বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০

চাঁদপুরে আঞ্চলিক সড়কের পাশে শত শত অবৈধ স্থাপনা
অনলাইন ডেস্ক

আন্তঃজেলা যোগাযোগের জন্য চাঁদপুরের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি সড়ক তৈরি হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেচ প্রকল্পের বাঁধের ওপর। বাকি সড়কগুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণকৃত সম্পত্তিতে। এ সড়কগুলোর দুই পাশে এখন অবৈধভাবে দখল করে স্থাপনা নির্মাণ এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা নিয়মে পরিণত করেছেন। রাস্তার দুই পাশে শত শত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়েছেন তারা। বিশেষ করে স্থানীয় বাজারকেন্দ্রিক এসব প্রতিষ্ঠানের অবস্থান বেশি। যার ফলে অনেক সময় যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। তবে সড়ক বিভাগ বলছে, খুব দ্রুতই উচ্ছেদ অভিযান করার পরিকল্পনা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত প্রায় দেড় বছর আগে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কে চাঁদপুর সড়ক বিভাগ উচ্ছেদ অভিযান করলেও এখন আবার একই অবস্থা। অভিযানের কয়েক মাসের মধ্যে আবারও বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে সড়কের পাশে। বিশেষ করে চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়কের চাঁদপুর থেকে শুরু করে বাবুরহাট, মহামায়া, বাকিলা, বলাখাল, হাজীগঞ্জ, ওয়ারুক, দোয়াভাঙ্গা, কালিয়াপাড়া পর্যন্ত।

এছাড়াও চাঁদপুর-রায়পুর সড়ক, ভাটিয়ালপুর-হরিণা ফেরিঘাট, হাজীগঞ্জ-কচুয়া-গৌরিপুর সড়ক, মতলব-পেন্নাই সড়কেও প্রভাবশালী লোকজন সড়কের দুই পাশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করে ভাড়া দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

সরেজমিন ঘুরে ফরিদগঞ্জের ভাটিয়ালপুর, চান্দ্রা বাজার, চান্দ্রা চৌরাস্তা, মতলব দক্ষিণ উপজেলার মুন্সিরহাট বাজার, সদরের বাগাদী চৌরাস্তা, শহরের ওয়্যারলেসসহ আশপাশের এলাকায় বহু অবৈধ স্থাপনা দেখা গেছে।

সদর উপজেলার মহামায়া বাজারের ব্যবসায়ী ও ইউপি সদস্য কবির হোসেন জানান, যারা সড়কের জায়গায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন, তারা কেউ লিজ নেয়নি কিংবা অনুমতি নেয়নি। স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব কাজে জড়িত। তারাই সওজ বিভাগের সম্পত্তি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করে আসছেন।

সদরের চান্দ্রা পশ্চিম বাজারে ওয়ার্কশপ ব্যবসায়ী খোরশেদ জানান, তিনি গত ৫ মাস পূর্বে দোকান ভাড়া নিয়েছেন। স্থানীয় ফারুক পাটওয়ারী নামে এক ব্যক্তি সড়কের পাশে এই দোকানঘর নির্মাণ করে তার কাছে ভাড়া দিয়েছেন। টিন দিয়ে তৈরি এই দোকানের মাসিক ভাড়া ৩ হাজার টাকা।

মতলব-পেন্নাই সড়কের মুন্সিরহাট বাজার এলাকার বাসিন্দা মোসলেহ উদ্দিন ও আব্দুল কুদ্দুছ জানান, সড়কের ওপরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থাকায় এই বাজারে দিনের অধিকাংশ সময় যানজট লেগেই থাকে। একটি গাড়ি থামিয়ে আরেকটিকে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হয়। ঈদ কিংবা অন্য কোনো উৎসবের সময় দুর্ভোগ আরও বাড়ে।

সড়ক ও জনপথ চাঁদপুর সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এই বিভাগের তৈরি সড়ক রয়েছে ৩৬৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে চাঁদপুর সেচ প্রকল্প ও মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বাঁধের ওপর সড়ক রয়েছে। চাঁদপুর থেকে কুমিল্লার আগে খাজুরিয়া পর্যন্ত রয়েছে ৩৯ কিলোমিটার। সড়ক শাখা-১-এর আওতায় এই সড়কটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন ৪ জন উপ-সহকারী প্রকৌশলী। সড়ক শাখা-২-এর আওতায় রয়েছে চাঁদপুর-রায়পুর আঞ্চলিক সড়ক। এই সড়কটি একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী সংস্কারসহ সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন।

সড়ক বিভাগ চাঁদপুরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মারুফ হোসেন বলেন, গত প্রায় দেড় বছর পূর্বে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কে উচ্ছেদ অভিযান করা হয়। এরপর এই কাজটি নিয়মিত করার চেষ্টা করা হলেও বিভিন্ন কারণে করা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণকারী ব্যক্তিদেরকে নোটিস দিয়েছি এবং কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে নোটিস দেওয়ার পর থানায় মামলাও দিয়েছি। যারা সড়কের জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন তাদের তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সড়ক বিভাগের নিয়মানুযায়ী সড়কের পাশে কেউ স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে না। কারো যদি সড়কের পাশে জায়গা থাকে সে নিয়মানুসারে চলাচলের জন্য অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া সড়কের জায়গায় বিশ্রামাগার তৈরি করা যাবে, যেখানে গাড়ির চালকদের টয়লেট, গোসলখানা ও খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে।

সড়ক ও জনপথ চাঁদপুর সড়ক বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, স্থানীয়ভাবে আমরা কোনো ব্যক্তিকে সড়কের দুই পাশে জায়গা লিজ দিই না। লিজ ছাড়া লোকজন এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দিয়েছেন। আর কোনো ব্যক্তির সড়কের পেছনে সম্পত্তি থাকলে তাকে চলাচলের জন্য অনুমতি অর্থাৎ এক সনের লিজ দেওয়া হয়, তবে সেটি মন্ত্রণালয় থেকে অন্যান্য অফিসে অনুমোদন হয়ে আসতে হবে। এরপর স্থানীয় নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে ওই ব্যক্তির চুক্তি হবে এবং তিনি সম্পত্তির মালিক কিনা সেসব কাগজপত্রসহ আমাদের সড়কের সার্ভেয়ার ম্যাপ দেখে তা নির্ধারণ করবেন।

চাঁদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সামুসজ্জোহা বলেন, সড়ক বিভাগের আওতায় জেলায় যে কয়টি সড়ক আছে, এর সব ক’টি আমাদের সার্বিক মনিটরিংয়ে আছে। অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীদেরকে নিয়মানুসারে নোটিস দেওয়া এবং অনেকের বিরুদ্ধে আমাদের দপ্তর থেকে থানায় মামলাও করা হয়েছে। সেসব মামলা চলমান। সর্বশেষ অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করেছি। জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সমন্বয় করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। সূত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়