প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৩, ০০:০০
আর এক সপ্তাহ পর চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হবে। তখন অবসর হয়ে পড়বেন জেলেরা। বৃষ্টিতে নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলেরা এখন দিন ও রাতে চষে বেড়াচ্ছেন নদী। আগের তুলনায় এখন নদীতে ইলিশ ধরা পড়ছে বেশি। ইলিশ জালে ইলিশের সাথে ধরা পড়ছে বড় ও মাঝারি আকারের পাঙ্গাশ মাছ। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৪শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা। আর পাঙ্গাশ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়।
৪ অক্টোবর বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর সদর উপজেলার হরিণা ফেরিঘাট সংলগ্ন মৎস্য আড়তগুলোতে দেখা যায় ইলিশের সঙ্গে পাঙ্গাশ মাছেরও ক্রয়-বিক্রয়ের হাঁকডাক। তবে মুহূর্তের মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে ইলিশ। পাঙ্গাশ বিক্রি হয় একটু ধীর গতিতে। একই দৃশ্য গত ক’দিন যাবৎ দেখা যায় চাঁদপুর ইলিশ অবতরণ কেন্দ্র বড়স্টেশন মাছঘাটে। সেখানেও ইলিশের স্তূপের পাশে আড়তে নদীর বড় বড় পাঙ্গাশও শোভা পাচ্ছে।
চাঁদপুর শহর থেকে ইলিশ ক্রয় করতে আসা আব্দুল্লাহ জানান, এখানে তাজা ইলিশ পাওয়া যায়। কোনো ধরণের ভেজাল নেই। জেলেরা নিয়ে আসলে নিজে পছন্দ করে কেনা যায়। এক জেলের ধরে আনা ৫ হালি ছোট-বড় ইলিশ কিনেছি। দাম নিয়েছে ২ হাজার ৭শ’ ৮০টাকা।
এই মাছঘাটের প্রবীণ মৎস্য ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম ছৈয়াল বলেন, বৃষ্টিতে নদীতে পানি বেড়েছে। সাগর উত্তাল হওয়ায় সাগর থেকে অনেক জেলে নিরাপদে চলে এসেছে। ঠিক এই মুহূর্তে কিছু ইলিশ বিপরীতে অর্থাৎ সাগর থেকে নদীতে উজানের দিকে আসছে। তবে এটি আমার দীর্ঘ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। আরেক ব্যবসায়ী মোক্তার হোসেন বলেন, আজকে ক’দিন বৃষ্টি বাড়াতে ইলিশ মাছ কিছুটা আমদানি বেড়েছে। আজকে আমাদের আড়তে কমপক্ষে ৩ থেকে ৪ টন ইলিশ খুচরা ও পাইকারি বিক্রি হয়েছে। তবে এ বছর ইলিশ ছোট এবং বড় সাইজের। মাঝারি সাইজের ইলিশ খুবই কম পাওয়া যাচ্ছে। আর যারা গুল্টি জাল দিয়ে ইলিশ ধরে, তাদের জালের ফাঁদে ছোট থেকে শুরু করে বড় সাইজের ইলিশ ও পাঙ্গাশ পাওয়া যাচ্ছে। প্রত্যেক জেলেই কম-বেশি পাঙ্গাশ পাচ্ছেন।
এই আড়তের ব্যবসায়ী মোঃ হাসান বলেন, ছোট সাইজের ইলিশ প্রতি হালি বিক্রি হয় ৩৫০-৫৫০টাকা। বড় সাইজের ইলিশ বিক্রি করতে হয় কেজি হিসেবে। যে কারণে নয়শ’ গ্রাম থেকে শুরু করে ১ কেজি ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ইলিশ আজকে বিক্রি হয়েছে ১৪শ’ থেকে ১৫শ’ টাকা। তবে এসব ইলিশে কোনো বরফ দিতে হয় না। জেলেরা নিয়ে আসছেন আড়তে। মুহূর্তের মধ্যেই হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা লোকজন মুহূর্তে এসব ইলিশ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।
চাঁদপুর সদরের জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ তানজিমুল ইসলাম বলেন, বৃষ্টি ও নদীতে পানি বাড়লে ইলিশের প্রাপ্যতা কিছুটা হলেও বাড়ে। আর ঠিক এই মৌসুমটাতে পদ্মা-মেঘনা নদীতে ইলিশের বিচরণও বাড়বে। তবে আমরা এখন মা ইলিশ ধরার নিষেধাজ্ঞায় সচেতনতামূলক প্রচার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। কারণ আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন অভয়াশ্রম এলাকায় ইলিশসহ সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকবে।