বুধবার, ২২ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৮ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   হাইমচরে মাটি বোঝাই বাল্কহেডসহ আটক ৯
  •   কচুয়ায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি করার দায়ে ড্রেজার, ভেকু ও ট্রাক্টর বিকল
  •   কচুয়ায় খেলতে গিয়ে আগুনে ঝলসে গেছে শিশু সামিয়া
  •   কচুয়ায় ধর্ষণের অভিযোগে যুবক শ্রীঘরে
  •   ১ হাজার ২৯৫ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড

প্রকাশ : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০০:০০

রাজনীতিতে ক্ষমতার প্রভাব, অর্থের লোভে দেশপ্রেম হারিয়ে যাচ্ছে
সাজ্জাদ হোসেন রনি ॥

ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ। হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। পিতা মৃত এ.কে.এম. শামসুদ্দিন ও চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা অহিদুজ্জামান মন্টুর অনুপ্রেরণায় রাজনীতিতে তার পদার্পণ। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকাল থেকে রাজনৈতিক জীবনের শুরু।

ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পক্ষে কেন্দ্র কমিটির সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৯ সালে চাঁদপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের কমার্স বিভাগে ক্লাস কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করার কারণে ৪ দিন কারাবরণ করেন। ১৯৯১ সালের ১৫ জানুয়ারি হাইমচর উপজেলা ছাত্রলীগের তৎকালীন কমিটির আহ্বায়ক মনোনীত হন। ১৫ নভেম্বর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯২ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন। ২০০১ সালে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সচিব নির্বাচিত হন। ২০০৩ সালের জোট সরকারের মিথ্যা মামলার আসামী হয়ে ১ মাস ৪ দিন কারাবরণ করতে হয় তাকে। কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে চাঁদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য হন।

ফখরুদ্দিন আলী আহমেদের মা-বাবাসহ ১০ ভাই-বোন সকলেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে লালন করে প্রত্যক্ষভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। চাঁদপুর কণ্ঠের ‘রাজনৈতিক ভাবনা’য় ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ তার যে অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন, তা নিচে তুলে ধরা হলো :-

চাঁদপুর কণ্ঠ : আপনার দৃষ্টিতে যে কোনো নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন কিসের নিরিখে হয়? এজন্যে কী কী করতে হয়?

ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ : আমার দৃষ্টিতে মেধা, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, যোগ্যতা, জনসম্পৃক্ততা এবং মানব কল্যাণে নিজেকে উৎসর্গ করার মানসিকতা নিয়ে যারা রাজনীতি করেন, এর নিরিখেই দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়। এর জন্য যা যা করতে হয় : ক) রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে। খ) দলীয় পর্যায়ে তৃণমূল থেকে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সমর্থন সাংগঠনিক নিয়ামানুযায়ী লিখিতভাবে প্রেরণ করতে হয়।

চাঁদপুর কণ্ঠ : স্থানীয় পর্যায়ে নিজ দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল কী কী কারণে হয় বলে আপনার ধারণা? এ কোন্দল নিরসনে জেলা পর্যায় বা কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতার সাংগঠনিক ব্যবস্থাগ্রহণের হুঙ্কার সাধারণত দ্রুত উচ্চারিত হয় না। এটার হেতু কী?

ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ : স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন কারণে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি হয় :- ক) যখন রাজনীতিকে অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়। খ) যখন জনসেবার নামে শোষণের মন-মানসিকতা তৈরি হয়। গ) মাইম্যান বা আমিত্বের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজনৈতিক কর্মীদের পশ্চাতে ফেলে অসৎ অশিক্ষিত সন্ত্রাসী, লোভী মানুষদের দিয়ে রাজনীতি করানো হয়। ঘ) দলের ত্যাগী কর্মীদের বাদ দিয়ে দলের মধ্যে চাটুকার এবং লোভী প্রকৃতির মানুষ দিয়ে দলের মধ্যে আরেকটি উপদল সৃষ্ট করা হয়। যখন সাধারণ মানুষ এ জাতীয় লোকদের দ্বারা লাঞ্ছিত, বঞ্চিত ও অপমানিত হয়। এতে দলের নিবেদিত ও ত্যাগী কর্মীরা মেনে নিতে না পারার কারণে দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল সৃষ্টি হয়। ঙ) এমপি, মন্ত্রীদের আত্মীয়লীগ, ভাইলীগ, এমপিলীগ, মন্ত্রীলীগ দ্বারা যখন দলীয় নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষ নির্যাতিত হয় তখন। চ) দলের সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের সাথে যখন দলীয় এমপি ও মন্ত্রীদের সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়, তখন জেলা বা কেন্দ্রীয় পর্যায়ের অনেক নেতাই ক্ষমতার প্রভাবের কারণে অসহায় হয়ে যান। তখন হুংকার তো দূরের কথা স্বাধীনভাবে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় করতে ব্যর্থ হন। ছ) অর্থলোভী ব্যবসায়ীদের যখন রাজনীতির পোস্ট-পদবী প্রদান করা হয়। জ) রাজনীতিতে অর্থের অবাধ ব্যবহার যখন নেতৃত্বকে কলুষিত করে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : দলের তৃণমূলের বর্ধিত সভায় কিংবা সাধারণ বর্ধিত সভায় খোলামেলা অনেক কথা হয়। অনেক তিক্ত সত্য কথা উচ্চারিত হয়। এগুলো কি আদৌ আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়?

ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ : সাংগঠনিক লোক নেতৃত্বে থাকলে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। যদি ক্ষমতার প্রভাব না থাকে।

চাঁদপুর কণ্ঠ : রাজনীতিতে আদর্শের চর্চা ও দলীয় গঠনতন্ত্র যথাযথভাবে মেনে চলার গুরুত্ব কতোটুকু? আপনি কি মনে করেন আপনার দলে উক্ত চর্চা ও মেনে চলার কাজটা যথাযথভাবে হচ্ছে?

ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ : রাজনীতিতে আদর্শের চর্চা ও দলীয় গঠনতন্ত্র মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আদর্শের চর্চা করতে হলে আদর্শবান দেশপ্রেমিক মানুষ দরকার। আজকের রাজনীতির প্রেক্ষাপটে ওই জায়গাটা লুপ্ত। কারণ রাজনীতিতে ক্ষমতার প্রভাব, অর্থের লোভে দেশপ্রেম হারিয়ে যাচ্ছে। কথা ও কাজের কোনো মিল না থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রে আদর্শ চর্চা ও দলীয় গঠনতন্ত্র মোতাবেক কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়