প্রকাশ : ২১ মে ২০২৩, ০০:০০
![বহু নাটকীয়তা শেষে হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন স্থগিত](/assets/news_photos/2023/05/21/image-33248.jpg)
বহু নাটকীয়তা শেষে বিতর্কিত ভোটার তালিকায় নির্বাচন করা নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন অনির্দিষ্টকালের জন্যে স্থগিত করেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ইকবালুজ্জামান ফারুক। তবে তিনি দাবি করে বলেছেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রার্থীদের একাংশের বিশৃঙ্খলার কারণে এ নির্বাচন স্থগিত করা হলো। শনিবার (২০) মে দুপুরে হাজীগঞ্জ বাজার ব্যবসায়ী সমিতি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন । এ সময় নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অন্য দুই কর্তা ছাড়াও হাজীগঞ্জে কর্মরত অধিকাংশ গণমাধ্যমকর্মী, ব্যবসায়ী এবং উক্ত নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থীগণ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে ইকবালুজ্জামান ফারুক বলেন, ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শনিবার বেলা পৌনে এগারোটার দিকে কয়েকজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কিছু উশৃঙ্খল লোক নিয়ে নির্বাচন কার্যালয়ে (ব্যবসায়ী সমিতির অফিসে) প্রবেশ করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং নির্বাচন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ছুড়ে ফেলে দেয়। তারা নির্বাচন কমিশনারসহ নির্বাচনী কাজে নিযুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কার্যালয় ত্যাগ করতে বাধ্য করে ও অফিস দখলে নেয়।
তিনি বলেন, উক্ত পরিস্থিতিতে নির্বাচন করার মতো পরিবেশ-পরিস্থিতি না থাকায় আমাদের (নির্বাচন কমিশন) দ্বারা নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব নয়। তাই নির্বাচন কমিশনের ঐকমত্যের ভিত্তিতে অনির্দিষ্টকালের জন্যে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হলো। পরিস্থিতি অনুকূলে আসলে এবং নির্বাচন করার মতো পরিবেশ সৃষ্টি হলে পরবর্তীতে নির্বাচন গ্রহণের বিষয়টি জানানো হবে বলে তিনি জানান।
এক প্রশ্নের জবাবে ইকবালুজ্জামান ফারুক বলেন, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা আমাদের কাজ নয়, ব্যবসায়ী সমিতির কাজ। তারা সমিতির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভোটার করবে। আমরা নির্বাচন করতে এসেছি। তারা (সমিতির নেতৃবৃন্দ) আমাদের ভোটার তালিকা দিয়েছেন। আমরা তালিকা অনুযায়ী ভোটারদের ভোটগ্রহণ করবো। তারপরও আমরা বলেছি, আপনারা সুনির্দিষ্ট তালিকা দিন। ক’জন প্রার্থী তালিকা দিয়েছে। আমরা সেই তালিকার ভোটারদের যাচাই-বাছাই করার জন্য ৩ দিনের সময় দিয়ে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গ্রহণ করেছি। তদন্তের আজ (শনিবার) শেষ দিন এবং এ দিন তদন্ত রিপোর্ট আমরা হাতে পাবো। তারপর রিপোর্ট অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো। কিন্তু তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার আগেই সকালে বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনের সচিব মনিরুজ্জামান বাবলু জানান, আমাদের কাছে ১৯জন প্রার্থীর অভিযোগ আসে। এর মধ্যে ৫ জন প্রার্থী আপত্তিকর বা ভুয়া ভোটারের কথা উল্লেখ করেন। এই ৫ জনের মধ্যে ৩ জন নির্দিষ্ট করে বেশ ক’জন ভোটারের নাম উল্লেখ করে তালিকা দেন। বাকি ২ জন প্রার্থী নির্দিষ্ট কোনো তালিকা না দিয়ে ৫/৭শ’ ভুয়া ভোটারের কথা উল্লেখ করেছেন। উল্লেখিত তিনজন প্রার্থী ১০৯জন ভোটারের তালিকা দিয়েছেন। এই ১০৯ জনের বিষয়ে তদন্ত করার জন্যে নির্বাচন কমিশন তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করে এবং তদন্ত কাজ সম্পন্ন করে। এই ১০৯ জন ভোটারের মধ্যে ৪০ জন ভোটারের নাম ২বার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। বাকি ৬৯ জনের মধ্যে ৫০ জনের দোকান স্থানান্তর হয়েছে। যার কারণে তাদেরকে পূর্বের স্থানে (দোকানে) পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ তাদের তালিকা ঠিক আছে। এছাড়া ১৯ জনের দোকানঘর পাওয়া যায়নি এবং একজন ভোটার স্বেচ্ছায় আবেদন করেছেন যে, তার দোকান নেই। যার ফলে এই ২০ জনের ভোটার হওয়ার বিষয়টি স্থগিত করার সত্যতা পাওয়া গেছে। এ সময় প্রধান নির্বাচন কমিশন ও সচিব সংবাদকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোঃ সেলিম মিয়াসহ উপজেলায় কর্মরত সংবাদকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।