প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২২, ০০:০০
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার দুর্নীতি করে বাংলাদেশটাকে খেয়ে ফেলেছে। আজকে বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। জ্বালানি তেলসহ দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধির কারণে মানুষ দিশেহারা। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে মানুষ জেগে উঠেছে। বিএনপির আন্দোলনে দেশের মানুষ সাড়া দিয়ে আজ রাজপথে নেমেছে। শেখ হাসিনা ও তার অবৈধ নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিএনপি কোনো ভোটে যাবে না। আমরা রাজপথে ফয়সালা করবো। ২৭ আগস্ট শনিবার বিকেলে চাঁদপুর পৌর ও সদর উপজেলা বিএনপির যৌথ আয়োজনে বিএনপির বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, এ সরকারের আমলে বিএনপির প্রায় ২০ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৩৬ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাদের এতো দুর্নীতি, হত্যা, গুম, মামলা, হামলা অত্যাচার নির্যাতনের মধ্যেও বিএনপি এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা আপনার বাঁচার একটি মাত্র রাস্তা খোলা আছে, সেটা হলো বেগম খালেদা জিয়ার কাছে মাফ চান, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেন। তাহলে আপনি বাঁচতে পারবেন। বাংলাদেশ বাঁচবে, আপনি বাঁচবেন, এদেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে।
তিনি আরো বলেন, আপনি বেগম খালেদা জিয়াকে এক ঘণ্টার জন্যে মুক্ত করে দিন। আর ওই এক ঘণ্টায় বেগম খালেদা জিয়া পল্টনে আসবেন। তখন দেখবেন ঢাকা শহরের কোনো মানুষ বাকি থাকবে না। দেখবেন জনগণ পুরো ঢাকা শহর অচল করে দিয়েছে।
কুমিল্লা বিভাগের চাঁদপুর থেকেই শেখ হাসিনা সরকারের পতন আন্দোলন হবে উল্লেখ করে বুলু বলেন, সরকারের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এ দেশের ৮০ শতাংশ ভোটার ধানের শীষে ভোট দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসাবে।
তিনি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, চাঁদপুরবাসী যে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে আজকের এই বিশাল সমাবেশ সেটাই প্রমাণ করে। আপনারা প্রতিটি ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে আগামী ৩১ তারিখ পর্যন্ত এভাবে সভা-সমাবেশ করবেন। আমরা সরকার পতনের লক্ষ্যে এগিয়ে যাবো। ২০২২ সালের মধ্যে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে এই নির্বাচন কমিশনকে বাতিল করে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এদেশের ৮০ শতাংশ ভোটার ধানের শীষে ভোট দিয়ে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নিয়ে আসবেন।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের চিত্রলেখা মোড় হাজী মহসিন রোডে খোলা ট্রাকের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ বানিয়ে জ্বালানি তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎসহ সকল দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং গুলি করে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হত্যার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
চাঁদপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন মাঝির সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটি কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মোস্তাক মিয়া, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রবাসীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ সলিমুল্লাহ সেলিম।
পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ হারুনুর রশিদ ও চাঁদপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ জাহাঙ্গীর হোসেন খানের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক খলিলুর রহমান গাজী, ফেরদৌস আলম বাবু, সদর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ শামসুল ইসলাম মন্টু, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক হাজী মোশারফ হোসাইন, পৌর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের বেপারী, জেলা কৃষক দলের সভাপতি এনায়েত উল্লাহ খোকন, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডঃ শিরিন সুলতানা মুক্তা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব কাজী মোঃ ইব্রাহিম জুয়েল, জেলা মৎস্যজীবী দলের সভাপতি মোস্তফা কামাল, জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বাহার, জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান সোহাগ প্রমুখ।
সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জেলা ওলামা দলের সভাপতি মোঃ জসিম উদ্দিন পাটোয়ারী।
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুব আনোয়ার বাবলু, মুনীর চৌধুরী, সেলিমুছ সালাম, হুমায়ুন কবির প্রধান, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডঃ জহির উদ্দিন বাবর, জেলা যুবদলের সভাপতি মানিকুর রহমান মানিক, সাধারণ সম্পাদক হাজী নূরুল আমিন খান আকাশ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হযরত আলী, সদর উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডঃ জাকির হোসেন ফয়সাল, পৌর বিএনপির সহ-সভাপতি আফজাল হোসেন আহসান উল্লাহ সেন্টু পাটওয়ারী, সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফ উদ্দিন পলাশ, বিএনপি নেতা মজিবুর রহমান লিটন, মাইনুল হক জীবন, কবির মিয়াজী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইখতিয়ার উদ্দিন শিশু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইমান হোসেন গাজী, সাধারণ সম্পাদক এইচএম ইসমাইল হোসেন পাটওয়ারীসহ আরো অনেক নেতৃবৃন্দ। সমাবেশে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন।
সমাবেশের পূর্বে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন, পৌর ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন।