ও ইট ব্যবসা এবং পশ্চিমাঞ্চল বালু ব্যবসা জমজমাট হওয়ায় উপজেলার সর্বত্র ট্রাক্টরগুলো অবাধে চলাচল করে। আস্টা-গল্লাক, কামতাণ্ডগল্লাক, ফরিদগঞ্জ-গাজীপুর-চান্দ্রা, ফরিদগঞ্জ-রূপসা-খাজুরিয়া, ফরিদগঞ্জ-কালিরবাজার, ফরিদগঞ্জ-ধানুয়া-বাঘড়া বাজার সড়কে যন্ত্রদানব ট্রাক্টরের বিচরণ বেশি। ফলে এ সড়কগুলোর অবস্থা বছরের বেশিরভাগ সময়ই জরাজীর্ণ থাকে এবং সড়ক দুর্ঘটনা বেশি হচ্ছে। ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ হলে দুর্ঘটনার হার অনেকটাই কমে আসতো।
বছরে যে ক’টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, তার সিংহভাগই ট্রাক্টরের কারণে। ট্রাক্টরগুলো বিভিন্ন হাট-বাজারের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করার সময় ভয়ে আতঙ্কিত হতে হয় সাধারণ পথচারীরা। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট নিয়ন্ত্রণহীন ট্রাক্টরগুলো যাতে স্থায়ীভাবে সড়কে চলাচল বন্ধ হতে পারে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে সচেতন মহলের দাবি।