মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ২২ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ২৭ আগস্ট ২০২২, ০০:০০

প্রবাসীকল্যাণ পরিষদের অর্থায়নে নতুন ঘর পেলেন হোসনেআরা
মেহেদী হাসান ॥

কচুয়ায় প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের অর্থায়নে নতুন ঘর পেলেন হোসনেআরা বেগম। প্রবাসী কল্যাণ পরিষদ কচুয়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে কড়ইয়া ইউনিয়নের আকানিয়া গ্রামের হোসনেআরা বেগমকে দেড় লাখ টাকা ব্যয়ে একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ শেষে গতকাল শুক্রবার সকালে সেটি হস্তান্তর করেন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। ঘরটিতে তিনটি বেডরুম, একটি রান্নাঘর ও ওয়াশ রুম রয়েছে।

গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের কোষাধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন, কচুয়া প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আতাউল করিম, সহ-সভাপতি মফিজুল ইসলাম বাবুল, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান, আলোর মশালের সভাপতি ওমর ফারুক সায়েম মৃধা, সমাজসেবক মোঃ সোলেইমান মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

নতুন ঘর পেয়ে হোসনেআরা বেগম এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, একটু বৃষ্টি হলে আমার ঘরে জপজপিয়ে পানি পড়তো। পলিথিন টানিয়ে পানি পড়া বন্ধ করতাম। রাতে আকাশে মেঘ দেখলেই ভয়ে থাকতাম, মনে হয় আজ সারারাত জেগে থেকে পানি সরাতে হবে। দুটি মেয়ে ও ছেলেকে নিয়ে অনেক দুঃখে-কষ্টে রাত পার করতাম। খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতাম। প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের উদ্যোগে নতুন ঘর পেয়ে আমাদের মাথা গোঁজার ঠাই হয়েছে। আমি আল্লাহর কাছে প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের জন্য দোয়া করি। আল্লাহ তাদের সবাইকে সুখে শান্তিতে রাখুক।

প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি কাজী মোকলেছুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল সওদাগর জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে অসহায় হোসনেআরা ভাঙ্গা ঘরে তার সন্তানদের নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে এমন সংবাদ দেখতে পেয়ে আমরা প্রবাসী কল্যাণ পরিষদ কচুয়া উপজেলা শাখার উদ্যোগে তাদেরকে বসবাস উপযোগী একটি নূতন ঘর নির্মাণ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেই। সেই লক্ষ্যে জাতীয় শোক দিবসে হোসনেআরার পরিবারের নিকট গৃহ নির্মাণের টিন ও কাঠসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ প্রদান করেছি। আজ ঘরটি পূর্ণাঙ্গ রূপে তৈরি করে পরিবারটির কাছে হস্তান্তর করতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। আমাদের সামান্য সহযোগিতায় অসহায় পরিবারটির মুখে হাসি ফুটেছে। তাতে আমরা গর্ববোধ করছি। সমাজের সকল বিত্তবান এই সকল অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবেন-এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।

উল্লেখ্য, কচুয়া উপজেলার কড়ইয়া ইউনিয়নের আকানিয়া নাছিরপুর গ্রামের বাসিন্দা হোসনেআরা বেগম। স্বামী নজরুল ইসলাম প্রায় তিন মাস পূর্বে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। স্বামী নজরুল ইসলাম ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। স্বামীকে হারিয়ে হোসনেআরা বেগম দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন।

বড় মেয়ে শারমিন আক্তারকে (২৩) অনেক দুঃখ-কষ্টে বিয়ে দেয়া হয়েছে। ছোট মেয়ে আছমা আক্তার (২০) বিয়ের উপযুক্ত হলেও অর্থের টানাপোড়েনে বিবাহ দিতে পারছেন না। একমাত্র ১৬ বছর বয়সী ছেলে রাব্বি ভ্যান গাড়ি চালিয়ে দৈনিক দুই-আড়াইশ’ টাকা রোজগার করে সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করছেন। এতে নুন আনতে পান্তা পুরায় অবস্থা। দোচালা একটি জরাজীর্ণ বসত ঘর। একটুখানি বৃষ্টি হলে জপজপিয়ে পানি পড়ে। পলিথিন টানিয়ে পানিপড়া বন্ধ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছেন। এতে এ ঘরে থাকা দায় হয়ে পড়ে। এমনি অবস্থায় হোসনেআরার একটি ঘর পাওয়ার আকুতি-মিনতিসহ তাদের কষ্টসাধ্য জীবনের হালচিত্র তুলে ধরে ফেসবুকে পোস্ট করলে তা ভাইরাল হয়ে পড়ে, বিষয়টি দৃষ্টিতে পড়ে কচুয়া প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের নেতৃবৃন্দের।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়