বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২৫  |   ১৯ °সে
আজকের পত্রিকা জাতীয়আন্তর্জাতিকরাজনীতিখেলাধুলাবিনোদনঅর্থনীতিশিক্ষাস্বাস্থ্যসারাদেশ ফিচার সম্পাদকীয়
ব্রেকিং নিউজ
  •   কুমিল্লা সীমান্তে পুকুরে দেয়াল নির্মাণ করছে বিএসএফ, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি
  •   টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবির মধ্যে নতুন বিতর্ক
  •   স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে হাজীগঞ্জ রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের শীতকালীন ত্রাণসেবা
  •   খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য স্থিতিশীল, করা হবে বিশেষ কিছু পরীক্ষা
  •   সীমান্তে অস্থিরতা: পাগল বেশে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ কারা?

প্রকাশ : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০০:০০

শিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তী হত্যার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল
গোলাম মোস্তফা ॥

চাঁদপুর শহরের ষোলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তী হত্যার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখা পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)।

জানা যায়, ২০১৯ সালের ২১ জুলাই বিকেলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্টাফ কোয়ার্টারের ৩য় তলা বিল্ডিংয়ের ২য় তলায় একই এলাকার ষোলঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ।

নিহতের স্বামী অলোক কুমার গোস্বামী বাদী হয়ে ২২ জুলাই চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার নং-৪১, তাং ২২/৭/২০১৯ খ্রিঃ। এরপরই ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে চাঁদপুরে পুলিশের সবক’টি সংস্থা। এক পর্যায়ে পিবিআই ঘটনা উদ্ঘাটনে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে সক্ষম হয়। এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগে তারা ষোলঘর এলাকার ডিশ ব্যবসায়ী জামাল হোসেন (২৮) ও ডিশ কর্মচারী আনিছুর রহমান (৩২)কে আটক করে। আটকের পর হত্যার সাথে জড়িত বলে উভয়ই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় ।

জানা যায়, এ ঘটনায় আটক জামাল হোসেন ও আনিছুর রহমান মাদকাসক্ত। ঘটনার দিন উভয়ই পানি উন্নয়ন বোর্ডের পরিত্যক্ত একটি ভবনে মাদক সেবন করাবস্থায় শিক্ষিকা জয়ন্তী চক্রবর্তীকে ধর্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়। সে মতে উভয়ই মাদক সেবন শেষে স্টাফ কোয়ার্টারের যে ভবনে জয়ন্তী চক্রবর্তী বসবাস করে ঐ ভবনের ডিশ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।

জয়ন্তী চক্রবর্তী যে বিল্ডিংয়ে থাকে সে বিল্ডিংটি জরাজীর্ণ হওয়ায় অন্য কেউ বসবাস করতো না। ওইদিনই জয়ন্তী চক্রবর্তীর একমাত্র ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়ে তার স্বামী ঢাকা যাওয়ায় বাসাটি ছিলো একেবারেই ফাঁকা। ফলে ঘাতকদের পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিশ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর জয়ন্তী চক্রবর্তীকে বাসার বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ানো দেখে ঘাতক জামাল ও আনিছুর রহমান পরিকল্পনা মতে ডিশের তারগুলো নাড়াচাড়া করে। এমনটি দেখে জয়ন্তী চক্রবর্তী বাসায় ডিশ সংযোগ নেই বললে ঘাতক জামাল জয়ন্তী চক্রবর্তীকে বাসার গেইটের চাবি নিচে ফেলার জন্য বললে তিনি তা-ই করেন।

এরপর উভয়ই গেইট খুলে বাসায় ঢুকে। বাসায় ঢোকার পূর্বে গেইটের তালা লাগিয়ে দেয়। বাসায় ঢুকে জোরপূর্বক জয়ন্তী চক্রবর্তীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ ঘটনা শেষে উভয় ঘাতক বাসা থেকে বের হয়ে আসার সময় জয়ন্তী চক্রবর্তী এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা বললে উভয়ই পুনরায় বাসায় ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জয়ন্তী চক্রবর্তীকে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

ঘটনার দিন বিকেলে জয়ন্তী চক্রবর্তীর ছাত্র-ছাত্রীরা বিকেলে পড়তে গিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় জয়ন্তী চক্রবর্তীর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখলে তাদের ডাক-চিৎকারে অন্যরা এগিয়ে আসলে এ ঘটনার বিষয় চারদিকে জানাজানি হয়। পরে মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনার পর হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে তদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই। ইন্সপেক্টর কবির আহম্মেদকে নিয়োগ করা হয় তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে। তিনি দীর্ঘ তদন্ত শেষে প্রায় ৮ মাস পর ২০২০ সালের ৮ মার্চ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন বা চার্জশিট দাখিল করেন।

এ বিষয়ে ইন্সপেক্টর কবির আহম্মেদের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় আমরা মূল রহস্য উদ্ঘাটনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে প্রথমে সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করি। পরবর্তীতে তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার পরিকল্পনা এবং ঘটনার মূলহোতা হিসেবে এ দুজনকে চিহ্নিত করি। এরপরও আমরা তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাই। তদন্ত শেষে আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন বা চার্জশীট আদালতে দাখিল করি।

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি শুনেছি মামলার ২নং আসামী আনিছুর রহমান এখন জামিনে রয়েছে। এদিকে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের প্রত্যাশায় রয়েছে ভুক্তভোগী পরিবার ও সহকর্মীগণ।

  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়