প্রকাশ : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০
ঊনিশ.
ভাষা হলো কাজের বাহন
অর্থনীতির চাকা
ভাষা কারও বদল হলে
কর্ম করে খাঁ খাঁ।
পবনিয়াদের ইংরেজিতে
ফার্সীরা খায় ধরা
কর্মহারা হয় তারা সব
নামলো অর্থ-খরা।
এমন চালের চাল চেলেছে
জিন্নাহ-পাকিস্তানে
রাষ্ট্রভাষা উর্দু হলে
মরবে ঢাকা জানে।
ভাষা আনে ক্ষুধায় আহার
ভাষাই বেঁচে থাকা
ভাষা মনে কাদা মাটির
আল্পনাটা আঁকা।
লেখার ভাষা উর্দু হলে
আমরা হতাম বেকার
দপ্তরী বা পিয়ন পদে
ব্যস্ত স্বপন দেখার।
সেদিনের এই ফেব্রুয়ারি
রক্তে লেখে ললাট
অগ্রজদের বুকের সাহস
আজ আমাদের মলাট।
বিশ.
প্রযুক্তির এই ভাষার যুগে
বোন হয়েছে সিস্
ভাই হয়েছে ব্রো তার সাথে
শিক্ষিকা হয় মিস্।
দর্শকেরা ভিউয়ার আর
সঞ্চালক অ্যাংকর
টেলিভিশন নাচায়-কুঁদায়
যেন সে ব্যাঙ-ঘর!
অনুরোধ হয় রিকু এবং
ছবি হলো পিক
মায়ের ভাষার এমন হালে
জানাতে হয় ধিক্।
দেবদাসও আজ থাকলে বেঁচে
সে-ও খেতো ক্রাশ
বাঙালি আজ শেকড় ভুলে
হলো মেকির দাস।
সত্তরে আজ পা দিয়েছে
একুশের সেই ভোর
নূতন করে তাড়াই তবে
মায়ের ভাষা চোর।
একুশ.
থমথমে ছিল সেদিনের ভোর
কড়কড়ে অতি রোদ
প্রকৃতির চোখে ছিল না অশ্রু
ছিলো শুধু প্রতিরোধ।
চারদিক থেকে মিছিলের শোভা
সকালের মতি ক্রোধে
মায়ের ভাষাকে এনে দিতে মান
জ্বলে ওঠে প্রতিশোধে।
নিষেধের ধারা পুলিশ দিয়েছে
আইনের বেড়াজালে
জনতা মানেনি অন্যায় কোন
এগিয়েছে ছেঁড়া পালে।
দুপুর গড়ালো মিছিলে মিছিলে
তারপরে রণভূমি
দীপ গেছে নিভে রাজপথে কারো
গিয়েছে মরণ চুমি।
সেদিন শোণিতে জ্বলে ওঠে শিখা
রাষ্ট্রভাষা-প্রদীপে
ফেব্রুয়ারির একুশে জ্বালালো
হাজার তারা ব-দ্বীপে।
একুশে বলেছে বাঙালির কানে
মাথা নত কভু নয়
নিজের বুকের রক্তের দামে
মা'র হোক তবু জয়।