প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
ব্যাটারিচালিত অটোবাইক চুরির জেরে চোরের দল খুন করে বালির নিচে পুঁতে রাখে অটোবাইক চালক ও মালিক আরমান (১৫)কে। এ ঘটনায় আরমানের লাশ উদ্ধারের মাত্র একদিনের মধ্যে সবুজ হোসেন মিন্টু (২৫) ও শুকুর আলম (২৮) নামের দুই খুনিকে আটক করেছে চাঁদপুরের পিবিআই। আরমান হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার মকিমাবাদ গ্রামের মেস্তুরি বাড়ির আব্দুল মোতালেবের ছেলে। আটককৃত সবুজ হাটিলা পশ্চিম ইউনিয়নের কাঁঠালি গ্রামের শাহআলমের ছেলে ও শুকুর আলম সদর ইউনিয়নের বাড্ডা মজুমদার বাড়ির আবুল কাশেমের ছেলে। বুধবার (৮ নভেম্বর) পিবিআই খুনিদেরকে নিয়ে লাশ উদ্ধারের স্থান পরিদর্শন করেছে।
পুলিশ সূত্র ও নিহত কিশোরের বাবা জানায়, গত ১ অক্টোবর যাত্রী বেশে আরমানের অটোবাইক ভাড়া নেয় সবুজ হোসেন মিন্টু ও শুকুর আলম। অটোবাইকটি হাজীগঞ্জ হতে কচুয়া সড়ক ধরে কয়েক কিলোমিটার চলার পর আরমান বুঝতে পারে তার অটোবাইকটি চুরির উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাৎক্ষণিক সে ডাক-চিৎকার দিলে স্থানীয়রা এসে সবুজ হোসেন মিন্টু ও শুকুর আলমকে আটক করে কচুয়া থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ ঘটনায় আরমানের বাবা বাদী হয়ে মিন্টু ও শুকুরকে আসামী করে কচুয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে তারা জেল খেটে জামিনে বেরিয়ে আসে দুজনেই।
এই ঘটনার জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গত ৩০ অক্টোবর (সোমবার) দিবাগত রাতে আরমানের অটোবাইকটি আবারো ভাড়া নেয় মিন্টু ও শুকুর। এরপর তাকে ইট দিয়ে মাথা থেতলে হত্যা করে বালুর নিচে পুঁতে রাখে ও অটোবাইকটি নিয়ে যায় তারা।
এদিকে রাতে ছেলে বাড়ি না ফেরার কারণে পরদিন হাজীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করে আরমানের বাবা। সর্বশেষ গত ৬ নভেম্বর (সোমবার) হাজীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের দোয়ালিয়া গ্রামের আমগাছতলা নামক স্থানের বালির স্তূপের নিচ থেকে পচা গলিত লাশ উদ্ধার করে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেন নিখোঁজ আরমানের বাবা মোতালেব ও মা পাখি বেগমসহ পরিবারের লোকজন। এ সময় আরমানের জুতা ও পরনের প্যান্ট দেখে লাশ শনাক্ত করে তার পরিবার।
লাশ উদ্ধারের সুরতহাল ও অটোবাইকটির হদিস না পাওয়ায় পুলিশ নিশ্চিত হয় এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। এরপরেই আরমানের বাবা অজ্ঞাতনামা ক’জনকে আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে লাশ উদ্ধারের পর থেকে ছায়াতদন্তে নামে চাঁদপুরের পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ছায়া তদন্তে নেমে আগের অটোবাইক চুরির ঘটনাটির সন্ধানে নেমেই মামলার মোটিভ উদ্ধারে সফলতা পেয়ে যায় সরকারের এই সংস্থাটি।
আরমানের দুই খুনিকে নিয়ে বুধবার লাশ উদ্ধারের ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ বেশ কিছু আলামত সংগ্রহ করে সব মিলিয়ে পিবিআইয়ের কাছে এ দুজন হত্যার কথা স্বীকার করে।
ছেলের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারের ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠেন আরমানের বাবা আব্দুল মোতালেব।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মুহম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, মিশুক (অটোবাইক) গাড়িটি কচুয়া উপজেলার হোসেনপুর নামক স্থানে বিক্রি করা হয়েছে। আমরা অটোবাইকটি উদ্ধারের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছি এবং আটককৃতের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলছে।