প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২১, ০০:০০
হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি, চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সায়েম মিয়াজী গত ৪ জুলাই হাজীগঞ্জের মকিমাবাদের ভাড়া বাসায় হামলার শিকার হয়েছেন। এ সময় তার স্ত্রীও একই হামলার শিকার হওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়েছে। যাদেরকে তিনি রাজনীতি শিখিয়েছেন তারাই ঠুকনো একটি বিষয় নিয়ে এমন ন্যাক্কারজনক কা- ঘটায় বলে আবু ছায়েম মিয়াজী চাঁদপুর কণ্ঠকে মুঠোফোনে জানান। নিজ দলীয় এক ছাত্রেনতার ফেসবুকে স্ট্যাটাসের নিচে কমেন্ট করাকে কেন্দ্র করে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে অনেক শোরগোল চলতে দেখা গেছে। এছাড়া তিনি বর্তমানে উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক।
জানা যায়, সামসুদ্দীন খান নূর নামে ছাত্রদলের এক নেতা তার নিজের ফেসবুকে রাজনীতি প্রসঙ্গ নিয়ে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন। সেই পোস্টে কমেন্ট করেন আবু সায়েম মিয়াজী। এ ঘটনার সূত্র ধরে ৪ জুলাই রাতে নিজ দলীয় কয়েকজন যুবক তার ভাড়া বাসায় হামলা চালায়। ঘটনার পর পরই আবু সায়েম মিয়াজীর স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। নিজ দলীয় কিছু যুবক আর যাদেরকে তিনি রাজনীতি শিখিয়েছেন তারাই তার বাসায় গিয়ে হামলা চালিয়েছে বলে চাঁদপুর কণ্ঠকে তিনি জানান। তবে হামলাকারী সবাই তার দলীয় লোক ও তাদেরকে চিনতে পারলেও অজ্ঞাত কারণে তাদের নাম বলতে রাজি হননি আবু ছায়েম মিয়াজি। এ বিষয়ে তিনি সাধারণ ডায়েরি করবেন বলে চাঁদপুর কণ্ঠকে জানিয়েছেন।
এদিকে গত বুধবার দিনের বেলায় আবু ছায়েম মিয়াজী তার নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। ঐ স্ট্যাটাসটি দেয়ার ৯ ঘন্টার মধ্যে ৯৯ জন কমেন্ট করলেও পরে আর সে স্ট্যাটাস আবু ছায়েম মিয়াজীর ফেসবুকে দেখা যায়নি।
স্ট্যাটাসটি হচ্ছে ‘আমার ঘটনা নিয়ে কেউ কোনো কথা না বললে ভালো বলে আমি মনে করি। আমরা সবাই বিএনপি পরিবারের সন্তান। সবার প্রতি অনুরোধ রইলো, কাউকে ছোট করবেন না, সবাই আমরা দলের ভাই। সবাই মিলেমিশে দলকে কিভাবে শক্তিশালী করা যায় সেই চিন্তা সবাই করেন, এই কামনা করি। ধন্যবাদ সবাইকে। এদিকে বাবু সর্দার নামে আরেক সাবেক ছাত্রনেতা তার ফেসবুকে স্ট্যাটাসে লিখেছেন আবু সায়েম মিয়াজীকে মারার পেছনে ২ জন যুব নেতার হাত আছে, ২ জন বিএনপির সিনিয়র নেতার হাত আছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আবু ছায়েম মিয়াজীর এক মাত্র ছেলে গত বছর পানিতে ডুবে মারা যায়। সেই ঘটনার পর থেকে তার স্ত্রী সব সময় অসুস্থ থাকেন। এরই মধ্যে এমন ঘটনায় হতবিহ্বল হয়ে পড়েন এই গৃহিণী।
উল্লেখ্য, চাঁদপুর-৫ (হাজীগঞ্জ-শাহরাস্তি) নির্বাচনী আসনের মধ্যে বিশেষ করে হাজীগঞ্জের বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে স্পষ্টত দুভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে এক অংশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য লায়ন ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হক। তিনিই মূলত দলের এই দুর্দিনে দলকে অর্থ আর শ্রম দিয়ে স্থানীয় বিএনপিকে চাঙ্গা রেখেছেন। হাজীগঞ্জে বিএনপির আরেক অংশের নেতৃত্ব দেন সাবেক ও প্রয়াত ৪ বারের সংসদ সদস্য এম এ মতিন। তাঁর মৃত্যুর পর এ গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন হাজীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক, সাবেক সভাপতি ড. আলমগীর কবির পাটওয়ারী। আবু ছায়েম মিয়াজী লায়ন ইঞ্জিনিয়ার মমিনুল হকের বিশ্বস্ত কর্মী হিসেবে ছাত্ররাজনীতি শুরু করেন।