বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০

কচুয়ায় ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে সাদা বক পাখি
মেহেদী হাসান ॥

একসময় বিল ও জলাশয়ের ধারে দল বেঁধে নামতো দেশীয় সাদা বক পাখি। কিন্তু কালক্রমে হারিয়ে যাচ্ছে কৃষক-কৃষাণীর বন্ধু নামে পরিচিত এ বক পাখি। কৃষক-কৃষাণী যখন লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ করে এবং ফসল কাটার সময় সাদা বকসহ পাখির দল তাদেরকে ঘিরে ধরতো। এ বকগুলো জমির ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে উপকার করে আসছে। দ্রুত শহরায়নের ফলে পরিবেশবান্ধব এসব পাখি এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। কৃষিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ও অসাধু পাখি শিকারীদের ফাঁদে পড়ে বিলীন হচ্ছে কৃষকবান্ধব এসব পাখি। জলবায়ু পরিবর্তন ও পাখিদের আবাসস্থল বড় গাছ ও বন-জঙ্গল ধ্বংসের ফলেও হারিয়ে যাচ্ছে এরা।

সম্প্রতি কচুয়া উপজেলার কড়ইয়া ইউনিয়নের দরিয়াহায়াতপুর মাঠে ইরি ধানের ক্ষেতে কৃষক চাষের জন্যে জমি প্রস্তুত করার সময় দেখা গেলো শত শত দেশীয় সাদা বক। এ সময় দেখা যায়, প্রায় শতাধিক বক উড়ে এসে কৃষকের লাঙ্গলের ফলার চারপাশে ঘিরে কিচির মিচির শব্দে উড়ে পোকা খাচ্ছে। কখনো ঝাঁক ধরে উড়ে যাচ্ছে আকাশে। কখনও আবার এক জমি থেকে অন্য জমিতে উড়ে গিয়ে বসছে। এদের এ রকম কিচির-মিচির শব্দ ও উড়ে বেড়ানো দেখে কৃষকরা উল্লসিত।

মাঠে কাজ করা কৃষক শহিদুল ইসলাম ও মোঃ লিটন জানান, বক আমাদের অনেক উপকার করে। এরা ধানের জমিতে মাজরা পোকা ও ফড়িংসহ ক্ষতিকারক বিভিন্ন পোকা খেয়ে ফসলকে রক্ষা করে। এছাড়া জমিতে পানি দেয়ার পর অপকারী পোকা যখন পনিতে ভাসতে থাকে তখন দল বেঁধে এসব বক সে সকল পোকা খেয়ে ফেলে। কিন্তু এখন এ সাদা বক আগের মতো আর তেমন চোখে পড়ে না। শিকারীদের ফাঁদে পড়ে বিলুপ্তির পথে এ বকগুলো। যার দরুণ ফসলি জমিতে পোকার উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্যে আমাদেরকে বেশি পরিমাণে কীটনাশক ব্যবহার করতে হচ্ছে।

উপজেলার কাদলা গ্রামের কৃষক বিল্লাল হোসেন জানান, ছোটবেলা থেকে মাঠেই কাটে সকাল-সন্ধ্যা। ছোটবেলায় মাঠে অনেক ধরনের পাখি দেখতাম। প্রতিদিন ঘুম ভাঙতো পাখির ডাকে। কিন্তু বর্তমানে সেসব পাখি আর দেখা যায় না। গাছ কাটায় পাখিরা আবাসস্থল হারাচ্ছে। তাছাড়া জমির ফসলে কীটনাশক ব্যবহারের কারণে ছোট মাছ ও পোকামাকড় মারা যাচ্ছে। ফলে বিষযুক্ত খাদ্য খেয়ে প্রাণ হারাচ্ছে এসব পাখি।

সাচার ইউনিয়নের ঘোগড়ার বিলের কৃষক রাকিবুল হাসান জানান, ৫ থেকে ৭ বছর আগেও বাড়ির পাশের ঝোঁপঝাড়ে বসবাস করা অসংখ্য পাখির কিচিরমিচির ডাকে সন্ধ্যা হতো। আবার পাখির ডাকে ঘুম ভাঙতো। দ্রুত নগরায়নের ফলে পাখির আবাসস্থল হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে এখন আর আগের মতো পাখি দেখা যায় না।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন (সুমন) বলেন, গ্রামের ঐতিহ্য অপরূপ সৌন্দর্যের প্রতীক এ দেশীয় সাদাবক আগের মতো আর দেখা যায় না। এই পাখিটি পরিবেশ দূষণ ও শিকারীদের ফাঁদে পড়ে এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। এই পাখি মারার কোনো নিয়ম নেই। সকল প্রকার পাখি টিকিয়ে রাখতে হলে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়