প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০
বৃষ্টি উপেক্ষা করে চাঁদপুর শহরে জন্মাষ্টমীর বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা
ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশ বজায় রেখে উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপিত হলো পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ আবির্ভাবতিথি তথা শুভ জন্মাষ্টমী। ৬ সেপ্টেম্বর বিকেলে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও জেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের যৌথ ব্যবস্থাপনায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার কৃষ্ণভক্ত নর-নারী জড়ো হন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশ নেয়ার জন্যে। পৌরাণিক সাঝে সজ্জিত হয়ে বাদ্য-বাজনা সহকারে এক এক করে এ স্থানে আসতে থাকে পুরাণবাজার জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ, পুরাণবাজার দাসপাড়া শিব মন্দির কমিটি, জেলা হিন্দু মহাজোট, জেলা হিন্দু যুব মহাজোট, জেলা আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন), পুরাণবাজার ঘোষপাড়া সার্বজনীন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ, পুরাণবাজার হরিজন কলোনী, পুরাণবাজার রামঠাকুর বাড়ি দোলমন্দির, পুরাণবাজার জাফরাবাদ জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদসহ আরো বেশ ক’টি মন্দির ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।
|আরো খবর
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম মোসা। আর ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য পরিবেশে উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায়। বক্তব্য জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি এএইচএম আহসান উল্লাহ প্রমুখ। এ সময় চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মুহসীন আলম, পুরাণবাজার ফাঁড়ির এসআই রাজীব শর্মা, জেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি পরেশ চন্দ্র মালাকার, সাধারণ সম্পাদক কার্তিক সরকার, পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি নেপাল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুমন সরকার জয়সহ জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু মহাজোটসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাটি হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে বের হয়ে ছায়াবাণী মোড় হয়ে নতুনবাজার গিয়ে স্ব স্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ফিরে যায়। একইভাবে শহরের নতুনবাজার গোপাল জিউড় আখড়া হতে ভক্তবৃন্দের উপস্থিতিতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রেখে পুরাণবাজার দাসপাড়া কালী মন্দির, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট চাঁদপুর জেলা শাখাসহ ক’টি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ভক্তবৃন্দের উপস্থিতিতে পৌরাণিক সাজে সজ্জিত হয়ে আরো একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়। এ স্থান থেকে বের হওয়া বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রারও উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এএসএম মোসা। উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর হরিবোলা সমিতির সভাপতি অজয় কুমার ভৌমিক, আওয়ামী লীগ নেতা সন্তোষ চন্দ্র দাস, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার, সাধারণ সস্পাদক অ্যাডঃ রণজিত রায় চৌধুরী পিপি, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক প্রফেসর রণজিত কুমার বণিক, সাবেক সদস্য সচিব রাধা গোবিন্দ গোপ, জেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সমীরণ ভঞ্জ প্রমুখ।
এদিন বিকেলে পুরাণবাজার জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধনও করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায়। তিনি শান্তি ও মানবকল্যাণকর কাজ করার মধ্য দিয়ে নিজেদেরকে সম্পৃক্ত করার জন্যে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
পুরাণবাজার জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা সাংবাদিক বিমল চৌধুরীর উপস্থাপনায় এ সময় জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুভাষ চন্দ্র রায়, সাধারণ সস্পাদক তমাল কুমার ঘোষ, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অ্যাডঃ বিনয় ভূষণ মজুমদার, জেলা জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অরূপ কুমার শ্যাম, পুরাণবাজার জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি অনন্ত চক্রবর্তী, সাধারণ সস্পাদক ডাঃ সহদেব দেবনাথ, সংগঠক মানিক সাহাসহ উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ ও সুধীজন উপস্থিত ছিলেন।
আগত অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে দেন পুরাণবাজার জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রণব সাহা নন্দু ও সাধারণ সম্পাদক লিটন দাস। পরে পৌরাণিক সাজে সজ্জিত হয়ে বাদ্য-বাজনা সহকারে জন্মাষ্টমীর বিশাল বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি পুরাণবাজার হরিসভা মন্দির কমপ্লেক্স থেকে বের হয়ে পুরাণবাজার ও নতুনবাজারের প্রধান প্রধান সড়ক অতিক্রম শেষে পুনরায় হরিসভা মন্দির কমপ্লেক্সে গিয়ে শেষ হয়।
উল্লেখ্য, শ্রীমৎ ভাগবত পুরাণ অনুযায়ী ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথির রোহিনী নক্ষত্রে দ্বাপর যুগে বিষ্ণুর অষ্টম অবতার রূপে, দেবকীর গর্ভে জন্মগ্রহণ করেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তাদের সেই বিশ্বাস মতে, প্রতি বছর ভাদ্র মাসের এইদিনে উৎসবমুখর পরিবেশে ব্যাপক আয়োজনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি উদযাপন করে থাকেন সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষজন।