প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২২, ০০:০০
মতলব দক্ষিণ উপজেলায় বরদিয়া কাজী সুলতান উচ্চ বিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থী কর্তৃক শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে বিদ্যালয়টির নবম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস চলাকালে শ্রেণিকক্ষে ঘটনাটি ঘটে। এ ব্যাপারে শিক্ষক ওই দিন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন।
জানা যায়, লাঞ্ছিত ওই শিক্ষকের নাম চয়ন মজুমদার। তিনি বিদ্যালয়টির ইংরেজি বিষয়ের খণ্ডকালীন সহকারী শিক্ষক। তাঁর বাড়ি চাঁদপুর শহরের গুয়াখোলা এলাকায়। এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র রাকিব হোসেন। সে বরদিয়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে।
শিক্ষক চয়ন মজুমদার বলেন, গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয়ের ওপর পাঠদান করছিলেন। এ সময় ওই শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে তাঁর সঙ্গে বেয়াদবি করলে তিনি তাকে মৌখিকভাবে শাসন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষার্থী টেবিল থেকে উঠে সকল শিক্ষার্থীর সামনে শারীরিকভাবে তাঁকে (শিক্ষক) লাঞ্ছিত করে শ্রেণিকক্ষ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এরপর ঘটনাটির সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ওই দিন তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। ম্যানেজিং কমিটি গতকাল শনিবার বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দেয়ায় তিনি পুলিশ বা প্রশাসনের কাউকে জানাননি।
চয়ন মজুমদার বলেন, এ ঘটনায় তাঁর সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণœ হয়েছে। এতে তিনি ভীষণভাবে অপমানিতবোধ করছেন, মান-সম্মানের কথা ভেবে বিষয়টি নিয়ে কারো সঙ্গে আলোচনাও করছেন না। শিক্ষক হয়ে একজন শিক্ষার্থী দ্বারা এভাবে লাঞ্ছিত হবেন তা স্বপ্নেও ভাবেননি। তিনি মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছেন। তিনি ঘটনাটির যথাযথ সমাধান বা বিচার দাবি করেন।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় লোকজন ও পরিবার সূত্র জানায়, ঘটনার পর থেকে সে এলাকায় নেই। তার বাবার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগটি বন্ধ পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়টির নবম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী ওই শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক। একজন শিক্ষক বাবা-মায়ের মতোই। সম্মানিত শিক্ষকের অপমান কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। তারা সকলে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, ওই শিক্ষক ঘটনাটির বিচার চেয়ে তাঁর কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি সুরাহার জন্যে ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের নিয়ে এখন সভা করছেন। স্থানীয়ভাবেই এটি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আবদুর রহিম খান বলেন, বিষয়টি আমি আজকে জানতে পেরেছি। খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন যে, তিনি বিষয়টি জেনেছেন। এখনো এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাননি। পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।